টাঙ্গাইলে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধ, হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতার কথা জানালেন আয়োজকেরা
Published: 11th, June 2025 GMT
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিরাপত্তার অভাবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধ করার কথা জানিয়েছেন আয়োজকেরা। উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকায় অবস্থিত জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হল ভাড়া করে ঈদের দিন থেকে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছিল। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সেটি বন্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে কামরুজ্জামান (সাইফুল) ও সাজু মেহেদীর উদ্যোগে স্থানীয় কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মী জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে ‘তাণ্ডব’ ছবিটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। তবে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে গত শুক্রবার বিকেলে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখান থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবি জানানো হয়। তবে আয়োজকেরা ঈদের দিন শনিবার থেকে ছবিটি প্রদর্শন শুরু করেন।
আন্দোলনকারীদের একজন মাওলানা আবদুল্লাহ বলেন, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপ হতে পারে। সেই জন্য হলটিতে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের জন্য বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। প্রশাসনের কাছে বন্ধের জন্য লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আয়োজক কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ‘দর্শকদের কাছ থেকে ভালোই সাড়া পাচ্ছিলাম। বিভিন্নভাবে আমাদের কাছে হুমকি আসতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।’
অপর আয়োজক সাজু মেহেদী বলেন, হলটি দৈনিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য জেলা পরিষদ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। পাঁচ দিনের ভাড়া অগ্রিম জমা দেওয়া হয়। হলের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র মেরামত, টিকিট ছাপা ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। শুরু থেকে একটি মহল চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিরোধিতায় নামেন। প্রচার–প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে। পোস্টার লাগাতে দেয়নি তারা।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে তাঁরা সিনেমা চালাচ্ছিলন। এদিকে বন্ধ করার জন্য আমার অফিসে আবেদনও করেছে। তবে আমি ছুটিতে রয়েছি।’
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওই হল ভাড়া দিয়েছিলাম। সঙ্গে কিছু শর্তও দিয়েছিলাম, তার মধ্যে অন্যতম ছিলো, সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সিনেমা চালানো বন্ধ করতে হবে। পরে কী হয়েছে, আর জানি না।’
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধ করার দাবি নিয়ে কিছু লোক আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি তাঁদের বলেছেন, প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে; এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত দেবে। এটা আমাদের কাজ নয়। তবে আয়োজকেরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি পুলিশকে জানাননি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার পক্ষে গণসংহতি আন্দোলন
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষমতা যদি একচ্ছত্রভাবে সরকারের হাতে থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনও ভুয়া নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলে চালিয়ে দিতে পারে। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে এ কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেখেছি। তাই সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান তৈরির কথা বলেছি।’
ইতিপূর্বে সাংবিধানিক পদগুলোতে রাজনৈতিক আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজকের আলোচনা রাজনৈতিক ইতিহাসের আনন্দঘন দিন। এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের বিষয়ে যদি আমরা একমত হতে পারি, এটা ঐতিহাসিক হবে।’
এনসিসি গঠনের বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের অবস্থান তুলে ধরে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এনসিসি প্রতিষ্ঠায় আমরা নীতিগতভাবে একমত। তবে এর গঠন নিয়ে আমাদের কিছু পর্যালোচনা রয়েছে। আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে ঐকমত্য হবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। যদিও এখনো অনেক রাজনৈতিক দল একমত হয়নি।’
অনেক রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে এনসিসি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এনসিসির আওতা নিয়েও অনেকের দ্বিমত রয়েছে। তবে আমরা মনে করি, আলোচনা চলমান রাখা দরকার। এই কাউন্সিল রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠবে।’