কদম রসূল সেতুর নকশা পুন:সংস্কারের দাবিতে শহরে মানববন্ধন
Published: 28th, June 2025 GMT
কদম রসূল সেতুর নকশা পুন:সংস্কার করনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কালিরবাজার ব্যবসায়ী মহল ও এলাকাবাসী। শনিবার (২৮ জুন) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ব্যবসায়ী মহল এবং এলাকাবাসী তাদের বক্তব্যে বলেন, সিরাজউদ্দৌলা রোড নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম রোড। ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সকল যাএীবাহী বাস বন্ধন, উৎসব, বন্ধুসহ সকল প্রকার ভারী যানবাহন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ পন্যবাহী ট্রাক এ রোড দিয়ে শহরের একমাত্র বাস টার্মিনাল এবং বানিজ্যিক কেন্দ্র টানবাজের প্রবেশ করে।
এই সিরাজউদ্দৌলা রোডের উপর মেডিস্টার হাসপাতালের একটা শাখা অবস্থিত পাশাপাশি চার থেকে পাচটা বহুতল ভবনের নিচে ঔষধের মার্কেট এবং বৃহত্তর কালিরবাজার পাইকারী মার্কেট, ব্যাংক, মসজিদ, কালি মন্দির, মাজার, ফ্রেন্ডস মার্কেট, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, পোস্ট অফিস, নারায়ণগঞ্জ কলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থান থাকার কারনে সবসময় মানুষ সাধারণের সমাগম বেশি থাকে এবং যানযট লেগেই থাকে।
যে কারনে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং মানুষ সমাগম পূর্ণ সড়কে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি এমনকি রাতেও এ সড়কে চলাচলকারী জনগনকে সম্মুখীন হতে চরম ভোগান্তির।
এমন একটা ব্যস্ত সড়কে যদি নতুন করে কদম রসূল সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ মুখ স্থাপন করা হয় তাহলে নদীর পূর্ব অংশের মানুষ যেমন সেতুর উপর থেকে নামতে দীর্ঘ যানজট এবং ভোগান্তির শিকার হবেন তথাপি অত্র এলাকায় বসবাসকারী জনগণও চরম দুর্ভোগে পতিত হবেন।
আমারা কদম রসূল সেতু নির্মানের বিপক্ষে নই কিন্তু যেসকল সুবিধা বিবেচনা করে এ সেতু নির্মান করা হচ্ছে, এরকম ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে সেতুর মুখ নামানো হলে সেতুর উভয় প্রান্তের মানুষের ভোগান্তি এবং দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়ে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং শহরের ট্রাফিক সিস্টেম ভেঙে পরবে।
তাই যথাযথ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের আকুল আবেদন, আপনারা বর্তমান বাস্তব অবস্থার উপর বিবেচনা করে কদম রসূল সেতুর পশ্চিম অংশের নামার সংযোগ মুখ এমন ব্যস্ত রাস্তায় না দিয়ে শহরের প্রশস্ত কোন সড়কে সংযোগ স্থাপন করলে নদীর উভয় প্রান্তের জনগণ যানজটের মতো নতুন ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
এতে সভাপতিত্ব করেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হাজী মোহাম্মদ নাজির খান, উপস্থিত বক্তব্য রাখেন মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ব যবস য় শহর র উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগে সরকার জানাল, রেলের জমি থেকে মণ্ডপ উচ্ছেদ
রাজধানীর খিলক্ষেতে দুর্গামন্দির গুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সরকার জানিয়েছে, রেলের জমিতে নির্মিত অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ আয়োজকরা সরিয়ে না নেওয়ায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। মণ্ডপের প্রতিমা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রেলের পাঁচ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।
তবে সরকারের এ বক্তব্যকে গ্রহণ না করে শুক্রবার শ্রী শ্রী সার্বজনীন মন্দির ভাঙার অভিযোগে প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণী জোট। মহাজোট নেতারা দাবি করেন, ভাওয়ালের রাজা রাজেন্দ্র কুমার চৌধুরীর জমিতে রেললাইন নির্মাণ হওয়ায় মন্দির নির্মাণের অধিকার রয়েছে হিন্দুদের।
ভারতও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে উল্টো অবৈধ জমি ব্যবহারের যুক্তিতে ভাঙার অনুমতি দিয়েছে। আমরা অত্যন্ত হতাশ।
যা ঘটেছে
গত বছরের অক্টোবরে খিলক্ষেত রেল গেইট এলাকায় রেলের জমিতে পূজা মণ্ডপ স্থাপন করে স্থানীয়রা। সম্প্রতি জায়গাটি টিন দিয়ে বেষ্টনী দিয়ে মন্দিরের সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এতে লেখা হয়েছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক অর্পনা রায় দাস মন্দিরের প্রধান উপদেষ্টা। অর্পনা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে।
সাইনবোর্ড লাগানোর পর স্থানীয় শ’খানেক মুসলমান গত মঙ্গলবার রাতে মন্দির স্থাপন না করার দাবিতে বিক্ষোভ করে। টিনের বেষ্টনী অপসারণে উপস্থিত পুলিশকে চাপ দেয়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার পর গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ে খিলক্ষেত রেল গেইট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মন্দিরের সাইনবোর্ড লাগানো টিনে বেষ্টনী বুলডোজার দিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে মাথাবিহীন একটি প্রতিমা পড়ে রয়েছে।
সরকারের জবাব
এতে হিন্দু ধর্মের অবমাননা হয়েছে অভিযোগে সমালোচনা হয় সামাজিক মাধ্যমে। আজ রেল উপদেষ্টার বরাতে প্রধান উপদেষ্টার রেল কর্তৃপক্ষের বরাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। গত বছর দুর্গাপূজার সময় কিছু ব্যক্তি অনুমতি ছাড়াই খিলক্ষেতে রেলের জমিতে একটি পূজা মণ্ডপ তৈরি করে। পূজা শেষে মণ্ডপ সরিয়ে নেওয়ার শর্তে অনুমতি দেয় রেল। পূজার আয়োজকরা মণ্ডপ সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পূজা শেষে বারবার বলার পরও তারা মণ্ডপটি সরিয়ে নেয়নি। উল্টো স্থায়ী মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। এ প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকতে বলা হলেও পূজার আয়োজকরা কর্ণপাত করেননি। এ পরিস্থিতিতে জনসাধারণের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করতে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বৃহস্পতিবার খিলক্ষেত এলাকায় রেলের জমি থেকে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলা হয়।
উপদেষ্টা জানান, প্রায় শতাধিক দোকানপাট, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, কাঁচাবাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। অস্থায়ী মন্দিরের প্রতিমা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভ প্রতিবাদ
গতকাল প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী আমলে একের পর এক হিন্দু নির্যাতন হয়েছে সরকারি মদতে। কিন্তু সরকারের সরাসরি অংশগ্রহণ দেখা যায়নি। এবার দেখেছি পুলিশ নিজে মন্দিরের টিনের বেড়া খুলেছে। সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে মন্দির ভেঙেছে, বুলডোজার দিয়ে প্রতিমা গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
গোবিন্দ প্রামাণিক প্রশ্ন তুলে বলেন, রেলের জমিতে শত শত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সেগুলো না সরিয়ে হিন্দু মন্দির ধ্বংস কেন? এর মানে সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ও ওপর মহলে মৌলবাদের আখড়া তৈরি হয়েছে। ভাওয়ালের রাজার জমিতে রেললাইন হয়েছে। তাই সেখানে মন্দির অবৈধ নয়। হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায়সহ জ্যেষ্ঠ নেতারা ছিলেন মানববন্ধনে।
আজ শাহবাগে সনাতনী জোটের মানববন্ধন থেকে বলা হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান না হলে খিলক্ষেত অভিমুখে লংমার্চ করা হবে। কর্মসূচিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের পক্ষে প্রদীপ কান্তি দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।