হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন মামা, সংবাদ সম্মেলনে বললেন ভাগনে
Published: 12th, July 2025 GMT
রাজশাহীতে আল ফারুক আহমেদ নতুন নামের এক ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘‘পাওনা দুই কোটি টাকা না দিতে তার মামা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন।’’ নিজের প্রাণহানির শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘‘তার কোনো ক্ষতি হলে দায়ী থাকবেন মামা ওয়াসিমুল হক।’’
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আল ফারুক আহমেদ নতুন। তার বাড়ি জেলার পবা উপজেলার ভুগরইল এলাকায়। পেশায় তিনি ঠিকাদার। তার মামা ওয়াসিমুল হকের বাড়িও ভুগরইল। তিনিও ঠিকাদার। দুজনে ২০১২ সাল থেকে একসঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে ঠিকাদারি কাজও করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন অভিযোগ করেন, এখনো তাদের পবা উপজেলার একাধিক রাস্তার কাজ চলমান আছে। এসব কাজ করতে গিয়ে মামার সঙ্গে তার আর্থিক লেনদেন করতে হয়েছে। অনেক সময় আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি মামাকে টাকা ধার দিয়েছেন। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিনি তার মামাকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ২০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন মামা। বাকি টাকা দিচ্ছেন না।
আরো পড়ুন:
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
সিরাজদিখানে ছুরিকাঘাতে বৃদ্ধ নিহত
নতুন জানান, ছয় কিস্তিতে তিনি সব টাকা সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) মাধ্যমে মামাকে দিয়েছেন। এর ব্যাংক রিসিপ্ট কপি তার কাছে আছে। কিন্তু মামা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। এছাড়া ব্যবসার কোনো লভ্যাংশও দিচ্ছেন না। পলাতক সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তার মামা। আওয়ামী সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে তার একটি জমিও দখলে নিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে আল ফারুক আহমেদ নতুন বলেন, ‘‘গত ৪ মাস ধরে আমি মামার কাছে লভ্যাংশসহ পাওনা টাকা চেয়ে আসছি। কিন্তু তিনি নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে টাকা দিচ্ছেন না। পারিবারিকভাবে এবং আমাদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের স্মরণাপন্ন হয়েও আমি সমাধান পাইনি। তিনি আমার মামা বলে আমি আইনের আশ্রয়ও নিতে পারিনি। সম্প্রতি টাকা দেয়ার নামে আমার মামা আমাকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে গেলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়। আমার মামা ওয়াসিমুলের পক্ষ নিয়ে সেখানে আমার বড় মামা পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীনও মারধর করেন। আরেক মামা ওহাব আলী এবং তাদের ছেলে কাওছার আলী ও মো.
এ ঘটনায় চিকিৎসার পর স্ত্রী তানিয়া খাতুন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জানিয়ে নতুন বলেন, ‘‘পলাতক মেয়র লিটন ও পলাতক এমপি আয়েন উদ্দিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আমার মামা আওয়ামী লীগের ডোনার ছিলেন। আমার মামার বিয়ের অনুষ্ঠানে এই দুজন পলাতক নেতা গিয়েছিলেন। সর্বশেষ জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছেন আমার মামা। দেশি-বিদেশি অস্ত্র দিয়ে ভাতিজা কাওছার ও লিটনের নেতৃত্বে প্রতিদিন গুণ্ডাবাহিনী পাঠাতেন। এ জন্য বোয়ালিয়া থানায় করা একটি মামলার ২৬ নম্বর আসামি করা হয় আমার মামাকে। আমার বড় মামা জয়নাল আবেদীনও আরেকটি মামলার ৬১ নম্বর আসামি।’’
এখন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে অভিযোগ করে নতুন আরো বলেন, ‘‘আমি এখন আশঙ্কা করছি, পাওনা ২ কোটি টাকা ও দখল করা জমি না দিতে আমার মামা আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। আমাকে দুনিয়াছাড়া করতে পারলে টাকা দেয়া লাগবে না, তিনি এমন ষড়যন্ত্রই করছেন। মামার কারণে আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। যে কোনো মুহূর্তে তিনি আমার যে কোনো ক্ষতি করতে পারেন। আমি আমার প্রাণহানিরও আশঙ্কা করি। এছাড়াও আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আমার যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবেন আমার মামা ওয়াসিমুল হক ও জয়নাল আবেদীন।’’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসিমুল হক বলেন, ‘‘নতুনের সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আমার কাছে কোনো টাকা পাবেন না। আওয়ামী সরকারের আমলে ভাগনে নতুনই আমার কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা নিয়েছেন। এখন টাকার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যুবলীগের নেতা। কিন্তু যুবদলের এক নেতার বোনকে বিয়ে করে বেপরোয়া হয়ে গেছেন। পারিবারিকভাবে বসেছি, কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেন না। জোর করে টাকা নিতে চায়। এ জন্য সম্প্রতি আমার চেম্বারে হামলা করেছিলেন। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছি।’’
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ষড়যন ত র আম র ম ম হত য র আওয় ম করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পিআর না, ফেয়ার নির্বাচন চায় জনগণ: দুলু
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, পিআর না, ফেয়ার নির্বাচন চায় জনগণ। বিএনপির ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিএনপি এখন ক্ষমতায় না যেতেই চক্রান্তের শিকার হচ্ছে। চক্রান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শনিবার (১১ জুলাই) দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটেরিয়ামে আয়োজিত শ্রমিকদলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুলু এসব কথা বলেন।
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘‘গত ১৮ বছর বিএনপিকে ধ্বংস করতে নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন করা হয়েছে যেন বিএনপি দেশ থেকে চিরতরে নিঃশেষ হয়ে যায়। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হামলা করে পুঙ্গ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যারা নির্যাতনের স্বীকার হননি। বর্তমানে বিএনপির ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’’
‘‘গত ৫ আগস্টের পর সবাই বিএনপি হয়ে গেছে। আগে মিছিল করতে লোক পেতাম না, এখন মঞ্চে জায়গা পাই না। যারা আগে অন্যায় অপরাধ করেছে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। যারা অন্যায় অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত তাদের বিএনপিতে কোনো জায়গা নেই। শহীদ জিয়াউর রহমান বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনিদের দলে স্থান দেননি। তারেক রহমানও বিএনপিতে কোনো অপরাধী, সন্ত্রাসী, খুনিদের জায়গা দেবেন না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘জুলাই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি শ্রমিকরা ভূমিকা পালন করেছেন। ছাত্ররা যখন গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে, তখন একজন ভ্যানচালক সিএনজি, অটোতে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। একজন রিকশাচালক তার গাড়িতে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি করেছেন। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক, কুলিদের রক্তে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছি।’’
নাটোর জেলা যুবদলের সভাপতি আবু রায়হান ভুলুর সভাপতিত্বে ও জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম বুলবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্যে রাখেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রকিকদলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা যুবদলের সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম প্রমুখ।
ঢাকা/আরিফুল//