সব সময়ই গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে কমবেশি ফসলটির চাষ হয়েছে। অন্য ফসলের পাশাপাশি দুই-তিন বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কৃষক। এতে চাষিদের নিজেদের চাহিদা মিটেছে, উদ্বৃত্ত ফসল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছেন। তবে দুই-তিন বছর ধরে তা আর অল্প কিছু মানুষের চাষাবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ক্রমে ফসলটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের দিকে মোড় নিয়েছে। ভরা মৌসুমে গ্রামটিতে এখন প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে লতি–কচুর।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর গ্রামের লতি–কচু এখন একটি সমৃদ্ধ ফসল। অনেকেরই বাড়তি আয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে ফসলটি। এই গ্রামের ‘লতি’ এখন শুধু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করছে না, দেশের বিভিন্ন শহরেও সরবরাহ করা হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান নতুন জাতের কিছু পেলেই চাষ করেন। এ বছর তিনি নতুন করে যুক্ত হয়েছেন লতি–কচু চাষে। তিনি এ বছর ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু-১ রোপণ করেছেন। অর্গানিক চাষাবাদের দিকেই তাঁর ঝোঁক। তিনি তাঁর কচুখেতে জৈব সার ব্যবহার করেছেন। রাসায়নিক সার ব্যবহার এড়িয়ে গেছেন। এতে তাঁর লতির উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনো আফসোস নেই।

হাবিবুর জানান, ভাদ্র মাসে চারা রোপণ করেছেন। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে লতি তোলা শুরু করেছেন। ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি ধরে লতি বিক্রি করছেন। এখন লতির মৌসুম শেষের পথে। কিছুদিন পর লতির দাম আরও বাড়বে। এখন সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি তুলতে পারছেন। কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভবিষ্যতে সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি লতি তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। তা ছাড়া লতি–কচুর চারা বিক্রি থেকেও তাঁর আয় হবে। এ পর্যন্ত তাঁর বিনিয়োগ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। তাঁর আশা, বালাইনাশক, শ্রমিক খরচসহ সব খরচ বাদ দিয়ে এই কচুর লতি বিক্রি করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ হবে।

গ্রামের আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, তিনি এ বছর ১ কিয়ার (৩০ শতাংশ=১ কিয়ার) জমিতে লতি–কচুর চাষ করেছেন। এবার আমন ধান কাটার পর আরও ১৫ শতাংশ জমিতে নতুন করে চারা লাগাবেন।

গ্রামের মিলন মিয়া ৪ কিয়ার, কাজিম মিয়া আড়াই কিয়ার, আফাই মিয়া ৪ কিয়ার জমিতে লতির চাষ করেছেন। তাঁদের মতো আরও অনেকে আছেন, যাঁরা লতি কচু চাষ করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

লতি–কচুর চাষি আমির হোসেন বলেন, ‘সিজনে (ভরা মৌসুমে) নিচে ১৫০ কিয়ার জমিতে লতার (লতি) চাষ অয় (হয়)। প্রতিদিন এক-দুই ট্রাক করে লতা (লতি) সিলেটে যায়। গ্রামে এখন লতা চাষে নতুন নতুন কৃষক বাড়ছে। এবার আরও নতুন খেত বাড়ব (চাষ হবে)।’

গিয়াসনগর গ্রামের ‘লতি’ এখন শুধু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করছে না, দেশের বিভিন্ন শহরেও সরবরাহ করা হচ্ছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন চ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারের গ্রামটি ক্রমে হয়ে উঠছে ‘লতির গ্রাম’

সব সময়ই গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে কমবেশি ফসলটির চাষ হয়েছে। অন্য ফসলের পাশাপাশি দুই-তিন বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কৃষক। এতে চাষিদের নিজেদের চাহিদা মিটেছে, উদ্বৃত্ত ফসল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছেন। তবে দুই-তিন বছর ধরে তা আর অল্প কিছু মানুষের চাষাবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ক্রমে ফসলটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের দিকে মোড় নিয়েছে। ভরা মৌসুমে গ্রামটিতে এখন প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে লতি–কচুর।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর গ্রামের লতি–কচু এখন একটি সমৃদ্ধ ফসল। অনেকেরই বাড়তি আয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে ফসলটি। এই গ্রামের ‘লতি’ এখন শুধু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করছে না, দেশের বিভিন্ন শহরেও সরবরাহ করা হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান নতুন জাতের কিছু পেলেই চাষ করেন। এ বছর তিনি নতুন করে যুক্ত হয়েছেন লতি–কচু চাষে। তিনি এ বছর ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু-১ রোপণ করেছেন। অর্গানিক চাষাবাদের দিকেই তাঁর ঝোঁক। তিনি তাঁর কচুখেতে জৈব সার ব্যবহার করেছেন। রাসায়নিক সার ব্যবহার এড়িয়ে গেছেন। এতে তাঁর লতির উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনো আফসোস নেই।

হাবিবুর জানান, ভাদ্র মাসে চারা রোপণ করেছেন। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে লতি তোলা শুরু করেছেন। ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি ধরে লতি বিক্রি করছেন। এখন লতির মৌসুম শেষের পথে। কিছুদিন পর লতির দাম আরও বাড়বে। এখন সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি তুলতে পারছেন। কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভবিষ্যতে সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি লতি তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। তা ছাড়া লতি–কচুর চারা বিক্রি থেকেও তাঁর আয় হবে। এ পর্যন্ত তাঁর বিনিয়োগ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। তাঁর আশা, বালাইনাশক, শ্রমিক খরচসহ সব খরচ বাদ দিয়ে এই কচুর লতি বিক্রি করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ হবে।

গ্রামের আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, তিনি এ বছর ১ কিয়ার (৩০ শতাংশ=১ কিয়ার) জমিতে লতি–কচুর চাষ করেছেন। এবার আমন ধান কাটার পর আরও ১৫ শতাংশ জমিতে নতুন করে চারা লাগাবেন।

গ্রামের মিলন মিয়া ৪ কিয়ার, কাজিম মিয়া আড়াই কিয়ার, আফাই মিয়া ৪ কিয়ার জমিতে লতির চাষ করেছেন। তাঁদের মতো আরও অনেকে আছেন, যাঁরা লতি কচু চাষ করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

লতি–কচুর চাষি আমির হোসেন বলেন, ‘সিজনে (ভরা মৌসুমে) নিচে ১৫০ কিয়ার জমিতে লতার (লতি) চাষ অয় (হয়)। প্রতিদিন এক-দুই ট্রাক করে লতা (লতি) সিলেটে যায়। গ্রামে এখন লতা চাষে নতুন নতুন কৃষক বাড়ছে। এবার আরও নতুন খেত বাড়ব (চাষ হবে)।’

গিয়াসনগর গ্রামের ‘লতি’ এখন শুধু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করছে না, দেশের বিভিন্ন শহরেও সরবরাহ করা হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ