সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নীলিমা দাসের নামে থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, অ্যাপার্টমেন্টসহ একাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।

জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে মৃণাল কান্তি দাসের নামে রয়েছে—রাজধানীর ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ টাকা মূল্যমানের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি প্লট, ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি গাড়ি। এ ছাড়া, বিভিন্ন ব্যাংকে তার নামে থাকা ৮টি হিসাবে ৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে, নীলিমা দাসের নামে- মোহাম্মদপুর এলাকায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি, তার ওপর ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং ৩০টি ব্যাংক হিসাবে  ১০ লাখ ৬১ হাজার টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসামি মৃণাল কান্তি দাস সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। 

দুদকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, মামলার তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টায় ছিলেন। এ কারণে আদালতের কাছে এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়, যা আদালত মঞ্জুর করেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ অবর দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিক তুহিনের মোবাইল ফোন খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ 

সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ভিডিও ধারণ ও সত্য উন্মোচন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জড়িত আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে তার ব্যবহত মোবাইল ফোনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ তার মোবাইল উদ্ধার করতে পারেনি। 

ধারণা করা হচ্ছে সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা গেলে ঘটনার রহস্য আরও বেশি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ প্রমাণিত হবে। সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ বলছে, মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে ঘটনার মোড় ঘুরে যেতে পারে। এসকল সন্ত্রাসী, তাদের মদদদাতা ও হত্যার আসল রহস্য বের হয়ে আসতো। 

নিহত সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। 

তার সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক তুহিন দু’টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপানা নিয়ে ভিডিও ধারণ করতেন। স্পর্শকাতর ছাড়া মোটামুটি সব ভিডিও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতেন। 

হত্যাকাণ্ড সংঘটিত এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা এলাকাতেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন তুহিন। যার কারণে এ এলাকার মোটামুটি সব অনিয়ম ও অপরাধীরা তার পরিচিত ছিল। 

সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক হতে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এসময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্রাপে ফেলার চেষ্টা করে। এটি যখন বাদশা বুঝতে পারে, তখন তার থেকে ছুটতে চায় এবং কিল-ঘুষি মারে। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে একটি মুদী দোকানে বাদশাকে কোপানো শুরু করে। বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকে। 

ঘটনাটি সাংবাদিক তুহিন নিজের পেশাগত কারণেই ভিডিও করে। আসামিরা সাংবাদিক তুহিনকে ভিডিও ডিলেট করতে বলে কিন্তু তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে ওই আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনের সন্ত্রাসীরা বাদশা নামে লোকটার উপরে হামলা করে। ওই ঘটনার ২০-৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে সাংবাদিকের উপর হামলা করে। এই দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দিতেও দেখা গেছে। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খান বলেন, “নিহত সাংবাদিকের দু’টি মোবাইল ফোন ছিল কিন্তু এখনো তার খোঁজ আমরা পাইনি। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদেও পাওয়া যায়নি ফোন। আমরা তার নম্বর ট্রেকিং করে রেখেছি। ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশনও সনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/রেজাউল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ