কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিক্ষাকেন্দ্র থেকে চাকরি হারানো শিক্ষকরা মঙ্গলবারও বিক্ষোভ করেছেন। তারা টানা ৮ ঘণ্টা উখিয়ার কোটবাজার এলাকায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। এদিকে অর্থাভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ জরুরি শিশু তহবিল ইউনিসেফ। ক্যাম্পে শিক্ষাদানের সঙ্গে সেভ দ্য চিলড্রেনও যুক্ত। 

ইউনিসেফ ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানায়, তহবিলের সংকটের জন্য রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার কিছু অংশীদারিত্বের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম তহবিলের সংকট দেখা দেওয়ায় এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছৈ। এর ফলে এই সময়ে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য কিন্ডারগার্টেন, গ্রেড ১ ও গ্রেড ২ এ নিয়োজিত ১ হাজার ১৭৯ জনের সঙ্গে ইউনিসেফের চুক্তি বাতিল হয়ে গেল। 

ওই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনারের (আরআরআরসি) কাছে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পে অবস্থিত শিক্ষাকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে।  

চিঠিতে স্বাক্ষর করেন ইউনিসেফের প্রতিনিধি অ্যাঞ্জেলা কার্নি ও সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবকদের ধৈর্য ও সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ইউনিসেফের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্পে যুক্ত থাকা শিক্ষকরা কয়েকবছর ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলোতে পাঠদান করে আসছিলেন। সম্প্রতি তহবিল সংকটের কারণ দেখিয়ে এক হাজার ২৫০ জন স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষককে একযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়।

চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সড়কে অবরোধ: চাকরি পুনর্বহাল দাবিতে গত চারদিন ধরে উখিয়ায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন তারা। এই ধারাবাহিক কর্মসূচির চতুর্থ দিনে গতকাল সকাল ৭টা থেকে তাঁরা কোটবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন।

সড়ক অবরোধের ফলে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকাগামী এবং বিপরীতগামী কয়েক হাজার যানবাহন আটকে পড়ে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে। সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম চৌধুরীর আশ্বাসে শিক্ষকরা বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান।

প্রত্যাবাসন কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ইউনিসেফের হাতে টাকা নেই। এজন্য শিক্ষা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।  ক্যাম্পে কয়েক হাজার শিক্ষক রয়েছেন। বছরে তাদের জন্য ৬০ থেকে ৮০ কোটি টাকা প্রয়োজন। অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
 
ইউনিসেফের বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৯৫২ সাল থেকে বাংলাদেশে শিশুদের সহায়তায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ। অতিদ্রুত বাড়তি তহবিল পেয়ে আমরা শিশু শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে পারব বলে আশা করা যায়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউন স ফ ইউন স ফ র তহব ল

এছাড়াও পড়ুন:

যে ভাবনায় শান্ত আরো এক বছর টেস্ট দলের অধিনায়ক

নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে আরো এক বছর টেস্ট ক্রিকেটে খেলবে বাংলাদেশ। আইসিসি টেস্ট চ‌্যাম্পিয়নশিপের ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশের মিশন শুরু হচ্ছে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে। গল ও কলম্বোতে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট খেলবে।

এই সিরিজ দিয়েই অধিনায়ক শান্তর নতুন মিশন শুরু হতে যাচ্ছে। শুধু শান্তই নন, তার ডেপুটি মেহেদী হাসান মিরাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছে। ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে এখনও রয়েছেন শান্ত। নিজ থেকে ছেড়েছেন টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব। তবে রান খরায় থাকায় তার জায়গা নিয়ে নানা সময়ে প্রশ্ন উঠছে। টেস্ট দলে বেশ অভিজ্ঞ হয়েছেন বাঁহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। রানও করছেন টুকটাক। দলকে যুৎসই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

কোন ভাবনায় শান্তকে সাদা পোশাকে আরো এক বছরের দায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে? জানতে চাওয়া হয়েছিল বিসিবির সহ সভাপতি ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম‌্যান নাজমুল আবেদীনের কাছে।

আরো পড়ুন:

মানহীন পারফরম্যান্সে ক্রিকেট বাজারে অস্থিরতা

নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামসের মন্তব্যে শান্তর ‘খোঁচা’

রাইজিংবিডিকে তিনি বললেন, ‘‘আমরা চেয়েছি একজন নিয়মিত অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের দলকে পরিচালনা করুক। শান্ত দলকে ভালোভাবেই নেতৃত্ব দিচ্ছে। নতুন কাউকে হুটহাট তৈরি করা যাবে না। আমাদের বিশ্বাস আছে তার ওপর। এটা আমরা বিশ্বাস করি, একজন অধিনায়ককে নিজের কারিশমা দেখানোর জন‌্য লম্বা সময় দেওয়ার প্রয়োজন। শান্তকে আমরা ওই স্পেসটা দিতে চাচ্ছি। এতোটুকুই। ’’

তবে পরিসংখ‌্যান তার হয়ে কথা বলছে না। ১২ টেস্টে শান্ত দলকে এখন পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪ জয়ের বিপরীতে ৮টিই ম‌্যাচ হেরেছে। চার জয়ের ভেতরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক দুটি টেস্ট জয় রয়েছে। এছাড়া ঘরের মাঠে নিউ জিল‌্যান্ড এবং জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে শান্তর দল।

তার ব‌্যক্তিগত পারফরম‌্যান্সও আশাব‌্যাঞ্জক নয়। ৩৫ টেস্টে ২৯.০৬ গড়ে ৫ সেঞ্চুরিতে ১৮৮৯ রান করা শান্ত অধিনায়ক হিসেবে ১২ টেস্টে ২৭.৫৪ গড়ে ৬০৬ রান করেছেন। সেঞ্চুরি মাত্র ১টি। শান্তকে বড় দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে তার সামর্থ‌্যকে গুরুত্ব দিয়েছে বিসিবি। তার ব‌্যক্তিগত পারফরম‌্যান্স নিয়ে তেমন চুলছেড়া বিশ্লেষণ হয়নি।

নাজমুল আবেদীন বললেন, ‘‘অধিনায়ককে অবশ‌্যই পারফর্ম করতে হয়। পারফর্ম করলে দলকে পরিচালনার কাজটা সহজ। আমরা শান্তর ওপর যে বিশ্বাসটা রেখেছি, টেস্ট দিলের দায়িত্ব আরো এক বছর বাড়িয়েছি আশা করছি সেটার ফল বাংলাদেশ ক্রিকেট পাবে। নিজেকে কিভাবে শান্ত তৈরি করবে, এই এক বছরে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট বিয়ে ভাববে সেটা অবশ‌্যই মূল‌্যায়ন হবে।’’

 

ঢাকা/ইয়াসিন  

সম্পর্কিত নিবন্ধ