সুতা বা চুল পেঁচিয়ে আঁচিল ঝরালে কী হয় জানেন
Published: 28th, June 2025 GMT
আঁচিল বা ত্বকের কোনো বাড়তি অংশের জন্য অস্বস্তিতে পড়েন অনেকেই। এমন সমস্যা দেখা দিলে সুতা বা চুল পেঁচিয়ে বেঁধে তা ঝরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন কেউ কেউ। এমনকি অন্যকেও এ পদ্ধতি অবলম্বন করার পরামর্শ দেন। আদতে কি এ পদ্ধতি কার্যকর এবং নিরাপদ?
ত্বকে এমন অনেক সমস্যাই হতে পারে, যেখানে ত্বকের চেয়ে একটু উঁচু বাড়তি অংশ দেখা দেয়। কারও হয় আঁচিল, কারও আবার দেখা দেয় স্কিন ট্যাগ। এসব সমস্যার মধ্যে কোনো কোনোটির গোড়ার দিকটা একটু সরু হয়ে থাকে। এমন ক্ষেত্রেই সাধারণত একটি সুতা বা চুল বেঁধে তা ঝরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হয়। এ পদ্ধতির কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা.
সৈয়দ আফজালুল করিম–এর কাছে। বিষয়টির বৈজ্ঞানিক দিক সহজভাবে ব্যাখ্যা করলেন এই চিকিৎসক।
ত্বকের উঁচু অংশ বা কোনো বাড়তি ঝুলন্ত অংশের গোড়ায় যখন বেশ চাপ দিয়ে একটি সুতা বেঁধে রাখা হয়, তখন সেই অংশে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। এভাবে একসময় ত্বকের ওই অংশের কোষগুলো অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে যায়। গোড়ার দিকের এই কোষগুলো শুকিয়ে গেলে তখন ওই বাড়তি অংশের পুরোটাই ত্বক থেকে খসে পড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
তবে নেই নিশ্চয়তাএ পদ্ধতিতে ত্বকের বাড়তি অংশ যে ঝরে পড়বেই, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। স্কিন ট্যাগ ত্বকেরই সাধারণ কোষ দিয়ে তৈরি হয় বলে কেবল সেটিই ঝরে যেতে পারে এ পদ্ধতিতে। আঁচিল হলো ভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্টি হওয়া একটি ক্ষত। সুতা বেঁধে চাপ দিয়ে এই ক্ষত দূর করা সম্ভব নয়।
ঝুঁকিও আছেসহজ ও ঘরোয়াপদ্ধতি হিসেবে এ সুতা বাঁধার প্রক্রিয়াটি বেশ জনপ্রিয়। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে; কিন্তু এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে গেলে রক্তপাত হতে পারে। তা ছাড়া ত্বকে অবাঞ্ছিত ক্ষত সৃষ্টির ঝুঁকিও থাকে। সুতার মাধ্যমে জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে।
তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিনএকজন ব্যক্তির ত্বকে থাকা বাড়তি অংশটি আঁচিল নাকি স্কিন ট্যাগ, তা নিশ্চিত করতে পারবেন একজন চিকিৎসক। সমস্যাটি আদতে কী, তা না জেনে কিছু করতে যাওয়াটা মারাত্মক ভুল। কারণ, এটি যদি আঁচিল হয়ে থাকে, তাহলে সঠিক চিকিৎসা না হওয়া পর্যন্ত ত্বকের অন্য জায়গাতেও ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। এমনকি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস। অথচ লেজার বা ক্রায়োসার্জারির মতো উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় এসব সমস্যার সমাধান করা যায় খুব সহজে। আঁচিলের চিকিৎসায় কখনো কখনো কিছু ওষুধ লাগাতে দেওয়া হয় ত্বকে। মুখে খাওয়ার ওষুধও দেওয়া হয় কাউকে কাউকে। আর স্কিন ট্যাগের চিকিৎসা না করালেও কোনো ক্ষতি নেই।
আরও পড়ুনআঁচিল নিয়ে চিন্তিত?০৭ মে ২০১৬উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।
আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স