যুদ্ধের উত্তেজনা থেকে মধ্যপ্রাচ্য গত রোববার থেকেই একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির দিকে এগোচ্ছে। আপাতত সংঘর্ষ থেমেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেটিকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বলেছেন, সেই ইসরায়েল-ইরান সংঘাত দৃশ্যত শেষ হয়েছে, অন্তত এখন পর্যন্ত।

এদিকে ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের নেতারা—সবাই দাবি করছেন, যুদ্ধবিরতি হয়েছে তাঁদের শর্তেই।

তবে আসল ঘটনা কী, ইসরায়েল কী অর্জন করল, ইরান কি নিজের কৌশলগত সম্পদ রক্ষা করতে পারল, আর এই যুদ্ধবিরতিই কি শান্তির পথে যাত্রা? উঠছে এমন নানা প্রশ্নও।

কীভাবে শুরু হলো সংঘর্ষ

গত শনিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়। ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে’, ট্রাম্প এমনটাই দাবি করেন।

জবাবে গত সোমবার ইরান মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমানঘাঁটি আল-উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এ পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, মধ্যপ্রাচ্য হয়তো দীর্ঘমেয়াদি এক যুদ্ধের মুখোমুখি।

কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন, ‘ইসরায়েল ও ইরান পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।’ তিনি ইরান–ইসরায়েল সংঘাতকে বলেন, ‘১২ দিনের যুদ্ধ.

..যা বহু বছর ধরে চলতে ও পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত।’

শেষমেশ ইসরায়েল সীমিত পরিসরে মধ্যপ্রাচ্যে তার শুরু করা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে সক্ষম হয়েছে। এর আগে ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালের যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে উপকরণ দিয়ে সহায়তা দিয়েছিল, কিন্তু সরাসরি অভিযান চালায়নি। এবার সেই ব্যবধানও ঘুচেছে। নেতানিয়াহু তাঁর দেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।

তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েল দাবি করে, ইরান থেকে ছোড়া দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আকাশসীমায় ঢুকেছে এবং সেগুলো প্রতিহত করা হয়েছে। পরে ইসরায়েল তেহরানের কাছে একটি রাডার স্টেশনে হামলা চালায়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই অসন্তুষ্ট যে ইসরায়েল আজ সকালে আবার হামলা করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুটি দেশ এত দিন ধরে এত কঠিন যুদ্ধ করেছে যে নিজেরাই জানে না, এখন কী...করছে।’

ইরান ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করে। পরে গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টায় আবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে আবার লেখেন, ইসরায়েল আর ইরানকে আক্রমণ করবে না। সব বিমান ঘুরে ঘরে ফিরে যাবে, আর আকাশে বন্ধুত্বসূচক ‘হাত নাড়বে’। কেউ আঘাত পাবে না। যুদ্ধবিরতি চলছে!’

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি বিধ্বস্ত ভবন। মধ্য ইসরায়েল, ১৫ জুন, ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

চায়ের দোকান থেকে নিউইয়র্ক, পুরস্কার ঘোষণার দিনেই মৃত্যু

কোনো তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা তাঁর প্রথম ছবি দিয়ে ভারতীয় সিনেমার মানচিত্রে আলোড়ন তুললেন; ছবিটি পেল জাতীয় পুরস্কার। আর পুরস্কার ঘোষণার একই দিনে সেই তরুণ চিরতরে চলে গেলেন। এই অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছিল অবতার কৃষ্ণ কৌলের জীবনে।
১৯৩৯ সালে কাশ্মীরের শ্রীনগরে জন্ম নেওয়া কৌলের শৈশবই ছিল বেদনার। বাবার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে একদিন তিনি ঘর ছেড়ে পালালেন। রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দিন কাটত, চায়ের দোকানে কিংবা ছোট হোটেলে কাজ করতেন। অভুক্ত থেকেও বই আর শব্দের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। এই অপূর্ণ শৈশবই হয়তো পরে তাঁকে সিনেমার ভেতর মানুষ আর সমাজকে ভিন্ন চোখে দেখার শক্তি দিয়েছিল।

নিউইয়র্কে নতুন জীবন
পরবর্তী সময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি পেয়ে পৌঁছে গেলেন নিউইয়র্কে। দিনের চাকরির ফাঁকে রাতগুলো কাটত সিনেমা ও সাহিত্য নিয়ে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস আর পরে ব্রিটিশ ইনফরমেশন সার্ভিসে কাজ করলেও তাঁর আসল পৃথিবী ছিল অন্যত্র। সহকর্মীরা প্রায়ই দেখতেন, হাতে উপন্যাস বা নোটবুক নিয়ে বসে আছেন কৌল। তাঁর চোখে তখন এক স্বপ্ন—চলচ্চিত্র নির্মাণ।

‘২৭ ডাউন’–এর শুটিং চলছে। ইনস্টাগ্রাম থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ