জয়েন্টের ব্যথা হতে পারে কঠিন রোগের লক্ষণ
Published: 20th, June 2025 GMT
অনেকেই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হাড়গুলোর এক বা একাধিক জোড়ায় ব্যথা অনুভব করেন। অনেক সময় ব্যথার তীব্রতা বেশি থাকে। এটি সাধারণ একটি রোগ মনে হলেও কখনও কখনও ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে।
ডা. শায়লা হক এমবিবিএস (ডিইউ), পিজিটি (মেডিসিন) একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘অনেক পেসেন্ট এসে বলেন, গিরায় গিরায় ব্যথা করে। সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারি না। খুব সাধারণ মনে হলেও এটার পেছনে অনেক ধরণের কারণ লুকিয়ে আছে। জয়েন্ট পেইনগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, শরীরে হাড়ের যে জোড়াগুলো আছে, এই জায়গাগুলোতে ব্যথা হবে। ব্যথার ধরণ মাঝারি বা তীব্র হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সকালে উঠে হাত পা নাড়াতে পারেন না। আস্তে আস্তে ঠিক হয়। আবার কারও কারও একটা জয়েন্ট ফোলা থাকে, কারও কারও দুই বা তিনটা জয়েন্ট ফোলা থাকে।’’
শরীরের যে অংশে ফোলা থাকে সেই অংশের তাপ অন্যান্য জায়গার চেযে একটু বেশি হয়। অনেকের মুভমেন্টের সময় মনে হয় জোড়াগুলো ছিঁড়ে আসছে। কেন হয় জয়েন্টের ব্যথা?
এই চিকিৎসক বলেন, ‘‘প্রত্যেকটা জয়েন্টের পেছনে কানেকটিভ টিস্যু থাকে। এখানে কার্টিলেজ থাকে, এই কার্টিলেজ যদি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে জয়েন্টে ব্যথা হয়। আর্থ্রাইটিসের প্রভাবেও জয়েন্টে ব্যথা হয়। অনেক সময় ভাইরাস আক্রান্ত হলে ব্যথা হতে পারে। এরপরেও একটি বড় সমস্যা হলো জয়েন্টে যদি ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।’’
আরো পড়ুন:
ডেঙ্গুর অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই, প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
যে কারণে শরীরের ৫-৭ অঙ্গে একসঙ্গে ব্যথা হয়
প্রতিরোধে করণীয়
জয়েন্ট ফুলে গেলে ক্রমান্বয়ে যদি গরম পানি আর ঠাণ্ডা পানির সেঁক দেওয়া যায় তাহলে জয়েন্টের ব্যথা কমতে পারে। যাদের জয়েন্টেরগুলো জমে যায়, তারা ব্যায়াম করতে পারেন। আঘাত পাওয়ার কারণে জয়েন্টে ব্যথা হলে ব্যথানাশক ওষুধ খেলে ব্যথা কমে আসতে পারে।
দীর্ঘদিন জয়েন্টের ব্যথায় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। বড় কোনো রোগের কারণে এই ব্যথা হলে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন
এছাড়াও পড়ুন:
এক চিলতে রোদ্দুরে...
নাটকের আকাশে উজ্জ্বল এক তারার নাম তানিয়া বৃষ্টি। ২০১৫ সালে অভিনয়ের জগতে পা রেখেছেন। একটানা পথচলার দশ বছর পেরিয়ে আজ তিনি এক পরিপক্ব শিল্পী। এই এক দশকে তাঁর অভিনয়ের পরিধি ছুঁয়েছে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র– নরম-কোমল প্রেমিকা, প্রতিবাদী নারী, প্রান্তিক জনপদের নারী, পরিবারের দায়িত্বশীল কন্যা কিংবা ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের গল্প বলা এক মানুষ। প্রতিটি ভূমিকায় তিনি নিজেকে ভেঙে গড়েছেন, প্রতিবার যেন নতুন এক তানিয়া বৃষ্টিকে খুঁজে পাওয়া যায়।
তানিয়া বৃষ্টির অভিনয়ে একটি অনাড়ম্বর সৌন্দর্য আছে, যা সহজে দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাঁর হাসি যেমন মিষ্টি, তেমনি চোখের ভাষায় খেলা করে এক অনুচ্চারিত বেদনা। অভিনয়ের ভেতরে যে আত্মনিবেদন, তা হয়তো খুব বেশি উচ্চকিত নয়, তবে গভীর। কখনও কখনও ক্যামেরার সামান্য এক দৃষ্টি বিনিময়েই বোঝা যায় দৃশ্যের ভেতরে তাঁর অনুরণন।
ঈদ মানেই উৎসব, আর সে উৎসবে তানিয়া বৃষ্টির নাটক যেন দর্শকের জন্য এক পরম প্রাপ্তি। গত ঈদেও তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। ‘তাসের ঘর’, ‘মানুষ’, ‘ভালোবাসা অন্তহীন’, ‘পাষাণী’, ‘মনে পড়ে তোমাকে’ ও ‘ক্যাফেতে ভালোবাসা’– এই নাটকগুলো এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রচার হয়েছে ইউটিউব ও টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে। প্রতিটি নাটকে তিনি ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে, ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছেন। একটি নারীর মনের প্রতিটি স্তর যেন খুলে ধরেছেন তিনি অভিনয়ের পরতে পরতে।
এই জনপ্রিয়তার পথে কেবল ফুল বিছানো ছিল না। কিছু কাজ হয়তো তাঁকেও তৃপ্ত করেনি, কিছু চিত্রনাট্যে হয়তো গভীরতা ছিল না, তবু তিনি বলছেন, এখনকার দিনে গল্প বাছাইয়ে তিনি অনেক বেশি সচেতন। তাঁর কথায়, ‘গল্পের প্রতি আগের চেয়ে বহুগুণ বেশি মনোযোগী আমি। এখন মনে হয়, নিজেকে বারবার ভাঙার মতো চরিত্রই আমাকে টানে। শুধু ক্যামেরায় মুখ দেখানোর জন্য কাজ করতে রাজি নই। এখন যেকোনো নাটকে কাজ করার আগে গল্পটা ভালো হওয়া জরুরি মনে করি। কারণ দর্শক গল্পটাই আগে খোঁজেন। এরপর চরিত্রে নিজের অভিনয় করার সুযোগটা কেমন আছে তাও ভেবে দেখি।’ এই আত্মঅনুসন্ধানী মনোভাবই তাঁকে করে তুলছে আরও পরিণত, আরও আবেগপ্রবণ শিল্পী।
শুধু কাজের মাধ্যমে নয়, তানিয়া বৃষ্টি প্রায়ই থাকেন আলোচনায় ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গেও। প্রেম, বিয়ে, সম্পর্ক সবকিছুতে থাকে ভক্তদের কৌতূহল। তবে তিনি নিজেই জানিয়েছেন, আপাতত ব্যক্তিগত জীবনের এসব পরিকল্পনা থেকে দূরে তিনি। বর্তমানে নিজের সব মনোযোগ অভিনয়ে, নিজেকে আরও শিল্পসম্মত করে গড়ে তোলায়।
বরাবরই নাটকের ছোটপর্দা থেকে সিনেমার বড়পর্দার প্রতি বেশি আগ্রহ ছিল তাঁর। ক্যারিয়ারের শুরুতে সুযোগ পেয়ে যান আকরাম খানের ‘ঘাসফুল’ ছবিতে। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রস্তাব পেলেও নিয়মিত হননি বড়পর্দায়। ছোটপর্দাকে ঘিরে যাঁর স্বপ্ন। এখন তিনি চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২০১২ সালে ‘ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল’ দ্বিতীয় রানারআপের মধ্য দিয়ে শোবিজে আসেন তানিয়া বৃষ্টি। এরপরই রচিত হয় শুধুই তাঁর এগিয়ে চলার গল্প।