টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে শ্রমিক নিহত
Published: 10th, July 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সেনা কল্যাণ ভবনের সামনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত মাহফুজুর রহমান (২০) বরিশাল সদর উপজেলার হায়াতসার গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বরিশালের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন ব্লু ফ্যাশন কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন মাহফুজুর।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছেন, মাহফুজুর রহমান ছুটি নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন কয়েকদিন আগে। গত রাতে কর্মস্থলে ফিরছিলেন তিনি। রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকায় বাস থেকে নেমে হেঁটে টঙ্গীর ভাড়া বাসায় যাওয়ার পথে সেনা কল্যাণ ভবনের সামনে একদল ছিনতাইকারী তাকে আটক করে। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাহফুজুর রহমানের পেটের ডান পাশে দুটি আঘাত করে ছিনতাইকারীরা। অনেক সময় পড়ে থাকায় রক্তক্ষণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে টহল পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাহফুজুরের লাশ উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ছয় মাসে ৮০টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫১
হবিগঞ্জে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে নিহত ১
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত ছ নত ই র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
গোমতীর চরে ১১ হাজার হেক্টর সবজিক্ষেত পানির নিচে
হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর দুই পাশের চরের ফসলি জমি। এর মধ্যে রয়েছে চরের বিস্তীর্ণ এলাকার সবজির ক্ষেত। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই এবার হঠাৎ বন্যায় ডুবছে তাদের ফসল। কষ্টের ফসল হারিয়ে যাওয়ায় কাঁদছেন চরের কৃষকরা। অনেককেই ডুবন্ত জমি থেকে নানা জাতের সবজি তুলে নিতে দেখা গেছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, হঠাৎ গোমতীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী ও কাচিয়াতলীসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চরের যেসব জমিতে করলা, মুলা, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছিল, তা এখন পানিতে ডুবে আছে। কৃষকের অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে নদীর কিনারায় বসে আছেন। কৃষকরা বলছেন, আর মাত্র দুই দিন সময় পেলেই এসব সবজি বাজারে তোলা যেত।
আমতলী এলাকার কৃষক সুজন মিয়া জানান, গোমতী নদীর এ চরে প্রায় ৩ একর জমিতে নানা জাতের সবজি চাষ করেছেন। আর দুই দিন পরই এসব ফসল বাজারে বিক্রি করা যেত। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে সব ফসল তলিয়ে গেছে। তার ভাষ্য, তিনি ব্যাংক ঋণ ও কিস্তি নিয়ে দুই বছর আগে কৃষিকাজ শুরু করেছেন। তার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর।
কাচিয়াতলী এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘গত বছরের বন্যায় আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এবারের বন্যায় আমাদের সব ফসল পানিতে ডুবে গেল। পানিতে নেমে কিছু করলা সংগ্রহ করেছি, বাকি সব নষ্ট হয়ে গেছে।’ বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবীদ্বারের বেশ কিছু এলাকার চিত্র একই।
পাঁচথুবী এলাকার কৃষক আবদুল কাদের ও আবদুস সালাম জানান, ৩-৪ দিন সময় পেলেই সবজি বিক্রি করতে পারতেন তারা। কিন্তু পানিতে সব ফসল ডুবে গেছে। মাচায় কিছু করলা আছে, সেগুলো নৌকায় করে গিয়ে সংগ্রহ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, গোমতী নদীর চরে চলতি বন্যায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সব উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দ দেয় তাহলে তারা পাবেন।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতী নদীর বিপৎসীমার সর্বোচ্চ পরিমাপ ১১ দশমিক ৩০ মিটার হলেও পানির উচ্চতা ৬ থেকে ৮ মিটার হলেই চরের অনেক কৃষিজমি ডুবে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এই নদীর পানি ৯ দশমিক ৪৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।