শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে যুবলীগ নেতার দোকান
Published: 20th, June 2025 GMT
শত বছরের সরকারি পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করে খাসজমি করা হয়। সেই জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন প্রভাবশালী আ. হালিম। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে বন্দোবস্ত বাতিল করে প্রশাসন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই জমি ফের দখলে নিয়ে ২১টি দোকান নির্মাণ করেছেন হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু।
দখল-বাণিজ্যের এ চিত্র দেখা গেছে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে। দখলে জড়িত মাসুদ রানা নান্টু স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ক্ষমতার দাপটে তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না।
খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার অক্ষয় ভট্টাচার্য্য গ্রামবাসীর সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে ৫৩ শতাংশ জমির ওপর পুকুরটি খনন করেন। দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিনের গড়ে তোলা সৈয়দপুর ট্রাস্টের আওতায় আসে জমিটি। বর্তমানে জমিটি ট্রাস্টের নামে রেকর্ড আছে। ১৯৬৬ সালে প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের সহায়তায় জালিয়াতি করে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করেন আবদুল হালিম। এরপর ৯৯ বছরে জন্য বন্দোবস্ত নেন। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর প্রশাসনের তদন্তে জালিয়াতি ধরা পড়ে। এরপর তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শান্তি মনি চাকমা অবৈধ ওই দখলদারের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করলে ওই জমি দখলে নেন আবদুল হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু। এরপর পুকুরের জায়গা ভরাট করে চারপাশে ২১টি পাকা দোকান নির্মাণ করেন। দোকানগুলো মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছেন। ৩টি দোকানের পজেশন বিক্রি করেছেন। এভাবে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারি পুকুরটির রক্ষায় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কয়েকজন ভাড়াটিয়া বলেন, দোকান ভাড়া নেওয়ার সময় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন নান্টু। প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় তাঁকে। ৩টি ঘর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকায় পজেশনও বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অধীর কুমার ও আমিন আলী জানান, আগে এ পুকুরের পানি খাওয়া জন্য ব্যবহার করা হতো। এখনও অনেক মানুষ গোসল করেন। সরকারি পুকুর ভরাট করে দোকান করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না। জনস্বার্থে পুকুরটি দখলমুক্ত করা দরকার।
এ বিষয়ে কথা বলতে সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য মাসুদ রানা নান্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর দাবি, ১৯৬৬ সালে তাঁর বাবা আ.
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নাছিমুল হক জানান, সরকারি পুকুর জনগণের সম্পত্তি। দ্রুত পুকুরটি দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।
ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, পুকুরটি সৈয়দপুর ট্রাস্টের নামে রয়েছে। সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হবে। অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজের ভুলের খেসারত কি দিতে হবে ভারতকে
কথায় আছে ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’। তবে মোহাম্মদ সিরাজ ক্যাচ মিস না করেও করলেন বড় এক ভুল।
প্রসিধ কৃষ্ণার শর্ট লেংথের বলে পুল করেছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু টাইমিং ঠিকঠাক না হওয়ায় বল চলে যায় লং লেগে দাঁড়ানো সিরাজের হাতে। তিনি বলটা ভালোভাবেই মুঠোবন্দী করেন। কিন্তু এরপর শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেননি। তাঁর ডান পা স্পর্শ করে সীমানারেখা সঙ্গে।
ব্যস, ‘জীবন’ পাওয়ার পাশাপাশি ছক্কাও পেয়ে যান ব্রুক। ২১ বলে ১৯ রানে থাকতে বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটসম্যান এরপর টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে শুরু করেছেন। পরের ১৯ রান করেছেন মাত্র ৯ বলে। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন ‘অভিজ্ঞতার ভান্ডার’ জো রুট। তাতে ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে ইংল্যান্ডই কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।
৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ১৬৪ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে। ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে স্বাগতিকদের দরকার আরও ২১০ রান। ২-২ সমতায় সিরিজ শেষ করতে ভারতের চাই ৭ উইকেট।
কাল ১ উইকেটে ৫০ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। দিনের শেষ ভাগে সিরাজের বলে বোল্ড হন জ্যাক ক্রলি। আজ অধিনায়ক ওলি পোপকে নিয়ে দলকে ভালোই টানছিলেন আরেক ওপেনার বেন ডাকেট। তবে ফিফটি পেরোনোর পরপরই কৃষ্ণার বলে দ্বিতীয় স্লিপে লোকেশ রাহুলের হাতে ধরা পড়েন ডাকেট।
এরপর পোপও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৭ রানে থাকতে সিরাজের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। সিরাজ ব্রুকের ক্যাচটা ঠিকঠাক নিতে পারলে ভারতই এতক্ষণে চালকের আসনে থাকত। কিন্তু ব্রুক আর রুট মিলে ৬৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৮ রানের জুটি গড়ে ভারতকে চাপে রেখেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ২২৪ ও ৩৯৬
ইংল্যান্ড: ২৪৭ ও ৩৮ ওভারে ১৬৪/৩ (ডাকেট ৫৪, ব্রুক ৩৮*, পোপ ২৭, রুট ২৩*; সিরাজ ২/৪৪, কৃষ্ণা ১/৭৪)
* চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে।