তেহরানে সরকারপন্থিদের ‘বিজয়’ উদযাপন, তবু অনেকের মনে শঙ্কা
Published: 24th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর ইরানের সরকারপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা একে ‘বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করছেন। সরকারপন্থি সমর্থকরাও রাস্তায় মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে পতাকা হাতে উল্লাস করছেন। এসময় তাদের ইরানের জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে সরকারকে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে পাওয়া ফুটেজে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার
ফুটেজে দেখা গেছে, তাদের গাড়ির স্পিকারে সরকারকে প্রশংসা করে উচ্চস্বরে গান বাজানো হচ্ছে। তবে শহরের অন্য প্রান্তে, অনেক বাসিন্দার মধ্যে দেখা গেছে উৎকণ্ঠা। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই যুদ্ধবিরতির পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে অন্য কোনো কৌশল।
একজন নাগরিক বিবিসিকে বলেন, ‘আমি মনে করি এই যুদ্ধবিরতি শুধুই আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে বিভ্রান্ত করার জন্য। এটা একটি ফাঁদ।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র কোনো সিদ্ধান্তই কারণ ছাড়া নেয় না। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে খামেনিকে তার গোপন আস্তানা থেকে বের করে আনা। অন্য কোনো কারণ নেই।’
তবে যুদ্ধবিরতির পর জটিলতা সত্ত্বেও ইরানের সরকারপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা একে ‘বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করছেন। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেছেন, এই ‘বিজয়’ প্রমাণ করেছে ইরান ‘যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের শিং ভেঙে দিয়েছে’ এবং পুরো অঞ্চলে ইরানের সক্ষমতা নতুনভাবে দেখিয়েছে।
দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার ও আইআরজিসির (ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী) সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফের শীর্ষ উপদেষ্টা মেহদি মোহাম্মাদি একে ‘বৃহৎ ও ইতিহাস গড়া বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক্স (টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, ‘একটি নতুন যুগ শুরু হয়েছে।’
এদিকে, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেউ উৎপাটন করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষমতা ও সক্ষমতা রয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায় পারমাণবিক কর্মসূচি অটল থাকবে এবং কোনোভাবেই থামানো যাবে না।’
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে ইরানের টেলিভিশনের খবরেও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা বলা হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয়ার আগে তেহরান ইসরায়েলে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চার গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র সাঁকোটি পানির নিচে
পা দিলেই দুলে ওঠে সাঁকো। কাঠ ও বাঁশের এই সাঁকোটির কোথাও হেলে পড়েছে, আবার কোথাও ভেঙেছে। এই সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রায়ই পা ফসকে হ্রদের পানিতে পড়ছেন অনেকে। এমন অবস্থা রাঙামাটির ভেদভেদী আনসার ক্যাম্প থেকে উলুছড়া গ্রামে যাওয়ার একমাত্র সাঁকোটির। এটি দিয়েই চারটি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন। সম্প্রতি পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সাঁকোটিও তলিয়ে গেছে। এ কারণে লোকজনের ভোগান্তি আরও কয়েক গুণ বেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে ও পৌরসভার কিছু অনুদানে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের দুই বছরের মধ্যেই এটি ভেঙে পড়ে। এর পর থেকে গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরাই প্রতিবছর সংস্কার করেন। এটি দিয়ে যাতায়াত করেন উলুছড়া, আলুটিলা, নতুনপাড়া ও কাটাছড়ি নিচপাড়া গ্রামের মানুষ। প্রতিবছর বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়লে এই সাঁকো দিয়ে পারাপারে বিপত্তি বাঁধে। এ বছরও একই অবস্থা। সাঁকোর কোনো কোনো অংশ প্রায় তিন থেকে চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আমাদের কেনাকাটা, চিকিৎসা, স্কুলে যাওয়া—সবকিছুই এই পথে গিয়ে করতে হয়। এখন সাঁকোটি তলিয়ে যাওয়ায় চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কোথায় গেলে এর সমাধান পাব, তা জানা নেই। আমরা সেতু নির্মাণে সরকারের সহযোগিতা চাই।রবিধন চাকমা, কার্বারি (গ্রামপ্রধান), উলুছড়ি গ্রামউলুছড়া গ্রামের বাসিন্দা বিমল চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের গ্রামে যাতায়াতের একটাই রাস্তা, যেতে হয় এই সাঁকো পার হয়ে। এখন সাঁকোটি পানির নিচে। প্রতিদিন স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ মানুষজন, রোগীরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছেন। অনেক সময় লোকজন সাঁকো থেকে পানিতে পড়ে যাচ্ছেন।’
কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সাঁকোটি তলিয়ে গেছে। এরপরও সেটি দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের