নোয়াখালীতে বসতঘরে ঝুলছিল মা-মেয়ের লাশ
Published: 12th, June 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত দুজন হলেন রাবেয়া বসরী (২৩) ও তাঁর চার বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম। উদ্ধারের পর লাশ দুটি সুধারাম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাবেয়া বসরীর স্বামী আবদুর রহমান ওরফে রুবেল (৩৮) পেশায় কসাই। রাবেয়া তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে রাবেয়াকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
কাদিরহানিফ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুর রহিম নিহত রাবেয়ার স্বামী আবদুর রহমানের বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আবদুর রহমান তাঁর ছোট বোনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর মেয়ে জান্নাতুল ও স্ত্রী রাবেয়া বসরীর লাশ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। তিনি চিৎকার দিলে পাশের ঘর থেকে তাঁর ভাইসহ প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তিনিও (ইউপি) ওই বাড়িতে যান।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লন্ডন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মা ও মেয়ের লাশ পৃথক দুটি রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছেন। স্বামীর দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি দেড়টার দিকে ছোট বোনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফিরে এসে দেখেন ঘরের কাপড়চোপড় এলোমেলো, কক্ষের ভেতর তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীর লাশ ঝুলছে। তখন চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন।
এসআই লন্ডন চৌধুরী জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য স্বামী আবদুর রহমানকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে মা-মেয়ের মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ র রহম ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বাবা-ছেলের রিমান্ড: এএসআই ক্লোজড, এসআইকে বদলি
মাদকসহ গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন (৪৯) ও তার ছেলে মানিক মিয়ার (২৯) রিমান্ডের ঘটনায় ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে রৌমারী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাবিবুর রহমানকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। একই সময় উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আওয়ালকে ঢুষমারা থানায় বদলি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা যাদুরচর ইউনিয়নের আলগার চর সীমান্ত এলাকায় রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। এ সময় মাদকসহ আনোয়ার হোসেন ও তার ছেলে মানিক মিয়াকে আটক করা হয়। আটকের পর থানায় নেওয়ার পথে স্বজন ও এলাকাবাসী তাদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ৮ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করা হয়। পরে ওই দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয় ও ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার মাদক ব্যবসায়ী বাবা ও ছেলেকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে ওই দুই আসামিকে আনতে কুড়িগ্রামে পাঠানো হয় এএসআই হাবিবুর রহমানসহ দুই কনস্টেবলকে। কিন্তু আসামিদের সঙ্গে এএসআই আসেননি। ফলে দায়িত্ব অবহেলার কারণে এএসআই হাবিবুর রহমানকে ক্লোজড করা হয়। একই সময়ে বদলি করা হয় এসআই আব্দুল আওয়ালকে।
রৌমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রিমান্ডের দুই আসামিকে আনতে কুড়িগ্রামে পাঠানো হয় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাবিবুর রহমানসহ দুই কনস্টেবলকে। কিন্তু রিমান্ডের ওই দুই আসামির সঙ্গে না এসে কনস্টেবলদের মাধ্যমে তাদের থানায় পাঠিয়ে দেন এএসআই হাবিবুর রহমান। দায়িত্ব অবহেলার কারণে তাকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। আর প্রশাসনিক কারণে উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আওয়ালকে ঢুষমারা থানায় বদলি করা হয়েছে।