প্রলোভন দেখিয়ে অসচ্ছল পরিবারের চার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
Published: 25th, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুত হওয়ার পরও তিনি প্রলোভন দেখিয়ে তিন ছাত্রীকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
আজ বুধবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের ওই ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্ক চার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান বলেন, অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের তিনি টার্গেট করতেন। ভুক্তভোগী চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন নবম ও একজন দশম শ্রেণিতে পড়ে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠালে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। উদ্ধার করা তিন শিক্ষার্থী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষক একসময় ইতালিতে ছিলেন। দুই বছর আগে দেশে ফিরে নারায়ণগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ওই বিদ্যালয়ের বাইরে একটি বাড়িতে শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতেন। স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গত বছরের জুনে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগে নারায়ণগঞ্জে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান বলেন, ৬ জুন ওই শিক্ষক দুই শিক্ষার্থীকে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাড়িতে নিয়ে টিনশেড ভবনের দুটি আলাদা কক্ষে রাখেন। তাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেবেন এবং পড়ালেখার খরচ বহন করবেন, এমন প্রলোভন দেখানো হয়। পরে তাদের ধর্ষণ করেন। হাসিনুজ্জামান বলেন, ২৩ জুন তিনি আরেক শিক্ষার্থীকে প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ওই শিক্ষার্থী কৌশলে পালিয়ে এসে পরিবারকে জানায়। এরপর ওই শিক্ষার্থীর পরিবার বিষয়টি পুলিশকে জানালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অন্য দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান আরও বলেন, শিক্ষকের যোগ্যতা না থাকার পরও তিনি আর্টের শিক্ষক হিসেবে স্কুলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন তিনি। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, আর্থিক অসচ্ছলতার সুযোগ নিয়ে ওই শিক্ষক মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করেন।
নারায়ণগঞ্জের ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ওই ব্যক্তি একটি আর্ট সংগঠন থেকে এখানে এসেছিলেন। কেলেঙ্কারির কারণে তাঁকে স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। স্কুলের তিন শিক্ষার্থীকে তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করতে পুলিশকে সহায়তা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম হ ম মদপ র ন র য়ণগঞ জ চ কর চ য ত ওই শ ক ষ পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আমীর হোসেন (৫০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক হুমায়রা তাসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আমীর হোসেন জামালপুর জেলার ইসলামপুরের মহলগিরী এলাকার শাহ জামালের ছেলে। রায় ঘোষণার সময়ে তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, রূপগঞ্জের পশ্চিমগাঁও এলাকার মো. আবু তালেবের মেয়ে বিলকিছ বেগমের সঙ্গে আমীর হোসেনের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আমীর হোসেন বিলকিছ বেগমকে তাদের বাড়ির পাশে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় বিলকিছের বাবা আবু তালেব রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত এই রায় দেন।