রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুবক শরীফ আহমেদ সৌরভের (২১) মরদেহ দাফনের এক বছর পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে গতকাল ২৮ জুলাই সোমবার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের সামাজিক কবরস্থান থেকে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রাশেদের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।  

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ আগষ্ট ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন বাড়ি থেকে ডেকে এনে শরীফ আহমেদ সৌরভকে পিটিয়ে হত্যা করে। গত ৫আগষ্ট দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূল পরিবেশ না থাকায় ও উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় শরীফ আহমেদ সৌরভের পরিবারের সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করা হয়।

পরে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত ২৫ফেব্রুয়ারি শরীফ আহমেদ সৌরভের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার বাদী হয়ে স্থানীয় ১৭জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রূপগঞ্জ থানা মামলা নম্বর২৬(২)২০২৫।

হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল করিম নিহত শরীফ আহমেদ সৌরভের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে মরদেহ উত্তোলনসহ ঘটনার তদন্তের নির্দেশনা দেন। পরে শরীফ আহমেদ সৌরভের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। 

মামলার বাদী ও শরীফ আহমেদ সৌরভের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার বলেন, আমরা গরিব ও অসহায় বলে শরীফ আহমেদ সৌরভের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানতে পারবো না তা হয় না। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে শরীফ আহমেদ সৌরভকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে তিনি দাবি করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল করিম বলেন, আদালতের নির্দেশে শরীফ আহমেদ সৌরভের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

রূপগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, ময়না তদন্তের পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ থ ন র মরদ হ তদন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। 

গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন। 

আরো পড়ুন:

মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত

উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়। 

নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন। 

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
  • কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে বঁটির আঘাতে এসআই আহত
  • অভিযানে ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে