কঠোর আইন ও সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া প্লাস্টিক দূষণ রোধ সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা। মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) আয়োজিত ‘প্লাস্টিক দূষণ, বাংলাদেশের আইনি কাঠামো এবং বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তি’ শীর্ষক সংলাপে তারা এ মত দেন। 

বক্তারা বলেন, আইন, নীতি, সচেতনতা ও প্রযুক্তির সমন্বয় ছাড়া প্লাস্টিক দূষণ রোধ সম্ভব নয়। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়বোধ, প্রশাসনিক অঙ্গীকার ও বৈশ্বিক সংহতি– এ ত্রিমাত্রিক শক্তিই পারে বাংলাদেশকে একটি টেকসই, প্লাস্টিকমুক্ত ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে।

সংলাপে প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.

ফারহিনা আহমেদ বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহারে হতে হবে সচেতন, দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব। সমুদ্রগামী প্লাস্টিক বর্জ্য রোধে সরকার ইতোমধ্যে ‘মেরিন লিটার প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক প্রকল্প ও উদ্যোগ চলমান রয়েছে। মাঠপর্যায়ে কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাড়ানো হয়েছে বাজেট। 

পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, আমরা এখন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে গ্লোবাল প্লাস্টিক ট্রিটি (জিপিটি) চূড়ান্ত না হলে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক ও নীতিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চুক্তিটি অবশ্যই বাধ্যতামূলক হতে হবে। 

বেলার প্রধান নির্বাহী তসলিমা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এখনও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধে কোনো পৃথক আইন নেই। অথচ ২০১৯ সালের একটি উচ্চ আদালতের রায়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার নির্দেশ ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্লাস্টিক দূষণ একা সরকারের পক্ষে মোকাবিলা সম্ভব নয়। এতে সমাজের প্রতিটি স্তরের অংশগ্রহণ দরকার। বেলার আইন সমন্বয়কারী এস হাসনাউল বান্না মূল প্রবন্ধে বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর বড় একটি অংশ যথাযথ বর্জ্য পৃথকীকরণ ও পুনর্ব্যবহার ব্যবস্থার অভাবে ল্যান্ডফিল বা খোলা পরিবেশে গিয়ে পড়ে। 

অনুষ্ঠানে ৯০ জন তরুণের স্বাক্ষরিত একটি আবেদনপত্র পরিবেশ সচিবকে হস্তান্তর করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে নতুন করে আসা ১৪ রোহিঙ্গা বিজিবির হেফাজতে

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে নতুন করে মিয়ানমার থেকে ২২ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে ১৪ জনকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফ বাসস্টেশন–সংলগ্ন আবু ছিদ্দিক মার্কেট এলাকা থেকে আটকের পর বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা সবাই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডং এলাকার লম্বাবিল গ্রামের মোহাম্মদ আমিন ও মোস্তফা কামালের পরিবারের সদস্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন নারী, ২ জন পুরুষ ও ১০ জন শিশু।

পরিবারের গৃহবধূ আমিনা খাতুন বলেন, ‘১৩ দিন আগে পাহাড়ে অবস্থানকালে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। পরে দালালের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে নৌকায় করে টেকনাফে আসি।’

মোহাম্মদ আমিন ও মোস্তফা কামাল জানান, তাঁরা নৌকায় করে মিয়ানমার থেকে সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি এলাকা হয়ে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সদরের মহেশখালীয়াপাড়া উপকূলে ওঠেন। তাঁদের নৌকায় ২২ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। এর মধ্যে অন্য ৮ জন একই এলাকার শফিউল্লাহ পরিবারের সদস্য। তাঁরা নৌকা থেকে নামার পরই অন্যত্র চলে যান।

বাকি ১৪ জন অটোরিকশায় করে টেকনাফ বাসস্টেশন এলাকায় এসে আশ্রয় নেন একটি মার্কেটের সামনে। সেখানে অবস্থানকালে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাঁদের আটক করেন।

গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবিকে জানানো হয়। পরে বিজিবি ওই ১৪ রোহিঙ্গাকে হেফাজতে নেয়।

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৪ রোহিঙ্গাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ