মিনায় পৌঁছেছেন বাংলাদেশের হজযাত্রীরা। অন্যান্য দেশের হজযাত্রীরাও মিনায় সমবেত হয়েছেন। বুধবার ৮ জিলহজ মিনায় সমাগমের মাধ্যমেই শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।

মিনার বিস্তীর্ণ প্রান্তর এখন ‘লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক’ ধ্বনিতে মুখর। বিত্ত-বৈভব, কামনা-বাসনাকে পরিত্যাগ করে হাজিরা আল্লাহর সান্নিধ্য ও ক্ষমাপ্রত্যাশী। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় হাজিদের মন ব্যাকুল। তারা পাপতাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান।

হাজিদের পরিধানে এখন সেলাইবিহীন শুভ্র দুই টুকরো কাপড়। আজ তারা ধনসম্পত্তির জন্য লালায়িত নন মোটেও। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে চান। তারা আল্লাহর ক্ষমা পেয়ে পরিশুদ্ধ হতে চান। সদ্যভূমিষ্ট শিশুর মতো নিষ্পাপ হতে চান।
বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং দলের দলনেতা ধর্ম উপদেষ্টা ড.

আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও এখন মিনায় অবস্থান করছেন।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশি হাজিদের সেবায় মিনায় দায়িত্ব পালন করবে ১৮ টিম

হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে চায় সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা

সৌদি সরকারের নির্দেশনায় মঙ্গলবার রাত থেকেই হাজীরা মিনায় আসতে শুরু করেন। হাজিদের আগমন নির্বিঘ্ন করতেই এরূপ নির্দেশনা জারি করে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।

মিনা থেকে বুধবার রাতেই আরাফাতে রওয়ানা হবেন হাজিরা। ভিড় ব্যবস্থাপনার জন্য আগেভাগেই হাজিদের আরাফাতে নিতে বলেছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।

আগামীকাল ৯ জিলহজ সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বে কিছু সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ফরজ। এরপর হাজিরা মাগরিবের নামাজ না পড়েই মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। মুজদালিফায় পৌঁছে হাজিরা মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন এবং মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করবেন।

এ বছর বিশ্বের প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে হজপালনের জন্য অবস্থান করছেন। স্থানীয় হজযাত্রী মিলে এই সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হজ স দ আরব হজয ত র আল ল হ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

১৫ ঘণ্টা অপেক্ষার পর এল বাস, একদিন না একদিন বাড়ি পৌঁছাব

ঢাকায় পরিচিত, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের অনেকের সঙ্গেই আমার একটা জায়গায় অমিল। বেশির ভাগেরই বাড়ি ঢাকার কাছাকাছি, নয়তো নাগাল পাওয়ার মতো দূরত্বে। কিন্তু আমি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।

এ নিয়ে সহকর্মীরা কত রকম কথা বলেন। মাঝেমধ্যে রসিকতা করে তাঁদের বলি, ঢাকায় কর্মস্থল না হয়ে চীনে হলেই বরং ভালো হতো। কারণ, ঢাকার চেয়ে আমার বাড়ি থেকে চীন সীমান্ত কাছেই হবে হয়তো! নেপাল, ভুটানের দূরত্বও নিশ্চিত কয়েক ঘণ্টা কম হবে। আর ভারত তো আমার কাছে বাড়ির উঠান!

যাহোক, ভূমিকা আর বড় না করি। কিন্তু এতটুকু পড়ে হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, ‘বাড়িটা কোথায় আপনার? বাংলাদেশে তো!’ হ্যাঁ, আমার বাড়ি বাংলাদেশেই। লালমনিরহাটের পাটগ্রামে। আমাদের জেলাটা চিলির মতো। একদম লম্বা। ডান-বাম বলে কিছু নেই, এক সড়কেই পাঁচ উপজেলা। আর ৮০ কিলোমিটারের বেশি লম্বা এই সড়কের শেষ উপজেলাটি আমার। জেলা শহর থেকে বাড়ি যেতেই লাগে চার ঘণ্টা। এই সময়ে হয়তো ঢাকা থেকে যশোরে গিয়ে ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়ে নেওয়া সম্ভব। তাহলে বুঝুন। আমার বাড়ির দূরত্ব ঢাকা থেকে প্রায় সাড়ে চার শ কিলোমিটার। স্বাভাবিক সময়ে যানজট ছাড়া যেতে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে।

তো এবার আসি ঈদযাত্রায়। ঈদের তিন সপ্তাহ আগে টিকিট করলাম। কাউন্টারে যেতেই বলল, ‘ভাই, টিকিট তো আরও এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে।’ শেষে কতজনকে ধরে টিকিট পেলাম, সেই গল্প নাহয় না-ই বলি। গাড়ির সময় ছিল ৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়, মানে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। বেলা গড়াতেই সব গুছিয়ে আমার বোনসহ রেডি হলাম। বাসা থেকে বের হব, এমন সময় কাউন্টার থেকে ফোন।

ভাবলাম, হয়তো বলবে, সময়মতো চলে আসবেন। কিন্তু না কাউন্টার থেকে যা জানাল, তাতে মাথায় যেন আকাশ পড়ল। ফোনের ওপাশের লোকটা জানাল, আগের রাতে তাঁদের যেসব গাড়ি যাত্রী নিয়ে গেছে, সেগুলো ফিরতে পারেনি। আর ফিরবে কখন, সেটাও তারা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। তবে জানাল, আশা করছে গাড়ি ঢাকায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত তিন–চারটা বেজে যাবে। কিন্তু অত রাতে তো যাত্রীরা আসতে পারবেন না। তাই তারা ঠিক করেছে সকাল সাতটায় গাড়ি ছাড়বে।

কাউন্টার থেকে এ কথা শুনে পড়লাম মহামুশকিলে। ভাবলাম, পরদিন সকালে রওনা দিয়ে ঈদের আগে বাড়ি পৌঁছাতে পারব তো? সঙ্গে বোনও আছে। এদিকে পরিচিতিজন যারা বাড়ির পথে ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বললাম। কেউ বলল, ১০-১২ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে যমুনা সেতু পৌঁছাতে পারেনি। জানলাম, রাস্তায় মাইলের পর মাইল যানজট। গাড়ি দীর্ঘ সময় আটকে থেকে মিনিটখানেক চলে, আবার থামে। কেউ কেউ তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকারও তথ্য দিল। বুঝলাম বিকল্প কিছু ভাবতে হবে।

১৫ ঘণ্টার অপেক্ষার পর বাসে উঠেছেন এই যাত্রীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ