ইরানে ৭ শতাধিক ইসরায়েলি গুপ্তচর গ্রেপ্তার
Published: 25th, June 2025 GMT
ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী দেশটিতে ইসরায়েলের ‘গুপ্তচর নেটওয়ার্কে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭০০-এর বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ইতোমধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
ইরানের ফার্স সংবাদ সংস্থা ও রাষ্ট্র অধিভুক্ত নুরনিউজ জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি গোয়েন্দা অভিযানও চলছিল, যে অভিযানে ইরানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করা হয়েছিল। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বরাবরই ইরান সরকারের পূর্ববর্তী গণগ্রেপ্তারের সমালোচনা করেছে, কারণ এসব ক্ষেত্রে প্রায়ই যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাব দেখা যায়।
আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার তাদের বিরুদ্ধে এই সাজা কার্যকর হয়।
ইরানি বিচার ব্যবস্থার ক্রোড়পত্র মিযান বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত ওই ব্যক্তিরা ইরানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে গোপনে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চোরাচালানিতে যুক্ত ছিল। ওই কর্মকর্তার নাম বা অন্য কোনো বিস্তারিত তথ্য মিযান প্রকাশ করেনি।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষের আগে বহু বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে জড়িত ছিল ইরান। এ সময় মোসাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা এবং ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি স্বার্থ প্রতিষ্ঠায় জড়িত থাকার দায়ে অসংখ্য মানুষকে প্রাণদণ্ড দিয়েছেন ইরানি আদালত। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে দেশটির পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা থেকে শুরু করে পারমাণবিক কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার সন্দেহে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে ২৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাক সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজের সরকারি কৌঁসুলিরা এই ২৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড’ এবং ‘শত্রুর পক্ষে তথ্য সংগ্রহ ও প্রচার চালানোর’ মতো অভিযোগ এনেছেন। তবে স্বাধীন গণমাধ্যম বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এসব অভিযোগ যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে গ্রেপ্তারে সহায়ক তথ্য দিলে ৫ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে গ্রেপ্তারে সহায়ক তথ্য দিতে পারলে ৫ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পুরস্কারের পরিমাণ আগে ঘোষিত পুরস্কারের তুলনায় দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, মাদুরো বিশ্বের অন্যতম বড় মাদক পাচারকারী।
জানুয়ারিতে বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে মাদুরো আবার ক্ষমতায় ফেরেন। ওই নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ এই নির্বাচনের ফল মেনে নেয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই মাদুরোর সমালোচনা করে আসছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাদুরোসহ ভেনেজুয়েলার আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিল। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে মাদক সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদক পাচার।গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেছেন, আগে ঘোষণা করা ২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পুরস্কার এখন দ্বিগুণ করা হবে। তাঁর দাবি, মাদুরো সরাসরি মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল নতুন এ পুরস্কার ঘোষণাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বলেন, এটি ‘রাজনৈতিক প্রচারণা’ ছাড়া আর কিছু নয়।
গিলের অভিযোগ, যৌন নিপীড়নকারী জেফ্রি এপস্টেইনের মামলা সামাল দেওয়া নিয়ে বন্ডি যে ধরনের সমালোচনার মধ্যে আছেন, তা থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য তিনি এমনটা করেছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাদুরোসহ ভেনেজুয়েলার আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিল। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে মাদক সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক পাচার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওতে পাম বন্ডি অভিযোগ করেন, মাদুরো ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ত্রেন দে আরাগুয়া এবং মেক্সিকোভিত্তিক শক্তিশালী অপরাধী চক্র সিনালোয়া কার্টেলের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। ত্রেন দে আরাগুয়াকে ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দাবি করেছিল, মাদুরো কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক-এর সঙ্গে মিলে কাজ করেছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, কোকেনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা এবং বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকিয়ে দেওয়া।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওতে পাম বন্ডি অভিযোগ করেন, মাদুরো ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ত্রেন দে আরাগুয়া এবং মেক্সিকোভিত্তিক শক্তিশালী অপরাধী চক্র সিনালোয়া কার্টেলের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। ত্রেন দে আরাগুয়াকে ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বন্ডি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিইএ মাদুরো ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা ৩০ টন কোকেন জব্দ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৭ টন কোকেনের সঙ্গে সরাসরি মাদুরোর সম্পৃক্ততা আছে।
এর আগে মাদুরো সরাসরি মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে মাদুরো নতুন করে ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।