ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা ঘেরাও করেছেন দলটির নেতাকর্মী। শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ৯টার দিকে তারা থানা ঘেরাও করেন। বিকেল ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, আন্দোলনকারীরা থানার চারপাশে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ১১টার দিকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকা থেকে চাঁদাবাজির একটি মামলায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চান্দগাঁও থানার সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সকাল থেকে চান্দগাঁও থানা চত্বরে অবস্থান নেন দলটির নেতাকর্মীরা।

চাঁন্দগাও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, “বিক্ষোভকারীদের দাবি, গ্রেপ্তার ব্যক্তি কোনো ধরনের চাঁদাবাজির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আমরা মামলার বাদীকে খবর দিয়েছি। বাদীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবি সংস্কারের দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের

স‌চিবালয় আ‌ন্দোলন
আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের দাবি, মিথ্যা মামলায় তাদের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন। এরপর সেখানে চাঁদাবাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হন চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। তারা হাবিবুর রহমানকে জড়িয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনেন।

ইসলামী যুব আন্দোলন চট্টগ্রাম নগরের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান জানান, “চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে গঠিত একটি কমিটিতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হাবিবুর রহমানের নাম জড়ানো হয়। সেটিকে কেন্দ্র করে মামলা করেন একজন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার কয়েকজনের ব্যাপারে গতকাল কথা বলতে গেলে হাবিবুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘জলবায়ু-অভিযোজিত কৃষির উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের প্রান্তিক কৃষকরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এক্ষেত্রে সরকারের সাথে বেসরকারি সংস্থাসমূহের কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে টেকসই জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। যত ভালো কৃষিপণ্য বা প্রযুক্তি হোক না কেন, সমন্বিত উপায়ে সেগুলোর ফলাফল কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি।

‘ব্র্যাক অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক এবং দীর্ঘমেয়াদী কৃষি-পরামর্শমূলক পরিসেবার জন্য ACASA পোর্টালের সুবিধা প্রদান’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব উল্লেখ করেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিশেষজ্ঞরা।

ব্র্যাক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ও আকাসা প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে কর্মশালাটি গত ১৮-১৯ জুন রাজেন্দ্রপুরের বিসিডিএমমে অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে কৃষির ওপর নির্ভরশীল জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশকে জলবায়ু পরিবর্তনের  প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কৃষকরা প্রতিনিয়ত ফসলের উৎপাদনশীলতা হ্রাস, মাটির গুণগত মান কমে যাওয়া এবং খাদ্য নিরাপত্তা সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন DAE, BARC, BARI, BRRI, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইত্যাদি এবং ব্র্যাক-এর মতো বেসরকারি সংস্থার মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে টেকসই জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক (কম্পিউটার ও জিআইএস) এবং ACASA প্রকল্পের পি-আই হাসান মো. হামিদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রোগ্রাম হেড আবু সাদাত মনিরুজ্জামান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)-এর এইআরসি বিভাগের সদস্য পরিচালক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন মোল্লা।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি, নগর উন্নয়ন কর্মসূচি ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. লিয়াকত আলী, ফিল্ড সার্ভিস উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকার অতিরিক্ত পরিচালক (সম্প্রসারণ ও সমন্বয়) ড. আব্দুল আজিজ এবং অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থকরী ফসল), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকার মো. মনিরুল ইসলাম।

ব্র্যাক অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তৌসিফ আহমেদ কোরেশী।

ব্র্যাক অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক একটি সমন্বিত কৃষিসেবা কেন্দ্র-যা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে থাকা কৃষকদের জলবায়ু সহনশীল ফসলের জাত, চাষপদ্ধতি, আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্য প্রদান এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষিতে টেকসই অভিযোজনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ২০২২ সাল থেকে ব্র্যাকের ১৯টি অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক কাজ করছে জলবায়ু হটস্পটগুলোতে। ব্র্যাক অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক ACASA পোর্টাল ও খামারি মোবাইল অ্যাপ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করে কৃষকদের সময়োপযোগী এবং নির্ভরযোগ্য কৃষি-সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) ২০২৩ সাল থেকে “Atlas of Climate Adaptation in South Asian Agriculture (ACASA)” প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য স্থানভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করা। এটি জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা এবং কৃষি খাতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী, ফসল ও পশুপালন খাতের ওপর প্রভাব বিশ্লেষণের মাধ্যমে অভিযোজন চাহিদা চিহ্নিত করতে সহায়তা করে।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ