টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাস গড়লেন কেশব মহারাজ
Published: 30th, June 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ক্রিকেট মানেই পেসারদের রাজত্ব। সেই দেশে একজন স্পিনার হয়ে নিজের আলাদা পরিচয় গড়া সহজ কাজ নয়। তবু দীর্ঘ সময়ের অধ্যবসায়ে সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখালেন কেশব মহারাজ। টেস্ট ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম স্পিনার হিসেবে ২০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টেস্ট ম্যাচেই ইতিহাসে নাম লেখান তিনি। রোববার প্রথম ইনিংসে ক্রেইগ আরভিনকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে স্পর্শ করেন ২০০তম উইকেট। এরপর শন উইলিয়ামস ও তিনাকা চিভাঙ্গাকে ফিরিয়ে দিন শেষ পর্যন্ত তার উইকেটসংখ্যা দাঁড়ায় ২০২টি।
এই মাইলফলকের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করলেন মহারাজ। স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক তো ছিলেনই, এবার সেই সংখ্যাকে নিয়ে গেলেন এক অনন্য উচ্চতায়। এর আগে প্রোটিয়া স্পিনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট ছিল হিউ টেফিল্ডের, ১৭০টি।
আরো পড়ুন:
তিন-তিনটি সুপার ওভারের এক বিরল ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ
ছক্কার বৃষ্টিতে অ্যালেনের ইতিহাস, গড়লেন দুই অনন্য বিশ্বরেকর্ড
টেস্ট ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মহারাজ এখন উইকেটসংখ্যার দিক থেকে নবম স্থানে। তার ওপরে আছেন কিংবদন্তি পেসার ডেইল স্টেইন (৪৩৯ উইকেট), শন পলক (৪২১), মাখায়া এনটিনি, মরনে মর্কেল, শাউলান ল্যাঙ্গেভেল্ট, ভেরনন ফিল্যান্ডার, অ্যালান ডোনাল্ড ও জ্যাক ক্যালিসদের মতো নাম।
দক্ষিণ আফ্রিকায় যেখানে সহসাই স্পিনারদের জায়গা মেলে না মূল একাদশে, সেখানে মহারাজ এক যুগ ধরে দলকে প্রতিনিধিত্ব করছেন ধারাবাহিকভাবে। অনেক সময় পেস সহায়ক উইকেটেও তার স্পিনই হয়েছে ব্যবধান গড়ার অস্ত্র।
সাম্প্রতিক সময়ে দলটির হয়ে লম্বা সময় টেস্ট খেলা এবং ধারাবাহিক উইকেট নেওয়ার দিক থেকে অন্যতম নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। বিশেষ করে, উপমহাদেশ কিংবা স্পিন সহায়ক কন্ডিশনে তার কার্যকারিতা অনেকটাই বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে দলকে।
মহারাজের এই কীর্তি কেবল পরিসংখ্যানের গল্প নয়, বরং তা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট সংস্কৃতিতে স্পিনারদের জায়গা করে নেওয়ার ইতিহাসও। ১৩৬ বছরের টেস্ট যাত্রায় এই প্রথম এক স্পিনারের নাম লেখা হলো ২০০ উইকেটের তালিকায়।
এখন দেখার পালা এই মাইলফলকের পর কতদূর এগিয়ে যেতে পারেন মহারাজ। তবে ইতিহাসে নিজের নামটি যে অম্লান করে তুললেন, সেটি নিঃসন্দেহে এক গর্বের অধ্যায় হয়ে থাকল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের সবচেয়ে সফল অভিনেতা শাহরুখ
ভারতের সবচেয়ে সফল অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতি বছরের শীর্ষ পাঁচটি জনপ্রিয় ভারতীয় সিনেমা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে নিয়েছে আইএমডিবি।
বিশ্বের ৯.১ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারীর দেওয়া রেটিংয়ের ভিত্তিতে গবেষণাটি চালানো হয়। এতে দেখা যায়, এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৩০টি সিনেমার মধ্যে ২০টিতে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান।
আরো পড়ুন:
শাহরুখ পুত্রের ওয়েব সিরিজ: সেই ওয়াংখেড়ের মামলা
তারকাখচিত প্রিমিয়ারে শাহরুখ পুত্রের বিদেশি প্রেমিকা
এ তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে যৌথভাবে রয়েছেন হৃতিক রোশান ও আমির খান। তারা দুজনেই জনপ্রিয় ১৩০টি সিনেমার মধ্যে ১১টি করে সিনেমায় কাজ করেছেন। এরপর রয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন (১০টি সিনেমা), অজয় দেবগন (৭টি সিনেমা)। তাছাড়া অমিতাভ বচ্চন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও রানী মুখার্জি ৬টি করে সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
‘ভারতীয় সিনেমার ২৫ বছর’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি গতকাল প্রকাশিত হয়। এটি শাহরুখ খানের কর্মজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এবং ভারতীয় তারকাদের নিয়ে বদলে যাওয়া ধারার প্রতিফলন হিসেবেও বিবেচিত।
আইএমডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাহরুখ খান ২০০০-২০০৪ সালের মধ্যে দারুণ প্রভাব বিস্তার করেন। এই সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ২৫টি সিনেমার মধ্যে ৮টির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। যে বছরগুলোতে শাহরুখ খানের কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি, সে সময়েও তিনি আইএমডিবির ‘জনপ্রিয় ভারতীয় তারকা’-এর তালিকার শীর্ষ দশে নিয়মিত জায়গা করে নেন।
এই সময়ে ভারতীয় তারকাদের গুরুত্বের ব্যাপারটি পরিবর্তিত হয়েছে। মিলেনিয়ামের প্রথম পাঁচ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় ২৫টি সিনেমার প্রধান চরিত্রে ছিলেন ১৩ জন পুরুষ অভিনেতা। কিন্তু গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে, যেখানে শুধু প্রভাস, আল্লু অর্জুন, সুরিয়া ও বিজয় একাধিকবার জায়গা পান বলে এ প্রতিবেদনে জানানো হয়।
আইএমডিবি ইন্ডিয়ার প্রধান ইয়ামিনি পাতোদিয়া বলেন, “ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প সবসময়ই চক্রাকারে এগিয়েছে। সুতরাং ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে এই পঁচিশ বছরের মাইলফলক ভালো একটি দৃষ্টিকোণ প্রদান করে। এই বিবর্তন আগামী দিনে গল্প ও গল্পকারদের জন্য নতুন অর্থ নিয়ে আসবে।”
১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা।
দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী।
১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।
একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গেয়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা।
অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। এ ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেন মোট পাঁচবার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেলেও চলতি বছরে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন শাহরুখ।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, ডেকান ক্রনিকল
ঢাকা/শান্ত