আমি খুবই পরিবারকেন্দ্রেীক মানুষ: রুনা খান
Published: 10th, June 2025 GMT
রুনা খান। জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে অভিনয়ের বাইরেও নিজের স্টাইলিশ ইমেজ নিয়ে দারুণভাবে আলোচিত তিনি। ঈদ উপলক্ষে ভিন্ন তিনটি কন্টেন্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি। ঈদের কাজসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।
ঈদ কোথায় কাটালেন?
বেশির ভাগ সময় তো ঈদ ঢাকাতে করা হয়। এবার পুরো পরিবারসহ ঢাকার বাইরে ঈদ করছি। কারণ, আমার মেয়ের স্কুলের ছুটি এবার লম্বা।
ঈদে ওটিটিতে আপনার তিনটি কাজ এসেছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাই
এবার ঈদুল আজহায় ওটিটিতে তিনটি ভিন্ন কনটেন্ট মুক্তি পেয়েছে। ৫ জুন হইচইয়ে মুক্তি পেয়েছে ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। অন্যদিকে আইস্ক্রিনে ৯ জুন মুক্তি পেয়েছে শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত ‘পাপ কাহিনী’। এই দুইটা সিরিজ থেকে দারুন সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া তৌফিক এলাহী পরিচালিত ‘নীলপদ্ম’ সিনেমাও আইস্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে।
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’তে চরিত্রটা কেমন?
এখানে আমার চরিত্রের নাম আম্বিয়া। সে একটা ভাতের হোটেলের মালিক। ভীষণ দাপুটে, রগচটা একটা নারী। তবে তিনি ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। সে তার স্বামী আব্বাসের প্রতি দূর্বল। এর থেকে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে নির্মাতা অমিতাভ রেজা প্রথম স্ক্রিপ্ট দেখেই বলেছেন আম্বিয়া চরিত্রটা রুনাকে ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে হবে না।
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ করতে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ?
না। এই চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি। কারণ, নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী ও তার টিম চরিত্রটা এমনভাবে লিখেছেন; মনে হয়েছে এটা আমার জন্যই। পুরোপুরি গুছিয়ে আমার কাছে দিয়েছেন। আর আমার কাজ অভিনয়, সেটা আমি করে গেছি। এখন ওয়েব সিরিজে কাজ করেতে গেলে আমারা গুছিয়ে কাজ করার সময় পাই। বিশেষ করে স্ক্রিপ্ট, রিহার্সেল, লুকটেস্টসহ সময় নিয়ে কাজ করতে পারি। ফলে অমিতাভ ভাই আম্বিয়াকে যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে আমি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। টিজার দেখ সবাই ভালো। প্রাপ্তির জায়গা এটাই।
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ সিরিজের চরিত্র ও মোশাররফ করিমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা.
..
মোশাররফ ভাইয়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সম সময়ই ভালো। তিনি আমার বহু বছরের সহকর্মী। একসঙ্গে আমরা অনেক একক-ধারাবাহিক নাটক-সিনেমায় কাজ করেছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তিনি সহযোগিতা পরায়ন অভিনেতা।
‘পাপ কাহিনী’ নিয়ে আলোচনা চলছে। এটা দর্শক কেন দেখবেন?
হ্যাঁ, কয়েকদিন হল আমিও দেখছি মানুষ এই সিরিজ নিয়ে ভালোই আলোচানা করছে। বড় কথা হলো, দর্শক এখন নানা মেজাজের জিনিস দেখতে পছন্দ করেন। ‘পাপ কাহিনী’ হল ভিন্ন মেজাজের একটি সিরিজ। এখানে দর্শক ভালো একটি গল্প পাবে।
অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন আপনাকে নিয়ে। সেখানে তিনি বলেছেন আপনার নাকি অনেক গাড়ি, বাড়ি ও অনেক টাকা দরকার?
জয় ভাই এটা মজার ছলে পোস্ট করেছেন। মাঝে মধ্যেই তো নানার কিছু করেন। আমাকে নিয়ে কেন পোস্ট করেছেন সেটা জয় ভাই ভালো বলতে পারবেন। এরসঙ্গে সিনেমার ও আমার ব্যক্তি সম্পর্ক নেই। আমি বরাবরই সাধারণ একজন মানুষ। সাধারণভাবেই বাঁচতে চাই।
ছোটবেলার কোরবানির ঈদ ও এখনকার ঈদের মধ্যে পার্থক্য?
ছোট বেলার ঈদে নতুন জামা-জুতা পড়ে আমরা দুদুর-বাড়ি ও নানুর বাড়ি যেতাম। কাজিন-পাড়াপ্রতিবেশি সবাই একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম। তখন তো কোনো দায়িত্ব ছিলো না। এখন কাঁধে অনেক দায়িত্ব। সংসার হয়েছে। সমস্ত দায়িত্ব পার করে হয়তো বিকেলে একটু বের হই। বন্ধুরা আসে বা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়। এখন ঈদ বা বিশেষ দিন মানে পারিবার এবং একেবারেই কাছে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো।
কোরবানি ঈদ কথাটা কানে আসলই প্রথমেই কোন স্মৃতিটা মনে পড়ে?
গত রোজার গেল ঈদের আগে অর্থাৎ ১০ মার্চ আমার বাবা প্রয়াত হয়েছেন। গেল রোজার ঈদ ও কোরবানির ঈদ আমরা দুই ভাই বোন বাবাকে ছাড়া ঈদ করছি। এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই। বাবার কথা মনে হলেই বকিটা ভারি হয়ে আসে। ভবিষ্যতে যত ঈদ আসবে আমাদের মনে নাড়া দেবে যে, আব্বু নেই। কারণ, আমি খুবই পরিবার কেন্দ্রেীক মানুষ। ছোটবেলা থেকেই আমি বাবা-মা-ভাই ও বোন আমার পরিবার। এখনো স্বামী-সন্তান নিয়ে আমার পরিবার। তো আমার কাছে পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি যখন হারিয়ে যায়, তখন কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই থাকে না। এই কষ্ট মেনে নিতে হয়, মেনে নিতে হবে।
বর্তমানে কী কী কাজ হাতে আছে...
তিনিটি সিনেমার শুটিং শেষ করে রেখেছি। মাসুদ পথিকের ‘বক’, কৌশিক সংকর দাশের ‘দাফন’, ও জাহিদ হোসেনের ‘নীলবন্ধন’। এর মধ্যে সোহেল রানা বয়াতির স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায় ‘নিদ্রাসুর’-এর অভিনয় করেছি। এছাড়া আরও একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে; সেটার নাম বলা নিষেধ আছে। একমাস নির্মাতা ও প্রযোজকের টিম থেকে ঘোষণা আসবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র ক জ কর চর ত র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
আহমেদাবাদে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ভারতের আহমেদাবাদে ২৪২ জন আরোহী নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এটিকে এক দশকের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ফ্লাইট রাডারের তথ্য অনুযায়ী, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমান পরিবহন খাতে জনপ্রিয় মডেলের এই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এভিয়েশন খাতের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, দুর্ঘটনার ভিডিওতে উড্ডয়নকালে (টেক–অফের সময়) উড়োজাহাজের ডানার পেছনের দিকের ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে নেওয়া অবস্থায় দেখা গেছে। এটা এ দুর্ঘটনার একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। ফ্ল্যাপ হলো উড়োজাহাজের ডানার পেছনের বর্ধিতাংশ। উড়োজাহাজ উড্ডয়নকালে ও অবতরণের সময় ফ্ল্যাপগুলো খুলে দেওয়া হয়।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জিওফ্রে টমাস বিবিসিকে বলেন, আমি যখন এটা দেখছিলাম, তখনো উড়োজাহাজের নিচের চাকা খোলা ছিল আর ফ্ল্যাপগুলো গুটানো ছিল। এর অর্থ ফ্ল্যাপগুলো ডানার সঙ্গে একই রেখায় অবস্থান করছিল, যেটা উড়োজাহাজ উড্ডয়নের পর এত দ্রুত এমন করাটা খুবই অস্বাভাবিক।সাধারণত উড্ডয়নের ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে নিচের চাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ফ্ল্যাপগুলো গুটিয়ে নেওয়া হয়।
আরেকজন বিশেষজ্ঞ টেরি টোজার বিবিসিকে বলেন, ভিডিও দেখে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা কঠিন। তবে মনে হচ্ছে না ফ্ল্যাপগুলো বাইরে বেরোনো অবস্থায় ছিল এবং সেটা হলে তা একটি উড়োজাহাজ সঠিকভাবে উড্ডয়ন সম্পন্ন না করার ব্যাখ্যা হতে পারে।
সাবেক পাইলট ও বাকিংহামশায়ার নিউ ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মার্কো চ্যান বিবিসিকে বলেন, যদি ফ্ল্যাপগুলো সঠিকভাবে না রাখা হয়, তাহলে সেটা সম্ভাব্য মানুষের ভুলের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে। কিন্তু ভিডিওর রেজ্যুলেশন এতটাই কম যে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
কাতার এয়ারওয়েজের সাবেক পাইলট ক্যাপ্টেন মো. ইউনূস জানান, যখনই ফ্ল্যাপগুলো উন্মুক্ত করা হয়, সেই সঙ্গে ডানার সামনের দিকের বর্ধিতাংশ, যা স্ল্যাট নামে পরিচিত, সেগুলো খুলে যায়। ফলে উড়োজাহাজের ডানার পরিসর বেড়ে যায়। এতে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিতে উড়োজাহাজ ওপরের দিকে উঠতে পারে। সাধারণত উড়োজাহাজ এক হাজার ফুট ওপরে ওঠার পর ফ্ল্যাপগুলো বন্ধ করা হয়। অপর দিকে টেক–অফের পর উড়োজাহাজ ৫০ ফুট ওপরে উঠলেই ল্যান্ডিং গিয়ার বা নিচের চাকা (আন্ডারক্যারিজ) গুটিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার আগে ফুল লোড ছিল। অর্থাৎ ২৪২ জন আরোহী, তাঁদের মালামাল ছাড়াও অন্তত ৬০ টন জ্বালানি তেল ছিল। এ রকম অবস্থায় উড়োজাহাজটি টেক–অফের সময় ডানার ফ্ল্যাপগুলো বন্ধ থাকলে প্লেনটি উড়ে বেশি দূর যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
তিনি বলেন, তাঁরা খোঁজখবর করে যতটুকু জানতে পেরেছেন, ওই ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন একজন অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন, যিনি ইনস্ট্রাক্টর। তবে কো–পাইলট অনেকটাই নবিশ বৈমানিক ছিলেন। তাই এ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কতটা ‘হিউম্যান এরর’ (মানুষের ত্রুটি) আর কতটা যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তা পরবর্তী সময়ে তদন্ত সাপেক্ষে স্পষ্ট হওয়া যাবে।
বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি নিচের দিকে নামছিল এবং একটি ভবনের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।