কাফনের কাপড় পরে কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।

সদ্য অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এই কর্মসূচি পালন করেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার ও তার কর্মী-সমর্থকরা।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘিরে প্রবেশ পথের সামনে অবস্থান নেন দলটির কয়েকশত নেতাকর্মী। এ সময় বেশ কয়েকজন কাফনের কাপড় পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় শুয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নানা স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

নিউ ইর্য়কের ডেমোক্র্যাট ‘চমক’ ৩৩ বছরের মামদানি

ইশরাকের মেয়র পদের মেয়াদ নিয়ে যা জানা গেল

এ সময় বক্তব্যে ভোট কারচুপির জন্য জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে দায়ী করেন তারা।

কর্মসূচির বিষয়ে কাজল মাজমাদার বলেন, ‘‘জেলা বিএনপির নেতাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে আমরা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’’

এর আগে ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে গত রোববার (২৯ জুন) কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন কাজল মাজমাদার। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সেখানে খবর পৌঁছায় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের টয়লেটে সভাপতি পদে পরাজিত প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদারের চেয়ার প্রতীকের সিলমারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দুপুর থেকে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

ওই সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী কাজল মাজমাদার বলেন, ‘‘অনিয়ম ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি।’’ 

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘‘আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে শত ভাগ স্বচ্ছ নির্বাচন করেছি। এখানে কারচুপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। যেসব অভিযোগে তারা আন্দোলন করছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’ 

শুক্রবার (২৭ জুন) কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল শেষে ভোটে সভাপতি পদে একে বিশ্বাস বাবু ও সাধারণ সম্পাদক পদে কামাল উদ্দিন বিজয়ী হন। 

পরে কাজল মাজমাদার ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনর্গণনার আহ্বান জানান। পর দিন শনিবার পুনর্গণনা শেষে চার ভোট বেড়ে কাজলের ভোটের সংখ্যা হয় ৫৯৯। জয়ী প্রার্থী বাবুর ভোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৬১১। 

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্র থেকে প্রথমে দুই সদস্যের জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। পরবর্তীতে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

ঘোষিত কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়ায় কমিটি ঘোষণার পরের দিন থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে দলটির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের একটি অংশ। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র ক ন ত কর ম সরক র সদস য দলট র

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ জন্মাষ্টমী আজ

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ