যে কারণে নেদারল্যান্ডসে জোট সরকারের পতন
Published: 4th, June 2025 GMT
নেদারল্যান্ডসের কট্টর ডানপন্থী দল ‘পার্টি ফর ফ্রিডম’ (পিভিভি) সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মঙ্গলবার দলটির নেতা গির্ট উইল্ডারস এ ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের পতন ঘটল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের উইল্ডারস বলেন, ‘সবচেয়ে কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলাম, নেদারল্যান্ডসের পতনের জন্য নয়। তাই এই সরকারে আমাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ হলো।’
ডাচ ইতিহাসের সবচেয়ে ডানঘেঁষা সরকার থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে উইল্ডারস দেশটির রাজনীতিকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিলেন। সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ১৫০ আসনের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফের নেতৃত্বাধীন সরকারের আসন মাত্র ৫১টিতে দাঁড়ায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, উইল্ডারসের দল জোট ত্যাগ করলে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ। বিরোধী নেতারা ইতিমধ্যে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জরিপ বলছে, এখনই যদি নির্বাচন হয়, তাহলে কিছু আসন হারালেও পিভিভি সবচেয়ে বড় দল হিসেবে টিকে থাকবে। মধ্য ডানপন্থী পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি থেকে সামান্য এগিয়ে থাকবে দলটি।
তবে পিভিভি সহজে নতুন সরকার গঠন করতে পারবে এমন নিশ্চয়তা নেই। নেদারল্যান্ডসের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বহু সক্রিয় দল রয়েছে। এককভাবে কোনো দল কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। জনমত জরিপ ইঙ্গিত করছে, নতুন নির্বাচনে মধ্য ডান ও মধ্য বাম উভয় পক্ষই লাভবান হতে পারে।
আরও পড়ুননেদারল্যান্ডসে ডানপন্থীদের জয়ের পর উদ্বেগে মুসলমানেরা২৪ নভেম্বর ২০২৩২০২৩ সালের নভেম্বরে আয়োজিত নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছিল গির্ট উইল্ডারসের পিভিভি। তবে দীর্ঘ আলোচনা ও দর-কষাকষির পর চুক্তি হয়। দল জোট সরকারে যোগ দিলেও উইল্ডারস পার্লামেন্টে অনেকটা প্রভাবহীন ছিলেন।
ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্যের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে উইল্ডারসের। ২০১৪ সালের নির্বাচনী সমাবেশে মরক্কোর এক অভিবাসীকে অপমান করায় বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর দল খোলামেলাভাবেই দেশটিতে ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পবিত্র কোরআন ও মসজিদের বিরোধিতা করে আসছে।
গত সপ্তাহে বিরল এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি দেশের অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার আলটিমেটাম দেন গির্ট উইল্ডারস। যদিও অভিবাসন ও আশ্রয়বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন তাঁরই দলের একজন। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী