মামদানির সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্প
Published: 20th, November 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামীকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছেন।
গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। মামদানি চলতি মাসের শুরুর দিকে মেয়র নির্বাচিত হন। মামদানি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম এই দুই রাজনীতিকের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে।
আমরা হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। নিউইয়র্কবাসীর কাছে আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা পূরণ করার জন্য আমার দল এ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য আমি যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত।জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়রট্রাম্প তাঁর পোস্টে লেখেন, নিউইয়র্ক শহরের কমিউনিস্ট মেয়র জোহরান মামদানি বৈঠক করতে চেয়েছেন। ২১ নভেম্বর, শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠকটি করার বিষয়ে তাঁরা একমত হয়েছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
নবনির্বাচিত মেয়রের মুখপাত্র ডোরা পেকেক এক বিবৃতিতে ট্রাম্প-মামদানির মধ্যকার অনুষ্ঠেয় বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে ডোরা পেকেক বলেন, প্রথা অনুযায়ী, নবনির্বাচিত মেয়র হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন। বৈঠকে জননিরাপত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নাগরিকদের সাশ্রয়ী জীবনযাপনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠক নিয়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে ঘোষণা আসার আগে মামদানি নিজেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এমএস নাউকে বলেন, তাঁর দল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের জন্য হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
আরও পড়ুনট্রাম্প–মামদানি কি সমানে সমান০৭ নভেম্বর ২০২৫সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, ‘আমরা হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। নিউইয়র্কবাসীর কাছে আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা পূরণ করার জন্য আমার দল এ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য আমি যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত। তবে শর্ত হলো, তা ৮৫ লাখ মানুষের কল্যাণে হতে হবে। যাঁরা এ শহরকে নিজেদের বাড়ি মনে করেন, আর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরে জীবন যাপন করতে সংগ্রাম করছেন।’
ট্রাম্প ও মামদানির মধ্যকার অনুষ্ঠেয় এ বৈঠক তাঁদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা তিক্ততার অবসান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত জুন মাসে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে মামদানির জয়ের পর থেকে তাঁরা পরস্পরের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন।
নবনির্বাচিত মেয়রের মুখপাত্র ডোরা পেকেক এক বিবৃতিতে ট্রাম্প-মামদানির মধ্যকার অনুষ্ঠেয় বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।মামদানিকে ‘ছোট্ট কমিউনিস্ট’ বলে আক্রমণ করেছিলেন ট্রাম্প। নিউইয়র্কবাসী যাতে মামদানিকে ভোট না দেন, সে জন্য তিনি তাঁদের উৎসাহিত করেছিলেন। মামদানি জিতলে নিউইয়র্ক শহরের জন্য ফেডারেল তহবিল কমানোর হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে নিজের বিজয় ভাষণে ট্রাম্পকে একহাত নিয়েছিলেন মামদানি। তিনি বলেছিলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, যেহেতু আমি জানি, আপনি দেখছেন, আপনার জন্য আমার চারটি শব্দ বলার আছে—আওয়াজ বাড়ান।’
আরও পড়ুনবিজয়ভাষণে ট্রাম্পকে মামদানি বললেন, ‘আওয়াজ বাড়ান’০৫ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুননিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র কে এই জোহরান মামদানি০৫ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক শহর র ম মদ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলেই গ্রেপ্তার হবে: মামদানি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক সফরে এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন শহরটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামদানি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মামদানি এ কথা বলেন। এ সময় তাঁকে মেয়র পদে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান মামদানি।
এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এবিসি৭-এ সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন মামদানি। এ সময় তিনি নিউইয়র্ক শহরকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এখানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আইসিসির জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকবে। ওই পরোয়ানায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা এবং যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি যে আমি বিশ্বাস করি, এটি আন্তর্জাতিক আইনের শহর। আন্তর্জাতিক আইনের শহর হওয়ার মানে সেই আইনকে রক্ষা করা। আর তার মানে হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখা। সেটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য হোক কিংবা ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য।’
মেয়র নির্বাচনে জয়ের আগে গত অক্টোবর মাসে ফক্স নিউজের দ্য স্টোরি অনুষ্ঠানে মার্থা ম্যাককালামের সঙ্গে আলাপচারিতায় মামদানি বলেছিলেন, আইনগত অনুমতি থাকলে তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করবেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এ ধরনের ‘নীতিকে সমুন্নত ও সংরক্ষণ করতে চায়’।
মামদানি বলেন, নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে তিনি কোনো নতুন আইনের আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নই। আমি এমন একজন, যে বিদ্যমান আইনের মধ্যেই থাকতে চায়। তাই আমি নিজে থেকে কোনো আইন বানাব না। বরং বিদ্যমান আইনের ভেতরে থেকে সব ধরনের আইনগত সম্ভাবনা খুঁজে দেখব।’ উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়।
এদিকে সিবিএসের খবরে বলা হয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের সময় ‘ট্রানজিশন’ দলের খরচের জন্য সমর্থকদের কাছে অনুদান চেয়েছেন মামদানি। গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি এ অনুদান চান। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তাঁর প্রচারণা দল খরচের জন্য ১০ লাখ ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। তবে তাদের আরও ৪০ লাখ ডলার প্রয়োজন।