স্লুইস গেট নির্মাণে কাটা হয়েছে প্রধান সড়ক, দুর্ভোগ
Published: 5th, June 2025 GMT
গলাচিপা পৌর শহরের খালের ওপর স্লুইসগেট নির্মাণে শহরের প্রধান সড়কটি দেড় বছর ধরে কেটে রাখা হয়েছে। এতে দ্বিগুণ পথ ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দাদের। স্লুইসগেটটির নির্মাণকাজে ধীরগতিতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মাসেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। গত দেড় বছরে অর্ধেক কাজও হয়নি। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। স্লুইসগেটটি এখন শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গলাচিপা পৌর শহরের মধ্য দিয়ে পাঁচশ বছরের পুরোনো একটি খাল প্রবাহিত হচ্ছে। খালটি ‘গলাচিপা বন্দর খাল’ নামে পরিচিত। একসময় রামনাবাদ নদী এবং বুড়াগৌরঙ্গ নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল খালটির। সে সময়ে এ খালে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা চলাচল করত। গত শতকের সত্তরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর গলাচিপা শহর ও উলানিয়ার অংশ দিয়ে পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। তখন খালটির গলাচিপা ও উলানিয়া অংশের নদীর মুখে বাঁধ দেওয়া হয়। এরপর খালটি বধ্য খালে পরিণত হয়। একসময়ে খালটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়। সম্প্রতি খালটির দেড় কিলোমিটার খনন ও দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার প্রকল্প নেয় পাউবো। ‘ন্যাচারাল’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কাজটি করছেন আল-আমিন নামের এক উপ-ঠিকাদার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জোয়ার-ভাটার স্বচ্ছ পানি ওঠানামার জন্য খালের ডাকুয়া এলাকায় একটি স্লুইসগেট রয়েছে। স্লুইসগেটটির বাইরের অংশে চর পড়ায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে পাউবো শহরের প্রাণকেন্দ্রে নতুন স্লুইসগেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়ার পরপরই পৌর শহরের প্রধান ও ব্যস্ততম সড়কটি কেটে ফেলে। এ সময় বিভিন্ন স্থাপনা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়; যা গত দেড় বছর একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
গলাচিপা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাপস দত্ত বলেন, ধীরগতিতে কাজ করায় দেড় বছর ধরে ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণের ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। শুধু শহরবাসীর নয়, প্রধান সড়কটি কেটে রাখায় পার্শ্ববর্তী রাঙ্গাবালী উপজেলা মানুষের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ হচ্ছে। একই রকম মন্তব্য করেন গলাচিপা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুশীল চন্দ্র সাহা।
বক্তব্য জানতে উপ-ঠিকাদার মো.
পটুয়াখালী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব জানান, স্লুইসগেটটির নির্মাণকাজে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। জনগণের ভোগান্তি কমাতে কাজটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিচ্ছেন তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল ইসগ ট দ ড় বছর প রকল প শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
‘রোজার ঈদে নির্বিঘ্নে যাইতে পারছি, এই ঈদে কী সমস্যা হইল’
গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অন্তত তিনটি স্থানে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটা থেকে মহাসড়কটির ইউটার্ন ও কয়েকটি বাস স্টপেজে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তি বেড়েছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের।
সরেজমিন দেখা গেছে, শ্রীপুর ও গাজীপুর সদরের মাঝামাঝি স্থানে মহাসড়কের নতুন বাজার এলাকায় ইউটার্নের দক্ষিণ দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ইউটার্নে গাড়ি ঘোরানোর সময় সেখানে বিশৃঙ্খলার কারণে দফায় দফায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাস স্টপেজের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে বিভিন্ন গন্তব্যের বাসগুলো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
মাওনা চৌরাস্তায় উড়ালসড়কের নিচের দুটি সড়ক গাজীপুরের সঙ্গে কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলাকে যুক্ত করেছে। এই সড়কগুলো পার্শ্ব সড়কের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সকাল থেকে আজ বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ সেখানে দফায় দফায় যানজট দেখা যায়। উড়ালসড়ক থেকে উত্তর দিকে এমসি বাজার ইউটার্ন, নয়নপুর ও শ্রীপুরের শেষ ইউটার্ন জয়নাবাজারে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এ ছাড়া পার্শ্ব সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় মহাসড়কেও এর প্রভাব পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মহাসড়কের সঙ্গে লাগোয়া পার্শ্ব সড়কগুলো থেকে যানবাহন মূল সড়কে ওঠার সময় কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। এতে ইউটার্ন না থাকলেও অনেক জায়গায় যানজট দেখা দেয়। আজ শিল্পাঞ্চলের প্রায় সব কারখানা ছুটি হওয়ায় সড়কের ব্যাপকভাবে যানবাহনের চাপ পড়েছে। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিনিবাস, দূরপাল্লার বাসগুলো ব্যাপকভাবে মহাসড়কে চাপ বাড়াচ্ছে। এর মধ্যে মহাসড়কটির একাধিক লেন দখল করে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে দূরপাল্লার যানবাহন।
আরও পড়ুনগাড়ির চাপ বেড়েছে, দু–এক স্থানে যানজট, আছে ভোগান্তি১৮ ঘণ্টা আগেমাওনা থেকে জামালপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন সাব্বির হোসেন নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘গত রোজার ঈদে নির্বিঘ্নে যাইতে পারছি। কিন্তু এই ঈদে কী সমস্যা হইল? মাওনা থেকে বাসে উইঠা নয়নপুর আইসা আধঘণ্টা ধরে আটকে আছি।’ আরেক যাত্রী সালমা আক্তার বলেন, সড়কে যানবাহনগুলো চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে পুলিশ বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। ময়মনসিংহ অভিমুখী যাত্রী সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘শুরুর দিনেই এত যানজট হইলে শুক্রবারে সড়কের কী অবস্থা হইব কেডা জানে?’
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশ তৎপর বলে জানিয়েছেন মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভ্রাম্যমাণ দলগুলো কাজ করছে। আমি নিজেও বিভিন্ন ইউটার্নে গিয়ে ওই সব এলাকায় নজর রাখছি। আশা করছি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের যানজট কমে আসবে।’