করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে তিন মাসের বিশেষ সচেতনতামূলক ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এর মধ্যেও যদি এসব রোগের প্রকোপ না কমে, তাহলে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

আজ শনিবার ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ‘বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন এই কার্যক্রমের কথা জানান। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মেয়র। জুনে চট্টগ্রামে ৯৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, চমেক হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। তবে সবাই সুস্থ আছেন এবং গুরুতর কোনো রোগী নেই। সচেতনতার পাশাপাশি কীটনাশক প্রয়োগের মাত্রাও জোরদার করা হবে।

মশা নিধনে ওষুধ কার্যকর না হওয়ার বিষয়ে কর্মসূচিতে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, একই ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে প্রতিরোধ তৈরি হয়। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণাভিত্তিক নতুন মশা নিধন সমাধান বায়োলজিকাল লার্ভিসাইড ‘বিটিআই’ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছেন। এতে ফল ভালো পেয়েছেন।

মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্তমানে তাঁদের বড় চ্যালেঞ্জ একসঙ্গে তিনটি ভাইরাল রোগ মোকাবিলা করা। এগুলো হচ্ছে কোভিডের সংক্রমণ, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। এর মধ্যে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মৌসুমের নির্দিষ্ট সময়ে হলেও সঠিক প্রস্তুতি ও গণসচেতনতা ছাড়া ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়মিত মশা মারার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের কর্মীদের তদারকি বাড়ানো হয়েছে। তাঁরা নগরবাসীর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছেন। তবে এ তিনটি রোগের প্রকোপ না কমা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

মশা নিধনে বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো.

শরফুল ইসলাম, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, ড্যাব চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, চিকিৎসক সারোয়ার আলম প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন পর চ

এছাড়াও পড়ুন:

টিসিবির চালসহ আটক নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

নেত্রকোনার মদনে টিসিবির চাল পাচারকালে যুবদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে টিসিবির ২৫ বস্তা চালসহ তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে থানায় নেওয়ার পথে যুবদল নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত শুক্রবার রাতে নায়েকপুর ইউনিয়নের কাইটাইল বাজারসংলগ্ন ওয়াহেদ ইটভাটার কাছে একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত হ্যান্ডট্রলি ভর্তি ২৫ বস্তা টিসিবির চালসহ তাদের আটক করেন এলাকাবাসী।

আটক তিনজন হলেন– টিসিবির ডিলার শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন, একজন স্কুলছাত্র ও হ্যান্ডট্রলি চালক আলম মিয়া। তারা চানগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। গত ডিসেম্বরে তাঁকে অসদাচরণের কারণে যুবদলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মদন থানার ওসি ও ঘটনাস্থলে থাকা এসআই ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। দায়িত্বে থাকা এসআই সাইদুল ইসালম বলেন, ‘আটকদের নিয়ে যাওয়ার পথে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নামে একজন পালিয়ে যায়।’ আর ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, সেনাবাহিনী আটকদের হস্তান্তরের আগেই কৌশলে পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি।

জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবির ২৫ বস্তা চাল একটি হ্যান্ডট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই তিনজন। পথে কাইটাইল বাজারের কাছে একটি ইটভাটার পাশে এলাকাবাসী চাল ভর্তি হ্যান্ডট্রলিটি আটক করেন। খবর পেয়ে মদন অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা গিয়ে হ্যান্ডট্রলিসহ চালগুলো জব্দ করেন। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনা সদস্যরা।

অভিযোগ রয়েছে, থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে কৌশলে যুবদল নেতা শামছুল হক চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাকি দু’জনকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরে এক কিশোরকে তাঁর মায়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ সে স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষার্থী, তাঁর পরীক্ষা চলমান।

আটকদের বিরুদ্ধে মদন থানায় শনিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, তাঁকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বলেছে মামলায় স্বাক্ষর দিতে। তাই তিনি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছেন। তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ওই আসামিদের চেনেন না।

মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তবে চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আগেই সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান তিনি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হ্যান্ডট্রলি চালক আলম মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ