টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিরাপত্তার অভাবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধ করার কথা জানিয়েছেন আয়োজকেরা। উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকায় অবস্থিত জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হল ভাড়া করে ঈদের দিন থেকে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছিল। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সেটি বন্ধ করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে কামরুজ্জামান (সাইফুল) ও সাজু মেহেদীর উদ্যোগে স্থানীয় কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মী জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে ‘তাণ্ডব’ ছবিটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। তবে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে গত শুক্রবার বিকেলে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখান থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবি জানানো হয়। তবে আয়োজকেরা ঈদের দিন শনিবার থেকে ছবিটি প্রদর্শন শুরু করেন।

আন্দোলনকারীদের একজন মাওলানা আবদুল্লাহ বলেন, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপ হতে পারে। সেই জন্য হলটিতে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের জন্য বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। প্রশাসনের কাছে বন্ধের জন্য লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আয়োজক কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ‘দর্শকদের কাছ থেকে ভালোই সাড়া পাচ্ছিলাম। বিভিন্নভাবে আমাদের কাছে হুমকি আসতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।’

অপর আয়োজক সাজু মেহেদী বলেন, হলটি দৈনিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য জেলা পরিষদ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। পাঁচ দিনের ভাড়া অগ্রিম জমা দেওয়া হয়। হলের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র মেরামত, টিকিট ছাপা ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। শুরু থেকে একটি মহল চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিরোধিতায় নামেন। প্রচার–প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে। পোস্টার লাগাতে দেয়নি তারা।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে তাঁরা সিনেমা চালাচ্ছিলন। এদিকে বন্ধ করার জন্য আমার অফিসে আবেদনও করেছে। তবে আমি ছুটিতে রয়েছি।’

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওই হল ভাড়া দিয়েছিলাম। সঙ্গে কিছু শর্তও দিয়েছিলাম, তার মধ্যে অন্যতম ছিলো, সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সিনেমা চালানো বন্ধ করতে হবে। পরে কী হয়েছে, আর জানি না।’

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধ করার দাবি নিয়ে কিছু লোক আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি তাঁদের বলেছেন, প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে; এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত দেবে। এটা আমাদের কাজ নয়। তবে আয়োজকেরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি পুলিশকে জানাননি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ন বন ধ

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় মরা গরুর মাংস জব্দ, গ্রেপ্তার ২, জরিমানা 

খুলনায় বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা ৪ মণ ৩০ কেজি মরা গরুর মাংসসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার নগরীর গল্লামারী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশ একটি পিকআপ জব্দ করে। 

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. মমিন এবং সোনাডাঙ্গা মডেল থানার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদারের ছেলে তামিম হাওলাদার। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘পুলিশের একটি টিম গল্লামারী এমএ বারী সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশী করছিল। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি পিকআপ বারী সড়কে প্রবেশ করলে সন্দেহবশত চালক মো. মমিনকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, গাড়িতে ৪ মণ ৩০ কেজি গরুর মাংস রয়েছে। মাংস সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল আমিন এলাকার বাসিন্দা তামিমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা থেকে আনা হয়েছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এরপর ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়া হয় তামিমকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মাংসের প্রকৃত মালিকের নাম ও ঠিকানা পুলিশের কাছে জানায় সে। পুলিশ মাংসের প্রকৃত মালিক চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর উপজেলার সাহারেজ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে। এ সময়ে তিনি পুলিশকে জনান, বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় গরুটি স্ট্রোক করলে জবাই করা হয় এবং ৬৩ হাজার টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করা হয়। রাত ৩টার দিকে গরুর মাংস পিকআপে করে খুলনার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়।’’ 

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, উল্লেখিত আসামিরা বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগাক্রান্ত এবং মৃত গরুর মাংস সংগ্রহ করে খুলনা মহানগরের বিভিন্ন হোটেলে সরবারাহ করে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে খাদ্য নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। জব্দ হওয়া মাংস পরীক্ষার জন্য ১ কেজি রাখা হয়েছে। বাকী অংশ আদালতের নির্দেশে ধব্বংস করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অপর দিকে, খুলনার কয়রা উপজেলা সদরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত একজন পঁচা মাংস বিক্রেতাকে আটক করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং একই সঙ্গে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জব্দকৃত মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।

নূরুজ্জামান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ