রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেবে ইইউ
Published: 11th, June 2025 GMT
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কোর যুদ্ধ অব্যাহত থাকায়, মঙ্গলবার (১০ জুন) ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার ওপর ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে। নতুন এই প্রস্তাবে বিশেষ করে রাশিয়ার তেল রপ্তানি ও ব্যাংকিং খাতকে লক্ষ্য করা হয়েছে। খবর আনাদোলুর।
ব্রাসেলসে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা ক্যালাসের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন বলেন, “নতুন পদক্ষেপগুলো মূলত রাশিয়ার জ্বালানি ও ব্যাংকিং খাতে আঘাত হানবে।”
তিনি আরো বলেন, “শক্তিই একমাত্র ভাষা যা রাশিয়া বুঝতে পারবে।”
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হামলায় যুক্তরাজ্য ১০০ শতাংশ জড়িত: মস্কো
আবারো রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে সফল হামলার দাবি ইউক্রেনের
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রাশিয়ার অর্থনীতি ইতিমধ্যেই ধুঁকছে, তেল ও গ্যাসের রাজস্ব প্রায় ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২১০ বিলিয়ন ইউরোর রিজার্ভ জব্দ রয়েছে।”
নতুন নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজে প্রতি ব্যারেল তেলের মূল্যসীমা ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৫ ডলার করা এবং রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের ওপর ভিত্তি করে পরিশোধিত পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও ইইউ রাশিয়ার তথাকথিত ‘ছায়া নৌবহরের’ সঙ্গে যুক্ত আরো ৭৭টি জাহাজকেও কালো তালিকাভুক্ত করবে।
আর্থিক খাতে, ইইউ আরো ২২টি রাশিয়ান ব্যাংকের ওপর সুইফট নিষেধাজ্ঞা জারি এবং নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সাহায্যকারী তৃতীয় দেশের আর্থিক অপারেটরদের উপর নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছে।
নতুন করে আরো ২.
ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি ভন ডের লেইন কমপক্ষে ৩০ দিনের পূর্ণ এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির জন্য ইইউর দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “যুদ্ধ অবশ্যই শেষ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “প্রতিটি নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার যুদ্ধ করার ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। তাই রাশিয়া আমাদের বিশ্বাস করাতে চায় যে তারা চিরকাল এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এটি সত্য নয়। রাশিয়ার অর্থনীতি ‘সঙ্কুচিত হচ্ছে’, এর জিডিপি হ্রাস পেয়েছে এবং এটি ইতিমধ্যেই জ্বালানি খাত কয়েক বিলিয়ন রাজস্ব হারিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান ক্যালাস বলেন, ‘ছায়া বহর’ লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ করে রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলেছে। মে মাসে ইইউর ১৭তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদিত হওয়ার পর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষ্ণ সাগর এবং বাল্টিক সাগরের চালানে ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ প রস ত ব শ ষ কর র ওপর ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি পর্যালোচনায় দুই কমিটি
সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে দুই দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। পরে এটি সাত দফায় পরিণত হয়। তাঁদের দাবি, পর্যালোচনায় দুটি আলাদা কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ।
এর আগে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যমান পল্লী বিদ্যুৎ কাঠামো পর্যালোচনা করে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দেওয়ার কথা কমিটির। ওই কমিটিকে দ্রুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আজ বুধবার একটি চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় পবিসসমূহে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই কমিটির প্রতিবেদনের খসড়া উপস্থাপনের সময় অংশীজনদের দেওয়া মতামত যুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
আরইবি ও পবিস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের দাবি পর্যালোচনায় ১৭ জুন একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এ কমিটি আগে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ বিবেচনাসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবে।
এ ছাড়া একই দিনে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে আরেকটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পবিসের চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিত করার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে তারা। সব মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বহাল, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্ত এবং অন্যায়ভাবে বদলি করা কর্মীদের পদায়নের বিষয়টি সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে সুপারিশ করবে কমিটি।
গত বছরের শুরু থেকেই দুই দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে তাদের একজনের গ্রেপ্তারকে ঘিরে গত অক্টোবরে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। এরপর থেকেই কারও কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ বিভিন্ন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকে আরইবি। এরপর গত ২১ মে ৭ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন কয়েক হাজার কর্মী। গত ২৬ মে থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের দাবি মানার আশ্বাসের ভিত্তিতে ৫ জুন আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
পবিসের দাবির মধ্যে আছে এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন করা; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা এবং মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিতে পুনর্বহাল।
এর আগে আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি কয়েক দফা বৈঠক করলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর গত বছরের ২৩ অক্টোবর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।