শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 13th, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, শিক্ষা মানুষকে বিনয়ী করে। সবার মধ্যে শিক্ষার ছোঁয়া পড়লে সমগ্র বাংলাদেশ পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগবে না। প্রকৃত শিক্ষা যে অর্জন করেছে সে কখনো অহংকারী হবে না, সে কখনো দাম্ভিক হবে না। সেগুলো পরিহার করে নম্র ও বিনয়ী হবে। শিক্ষা মানুষকে বিনয় করে। একজন ছাত্র যদি শিক্ষক ও পরিবারের মধ্যে থেকে সঠিক শিক্ষা পায় সে ছাত্র কখনো দম্ভ দেখাবে না, সে বিনয়ী হবে। শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করা যাবে না। শিক্ষা হচ্ছে প্রকৃত মানুষ হওয়ার প্রধান মাধ্যম এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়িতে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত গুণীজন সংবর্ধনা ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আবরার বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধ সুস্পষ্টভাবে জ্ঞান আহরণ ও মূল্যবোধ সৃষ্টির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছিলেন। সেই আড়াই হাজার বছর আগে প্রচারিত গৌতম বুদ্ধের বাণী আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলন ঘটাতে পারলে প্রত্যেকের বাস্তব জীবন সফল ও সুন্দর হবে।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা পদ্ধতি হতে হবে আনন্দমুখর। যেখানে মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করে সমাজে একজন ভালো মানুষ হওয়ার পথে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা কখনো ভালো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না।
তিন পর্বের অনুষ্ঠানে প্রথমে ধর্মীয় পর্ব, দ্বিতীয় পর্বে গুণীজন সংবর্ধনা এবং তৃতীয় পর্বে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা.
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- উপসংঘরাজ শাসনভাস্কর শাসনপ্রিয় মহাস্থবির, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া ও বৌদ্ধ সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন আদর্শ কুমার বড়ুয়া।
এতে বক্তব্য দেন- উপসংঘরাজ সদ্ধর্মবারিধি প্রিয়দর্শী মহাস্থবির ধর্মদর্শী মহাস্থবির।
অনুষ্ঠানে দেশ ও সম্প্রদায়ের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫ গুণীব্যক্তিকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা প্রাপ্তরা হলেন- স্বাধীনতা ও একুশে পদকে ভূষিত টাঙ্গাইল কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পরিচালক ও ভাষাসংগ্রামী প্রতিভা মুৎসুদ্দী, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পদকে ভূষিত বরেণ্য ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক সাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া, বহু সম্মাননায় ভূষিত সাহিত্যিক-গবেষক-সংগঠক অধ্যাপক বাদল বরণ বড়ুয়া ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া ও শিল্পপতি ও দানবীর স্বপন কুমার চৌধুরী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষ উপদ ষ ট অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ ওড়ার শক্তি হারায় উড়োজাহাজটি
ভারতের গুজরাট প্রদেশের রাজধানী আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ (বোয়িং ৭৮৭-৮) বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত থ্রাস্ট (আকাশে ওঠার শক্তি) না পাওয়া, দুই ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যাওয়া, ফুয়েল মিটারিং সিস্টেম বন্ধ হওয়া কিংবা বার্ড স্ট্রাইক (পাখির সঙ্গে সংঘর্ষ) মতো কারণগুলোকে সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভারতীয় তদন্তকারীদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও যোগ দিয়েছেন। সহায়তা দেবে বোয়িংও।
ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উড়োজাহাজটি ৬২৫ ফুট উঁচুতে উঠে আর ওড়ার শক্তি পাচ্ছিল না। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এক্স পোস্টে লেখেন, ধ্বংসের দৃশ্যটি দুঃখজনক।
শুক্রবার রয়টার্সকে দুটি পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম কক্ষের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পরিবার মুখ দেখে শনাক্ত করায় ছয়টি মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমান বহর বন্ধ রাখার কথা ভাবছে। অন্যদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে বোমা আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছে একটি ফ্লাইট।
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফ্লাইট ডেটা অনুসারে, বিমানটি ৬২৫ ফুট (প্রায় ১৯০ মিটার) উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছিল। এর পর বিমানটি ওড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং ক্রমেই নিচে নেমে যায় ও বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানটি আকাশে ছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ড।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) উড্ডয়ন করে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ফ্লাইট এআই১৭১ গুজরাট বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। তাতে ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। একজন বাদে বাকি সবারই মৃত্যু ঘটেছে। মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ওপর আছড়ে পড়ায় ছয় শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার। বিমান চালনায় তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আকাশে ওড়ার আগে শেষ মুহূর্তে তোলা একটি ছবি শেষ স্মৃতি হয়ে রইল। বিমানে থাকা চিকিৎসক দম্পতি ও তাদের তিন শিশুর সেই সেলফি এখন সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে। ছবিতে দেখা যায়, ডা. প্রত্যুষ জোশী ও ডা. কৌমি ব্যাস প্লেনের এক পাশে পাশাপাশি বসে আছেন। অন্য পাশে বসা তাদের তিন সন্তান– আট বছরের মেয়ে মিরায়া আর পাঁচ বছরের যমজ দুই ছেলে নকুল ও প্রদ্যুৎ। শিশুদের চোখেমুখে প্লেনে চড়ার আনন্দ, বাবার ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসির চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু কে জানত, এই ছবিই হয়ে উঠবে পরিবারটির শেষ ছবি।