এনবিআরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা
Published: 28th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কলম বিরতি, ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’র মতো কর্মসূচি প্রত্যাহার করে পূর্বশর্ত ছাড়া অনতিবিলম্বে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। একই সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ ন্যায়সঙ্গত সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান অচলাবস্থা পরিস্থিতি এবং রপ্তানিমুখী শিল্পসহ জাতীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
আরো পড়ুন:
চুক্তিভিত্তিক আমদানিতে আর্থিক দায়মুক্তি পেল ব্যাংক
পণ্য আমদানি করতে বিদেশে পাঠানো যাবে ১ লাখ ডলার
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গামেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হাসান খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি আবুল কাশেম খান, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ, বিটিএমএ সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট কামরান তানভীর রহমান, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) প্রেসিডেন্ট মঈনুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের সিমিন রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনো মতেই কাম্য নয়। এতে কোনো প্রকার সফলতা নিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি না। তাই, দেশ ও ব্যবসার স্বার্থে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। আন্দোলনকারীসহ সব পক্ষের আলোচনায় বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।’
কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘চলমান স্থানীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা পরিস্থিতিতে চাপে থাকা ব্যবসায়ীরা নতুন করে এনবিআরের অচলাবস্থার কারণে আরো সমস্যায় পড়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসা উচিত।’ একইসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সব অফিসার যে অসৎ তা-ও নয়, তাদেরও ভবিষ্যৎ আছে, সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে সরকারকে।’
এই আন্দোলনের কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে-এমন উদ্বেগের কথা জানিয়ে তারা বলেন, ‘এই অবস্থায় ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কালক্ষেপণ না করে আজকের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (বিডা) যৌথভাবে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা জরুরি। তাদের ভবিষ্যৎ ন্যায়সঙ্গত সুরক্ষা ও দেশের অর্থনীতি যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়; সেই পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে।’
এ সময় তারা আন্দোলনকারীদের দেশের অর্থনীতির স্বার্থে ‘কলম বিরতি’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কোনো শর্ত ছাড়া কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “যেকোনো দেশের সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের ইন্টারেকশন মিথস্ক্রিয়া অতীব জরুরি। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এই যোগাযোগ বা সংলাপ অনেকটা স্তিমিত।”
তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের অপসারণের পর হয়ত অন্য কোনো সদস্যের অপসারণের দাবিও উঠবে। তাতে সমস্যা বাড়তে থাকবে।”
শাটডাউনের কারণে রপ্তানির ক্ষতির বিষয়টি উল্লেখ করে এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, “স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার আমাদের তথা বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করবে না। যুদ্ধ ছাড়া কোনো দেশের কাস্টমস বন্ধ থাকে; এটা আমাদের জানা নেই।”
তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সংস্কার চায়। তবে এনবিআরে অনেক সৎ অফিসার আছেন। বর্তমান সংস্কারের ফলে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটি বলার অধিকার তাদের আছে। সে বিষয়টিও সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে।”
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “এনবিআরের কর্মকর্তারা এতদিন ব্যবসায়ীদের জ্বালিয়েছে (হয়রানি করা)। এখন সরকারকে জ্বালাচ্ছে। দেশের ব্যবসা ও দেশের স্বার্থে সমস্যার সমাধান জরুরি।”
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর ব যবস য় র কর মকর ত ন ব যবস ব যবস য সরক র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
শহরের যানজট সমস্যা নিরসনে ডিসি’র সাথে চেম্বার নেতৃবৃন্দের সভা
নারায়ণগঞ্জ শহরের সাধারণ জনগণ, ব্যাবসায়ীসহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ও গ্রীন এন্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ রক্ষায় জেলা প্রশাসকের সাথে চেম্বার নেতৃবৃন্দের গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগষ্ট) বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ সভ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও মডেল গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মাসুদুজ্জামান মহোদয়, ব্যাবসায়ীসহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও বিকেএমইএ এর সাথে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
এসময় নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সাবেক সভাপতি জনাব মাসুদুজ্জামানসহ নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের বর্তমান সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া (দিপু), সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবু জাফর, পরিচালক গোলাম সারোয়ার সাঈদ, এমরানুল হক মুন্না, মজিবুর রহমান, বিকাশ চন্দ্র সাহা, আহ্মেদুর রহমান তনু, বিকেএমইএ এর সহ-সভাপতি-মোরশেদ সারোয়ার সোহেল (অর্থ), পরিচালক খন্দকার সাইফুল ইসলামসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত জাতীয় ও স্থানীয় সকল ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মহোদয় সাথে যানজট নিরসন বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মহোদয় এই সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত লোকবলের সহায়তার জন্য নারায়ণগঞ্জ চেম্বার নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করেন।