রাজশাহীতে আল ফারুক আহমেদ নতুন নামের এক ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘‘পাওনা দুই কোটি টাকা না দিতে তার মামা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন।’’ নিজের প্রাণহানির শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘‘তার কোনো ক্ষতি হলে দায়ী থাকবেন মামা ওয়াসিমুল হক।’’ 

শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আল ফারুক আহমেদ নতুন। তার বাড়ি জেলার পবা উপজেলার ভুগরইল এলাকায়। পেশায় তিনি ঠিকাদার। তার মামা ওয়াসিমুল হকের বাড়িও ভুগরইল। তিনিও ঠিকাদার। দুজনে ২০১২ সাল থেকে একসঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে ঠিকাদারি কাজও করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে নতুন অভিযোগ করেন, এখনো তাদের পবা উপজেলার একাধিক রাস্তার কাজ চলমান আছে। এসব কাজ করতে গিয়ে মামার সঙ্গে তার আর্থিক লেনদেন করতে হয়েছে। অনেক সময় আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি মামাকে টাকা ধার দিয়েছেন। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিনি তার মামাকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ২০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন মামা। বাকি টাকা দিচ্ছেন না।

আরো পড়ুন:

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

সিরাজদিখানে ছুরিকাঘাতে বৃদ্ধ নিহত

নতুন জানান, ছয় কিস্তিতে তিনি সব টাকা সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) মাধ্যমে মামাকে দিয়েছেন। এর ব্যাংক রিসিপ্ট কপি তার কাছে আছে। কিন্তু মামা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। এছাড়া ব্যবসার কোনো লভ্যাংশও দিচ্ছেন না। পলাতক সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তার মামা। আওয়ামী সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে তার একটি জমিও দখলে নিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে আল ফারুক আহমেদ নতুন বলেন, ‘‘গত ৪ মাস ধরে আমি মামার কাছে লভ্যাংশসহ পাওনা টাকা চেয়ে আসছি। কিন্তু তিনি নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে টাকা দিচ্ছেন না। পারিবারিকভাবে এবং আমাদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের স্মরণাপন্ন হয়েও আমি সমাধান পাইনি। তিনি আমার মামা বলে আমি আইনের আশ্রয়ও নিতে পারিনি। সম্প্রতি টাকা দেয়ার নামে আমার মামা আমাকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে গেলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়। আমার মামা ওয়াসিমুলের পক্ষ নিয়ে সেখানে আমার বড় মামা পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীনও মারধর করেন। আরেক মামা ওহাব আলী এবং তাদের ছেলে কাওছার আলী ও মো.

লিটন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। এ সময় আমার কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’’ 

এ ঘটনায় চিকিৎসার পর স্ত্রী তানিয়া খাতুন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জানিয়ে নতুন বলেন, ‘‘পলাতক মেয়র লিটন ও পলাতক এমপি আয়েন উদ্দিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আমার মামা আওয়ামী লীগের ডোনার ছিলেন। আমার মামার বিয়ের অনুষ্ঠানে এই দুজন পলাতক নেতা গিয়েছিলেন। সর্বশেষ জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছেন আমার মামা। দেশি-বিদেশি অস্ত্র দিয়ে ভাতিজা কাওছার ও লিটনের নেতৃত্বে প্রতিদিন গুণ্ডাবাহিনী পাঠাতেন। এ জন্য বোয়ালিয়া থানায় করা একটি মামলার ২৬ নম্বর আসামি করা হয় আমার মামাকে। আমার বড় মামা জয়নাল আবেদীনও আরেকটি মামলার ৬১ নম্বর আসামি।’’ 

এখন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে অভিযোগ করে নতুন আরো বলেন, ‘‘আমি এখন আশঙ্কা করছি, পাওনা ২ কোটি টাকা ও দখল করা জমি না দিতে আমার মামা আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। আমাকে দুনিয়াছাড়া করতে পারলে টাকা দেয়া লাগবে না, তিনি এমন ষড়যন্ত্রই করছেন। মামার কারণে আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। যে কোনো মুহূর্তে তিনি আমার যে কোনো ক্ষতি করতে পারেন। আমি আমার প্রাণহানিরও আশঙ্কা করি। এছাড়াও আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আমার যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবেন আমার মামা ওয়াসিমুল হক ও জয়নাল আবেদীন।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসিমুল হক বলেন, ‘‘নতুনের সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আমার কাছে কোনো টাকা পাবেন না। আওয়ামী সরকারের আমলে ভাগনে নতুনই আমার কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা নিয়েছেন। এখন টাকার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যুবলীগের নেতা। কিন্তু যুবদলের এক নেতার বোনকে বিয়ে করে বেপরোয়া হয়ে গেছেন। পারিবারিকভাবে বসেছি, কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেন না। জোর করে টাকা নিতে চায়। এ জন্য সম্প্রতি আমার চেম্বারে হামলা করেছিলেন। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছি।’’ 
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ষড়যন ত র আম র ম ম হত য র আওয় ম করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৩ দিন পর পুকুরে মিলল নিখোঁজ যুবকের মরদেহ

নিখোঁজের তিনদিন পর ঢাকার ধামরাই পৌরসভার চন্দ্রাইল এলাকার একটি মৎস্য খামারের পুকুর থেকে হৃদয় হাসান (২৪) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে পৌরসভার ছোট চন্দ্রাইল এলাকার পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়। 

মারা যাওয়া হৃদয় সৈয়দপুর সদর থানার নিয়ামতপুর এলাকার মো. চান মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রডমিস্ত্রি ছিলেন। গত দশ বছর ধরে পরিবার নিয়ে চন্দ্রাইল এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বন্ধুকে হত্যার পর কুড়াল নিয়ে থানায় হাজির

সিদ্ধিরগঞ্জে পরিত্যক্ত ভবনে মিলল যুবকের লাশ

নিহতের ভাই মনু মিয়া বলেন, “আমার ভাই তিনদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। তাকে আমরা অনেক জায়গায় খুঁজেছি। আজ সকালে পুকুরে ভেসে থাকা মরদেহের খবর পেয়ে ছুটে আসি। মরদেহটি ছিল পুকুরের মাঝখানে। উদ্ধারের পর লাশটি আমার ভাইয়ের বলে শনাক্ত করি।”

স্থানীয়রা জানান, সকালে মরদেহ ভেসে থাকার খবরে এলাকার মানুষ পুকুর পাড়ে জড়ো হন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ভাইয়েরা এসে নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করেন।

ধামরাই থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. ফারুক হোসেন বলেন, “৯৯৯- নম্বরে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছি। নিহতের স্বজনেরা পরিচয় শনাক্ত করেছেন।”

ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ