গাজীপুরের শ্রীপুরে এক চিকিৎসক দম্পতিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল তাঁদের কাছ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আনসার টেপিরবাড়ি বাজার এলাকার পশ্চিমে চিকিৎসক মোর্শেদুল হক ও মৌসুমী আক্তার দম্পতির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দম্পতির একজন অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও অন্যজন স্ত্রীরোগের চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক মোর্শেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রাত তিনটার দিকে সাত থেকে আটজনের একটি ডাকাত দল মই বেয়ে তাঁদের দ্বিতল বাড়ির ওপরে ওঠে। তারা রড বা অন্য শক্ত কিছু দিয়ে দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। এরপর তাঁর মুখ, চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে। তাঁর স্ত্রীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চাইলে তিনি তা দিয়ে দেন। একই সময়ে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর মা–বাবাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতেরা।

মোর্শেদুল হক বলেন, প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ১১ থেকে ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ও কয়েকটি মুঠোফোন লুটে নেয়। ডাকাতদের সবার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর তাঁরা চিৎকার করলে পাশের বাড়ি থেকে আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ভুক্তভোগীদের থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির কমিটিতে আ.লীগ নেতাকর্মী, সমালোচনার ঝড়

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ১৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পদ দেওয়ার অভিযোগ আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

তিন মাসের জন্য গঠিত এই কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন আশিক পাঠান। বাকি ১৭ জন আছেন সদস্য পদে। গত ১৮ জুন এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এই সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সদ্য ঘোষিত এনসিপি’র গৌরীপুর উপজেলা কমিটির সদস্য হয়েছেন গিয়াস উদ্দিন। তিনি উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

আওয়ামী লীগ ছেড়ে কেন এনসিপিতে এলেন? এই প্রশ্নের জবাবে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এখন দেশে আর আওয়ামী লীগ নেই। তাদের রাজনীতি করে আর লাভ নেই। শেখ হাসিনা আর ফিরতে পারবে কিনা তার গ্যারান্টি নেই। তাই এখন নতুন দল এনসিপিতে আছি।’

অভিযোগ আছে, কমিটির অপর সদস্য সেলিম মিয়া ছিলেন ভাংনামারী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে এখন এনসিপির কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এছাড়া তার বাবা আব্দুস সাত্তার বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। তার ছোট ভাই শামীম আহমেদ আকাশ ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।

সেলিম মিয়ার ভাষ্য, তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। মামলা হামলা থেকে নিজে ও পরিবারকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগ ছেড়ে এনসিপিতে পদ নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলেই ফোন কল কেটে দেন।

এনসিপির আরেক সদস্য সুরুজ আলীও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল দাবি স্থানীদের।

এছাড়া ভাংনামারী ইউনিয়নের লক্ষীপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম লিটনের স্ত্রী দিনা আক্তার পেয়েছেন এনসিপির সদস্য পদ। এ বিষয়ে দিনা আক্তারের মন্তব্য জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

প্রধান সমন্বয়কারী মাহমুদুল হাসান সমকালকে বলেন, নতুন কমিটি হয়েছে। আমি সবাইকে ভালোভাবে চিনি না। জেলার নেতারা অনেককেই পদায়ন করেছেন। তবে আমরা এখন এগুলো যাচাই-বাছাই করবো। কারও বিরুদ্ধে আওয়ামী সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।

ময়মনসিংহ জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য ও গৌরীপুর উপজেলার বাসিন্দা তারিক হোসেনের ভাষ্য, যারা কমিটিতে এসেছেন তারা যদি জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের বিরোধীতা করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেও যদি আওয়ামী লীগ করে থাকে তাহলে তো আর দেশের নাগরিকিত্ব চলে যাবে না। তারা কখনোই চান না একজন নিরপরাধ ব্যাক্তি শাস্তি পাক। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো প্রোগ্রাম উপলক্ষে চাদাবাজি করে না। এখানে যারা রাজনীতি করে তারা সবাই নিজেদের পকেট থেকে টাকা খরচ করে দল চালায়।

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজিজুল হাকিম আজিজ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়েছি। এখন ফ্যাসিস্টদের পতন হলে যখন তাদের বিচারের সময় এসেছে তখন তারা এনসিপির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ