‘শাটডাউনে’ অচল সোনামসজিদ স্থলবন্দর ও রহনপুরের শুল্ক স্টেশন
Published: 28th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আজ শনিবার সকাল থেকে চলছে শাটডাউন কর্মসূচি। এর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর এবং রহনপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে করে জিরো পয়েন্টে আটকা পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ জিরো পয়েন্টে অবস্থিত কাষ্টমস ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান করছেন সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ভবনের সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের কর্মসূচি সম্বলিত শাটডাউনের ব্যানার।
আজ দুপুরে জিরো পয়েন্টে মের্সাস বাবুল এন্টার প্রাইজের ও অপর এক রপ্তানিকারকের প্লাস্টিক সামগ্রীর ১৩টি ট্রাক ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ভারতীয় ভূখণ্ডে অন্তত আড়াই শ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। বন্ধ রয়েছে জিরো পয়েন্ট ঘেঁষা ভারতীয় করিডরের প্রধান ফটক।
বাবুল হোসেন জানান, এনবিআরের এ কর্মসূচির কারণে রপ্তানির জন্য সোনামসজিদ জিরো পয়েন্টে শুল্কায়ন না হওয়ায় তার ৬টি প্লাস্টিক সামগ্রী বোঝাই পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে। এতে করে তাকে লোকসান গুনতে হবে।
তিনি আরও জানান, লোকসান মাথায় নিয়েই আগামীকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে ট্রাক ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মঈনুল ইসলাম সমকালকে জানান, এনবিআর ঘোষিত শাটডাউনের কারনে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বন্দরের ভেতর উভয় দেশের ট্রাক থেকে পণ্য খালাস অব্যাহত রয়েছে।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা এস আই জামিরুল ইসলাম জানান, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও যাত্রী পারাপার চালু রয়েছে।
অন্যদিকে রহনপুর শুল্ক স্টেশনেও সব ধরনের আমদানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানান রহনপুর স্টেশন ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মামুন সেখানেও কাস্টমস কর্মরতরা তাদের কার্যালয়ে ব্যানার টাঙিয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোনামসজিদ কাস্টমসে কর্মরত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তাদের রহনপুর ও সোনামসজিদে ধর্মঘট চলছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত: সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আজ শনিবার থেকে ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি সারা দেশের শুল্ক–কর কার্যালয়ে শুরু হয়েছে লাগাতার ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর স ন মসজ দ কর মকর ত বন ধ থ ক রহনপ র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়বে না: শেখ বশিরউদ্দীন
ভারত আরও চারটি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, এমন কোনো বিষয়ে ছাড় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে দর–কষাকষি চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ শতাংশের ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা থাকলেও এতটা অস্থিতিশীল নয় যে ব্যবসা–বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। তাই রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে তাতে সমস্যা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের নতুন বিধিনিষেধের আওতায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা এখন বাংলাদেশ থেকে চার ধরনের পাটের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে পারবেন না। শুধু দেশটির মুম্বাইয়ের নভসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ আছে। এমন বিধিনিষেধ দিয়ে গতকাল সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের কার্যালয় (ডিজিএফটি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় অশুল্ক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি। তার আগে ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে দেশটি।
এদিকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ভারত বাতিল করার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছে। এর আগে বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ ছিল।