বাংলাদেশের রাজনীতির এ এক অদ্ভুত প্রকৃতি। যাদের সহায়তা গতকাল অপরিহার্য বিবেচিত হয়েছে, আজ তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে অবিশ্বাস্য সব ষড়যন্ত্রতত্ত্বের পেছনে ছোটা। দীর্ঘ দেড় দশকের স্বৈরশাসনের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন ঘটনায় যাদের সমর্থনের আশায় উন্মুখ হয়ে থাকতে দেখা যেত কিংবা যাদের বিবৃতি উদ্ধৃত করে বলা হতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দুঃশাসনকে প্রত্যাখ্যান করেছে, এখন সেই জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের (ওএইচসিএইচআর) উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বাম ও ডানপন্থী, ধর্মবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষ—বিপরীতমুখী রাজনৈতিক দলগুলো যেন একই মোহনায় মিলিত হচ্ছে। আরও দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ছাত্র ও গণ-অভ্যুত্থানের নেতারাও এ থেকে মুক্ত হতে পারছেন না।

হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার দপ্তর খোলার পেছনে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পেয়েছেন। ডয়চে ভেলে হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘তারা এখানে অফিস করলে সমকামিতা উৎসাহিত হবে। তাহলে তো সভ্যতা থাকবে না। তারা কাদিয়ানি (আহমদিয়া), সংখ্যালঘু, পাহাড়ি, নানা ইস্যু তৈরি করবে। খ্রিষ্টানদের প্রভাব বেড়ে যাবে। আর নারী স্বাধীনতার নামে তারা নারীদের ইসলামের বিধিবিধানের বাইরে নিয়ে যেতে কাজ করবে।’

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স একই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তো এমন কোনো দীর্ঘ মেয়াদে সংকটে পড়ে নাই যে তাদের অফিস লাগবে।’ তিনি বরং অভিযোগ করেছেন, ‘জাতিসংঘ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নিরপেক্ষ ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে—এমন কোনো প্রমাণ নেই। তারা সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদীর স্বার্থ রক্ষা করছে।’

এনসিপি দলীয়ভাবে কিছু না বললেও দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সমঝোতা স্মারক নিয়ে ফেসবুকে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি ওএইচসিএইচআরের ভূমিকাকে পক্ষপাতমূলক ও সাম্রাজ্যবাদ-সমর্থক অভিহিত করে ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যক্রমের কিছু বাংলাদেশে হোক, এটা না চাওয়ার কারণ হিসেবে যা পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর সম–অধিকারের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার কারণ বলে মনে হচ্ছে। বিরোধিতার আরেকটি বিষয় হচ্ছে নারী স্বাধীনতার প্রশ্নটি, যা প্রধানত উঠেছে ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্য থেকে। বাম-ডান সবার ভাষ্যে কথিত সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের প্রতিনিধিত্বের কথাও আছে। সব সরকারের আমলে সুবিধাভোগী একজন অধ্যাপক এক ধাপ বাড়িয়ে বলেছেন, বিশ্বের ১৮ দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় রয়েছে, বাংলাদেশ যদি সেই তালিকায় চলে যায়, তাহলে এটা আমাদের জন্য বিরাট ইমেজ সংকট হবে। বিনিয়োগকারীরা তখন বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে অন্য দেশে চলে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডে তাদের কার্যালয় প্রতিষ্ঠায় কোনো বিনিয়োগকারী দেশ দুটি ছেড়ে গেছেন কি না, সে প্রশ্ন অবশ্য তাঁকে কেউ করেনি।

মানবাধিকারের প্রশ্নে বহির্বিশ্বের কারও নজরদারি ও জবাবদিহি যে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কেউ সমর্থন করেন না, সেটা মোটেও অজানা কিছু নয়। তাঁদের উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁদের শক্তি প্রয়োগ সব সময় নিয়মনীতি মেনে চলে না এবং সে কারণে এ ধরনের নিবিড় নজরদারিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলে জাতিসংঘে কাজের সুযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সবচেয়ে বড় শরিক হিসেবে এ আশঙ্কার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। জাতিসংঘের শান্তি রক্ষায় আমাদের সৈনিক ও পুলিশ সদস্য যখন যান, তখন তাঁদের কর্মস্থল যত ঝঞ্ঝাপূর্ণ ও বিপজ্জনক হোক না কেন, তাঁরা তখন ঠিকই মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলেন। কোনো বিচ্যুতি ঘটলে দ্রুততার সঙ্গে তার তদন্ত এবং সামরিক আদালতে বিচারের কথাও আমরা জানি। বিদেশের মাটিতে যে সৈনিক ও পুলিশ সদস্যরা মানবাধিকারের নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে চলেন, তাঁরা স্বদেশে তা অনুসরণ করতে পারবেন না, এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এখানে অবশ্য স্মরণ করা দরকার, স্বৈরশাসনের অবসান ঘটানোর গণ-অভ্যুত্থানে এসব বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এমন সব প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, যা শান্তি মিশনে তাঁরা ব্যবহার করতে পারতেন না। স্বাভাবিকভাবেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার উপস্থিতিও নিরোধক হিসেবে কাজ করত।

সব জনগোষ্ঠীর সম–অধিকারের প্রশ্নে যে উদ্বেগ, তা আগেও ছিল এবং দেশের বাইরে থেকেই এর সমালোচনা হয়ে এসেছে। এই সমালোচনা তত দিন চলবে, যত দিন বাস্তবে সম–অধিকার প্রতিষ্ঠা না পাবে। পশ্চিমা বিশ্বেও কর্মক্ষেত্রে নারীর সমসুযোগ না থাকা এবং যৌন হয়রানির বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিতই হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ পায় ও বিতর্ক হয়। আমাদের দেশে সামাজিক রক্ষণশীলতা ও ধর্মীয় বিধিবিধানের কথা বলে সম্পদের অধিকারসহ নানাভাবে নারীকে পিছিয়ে রাখা হয়। নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ সত্ত্বেও উপার্জনের জন্য নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে প্রেরণে ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর কোনো আপত্তির কথা কখনো শোনা যায় না, কিন্তু সম্পদের উত্তরাধিকারের দাবি উঠলেই ‘গেল, গেল’ রব তোলা হয়।

দেশে নারী-পুরুষ, ধর্ম-জাতি-গোত্রনির্বিশেষে কারও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না—এমন রাজনৈতিক অঙ্গীকার ঘোষণা ও তা প্রতিপালন করা হলে জাতিসংঘ বা বিদেশি কোনো সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা নয়। সমস্যা কেবল তখনই হতে পারে, যদি আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিই এবং তা আড়াল করতে চাই।

সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হচ্ছে, জাতিসংঘ ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা ও কাজ সম্পর্কে আমরা পর্যাপ্ত তথ্য না জেনেই বিতর্ক ও বিরোধিতায় নেমে পড়ি। গাজা ও পুরো ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের যে গণহত্যা ও দখলদারি, সেটা বৃহত্তর রাজনৈতিক সংকটের বিষয়, যার সমাধান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৃহৎ শক্তিগুলোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার কাজ শুধুই সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ এবং তা বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরা, যেটা তারা জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ ও জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের কাছে নিয়মিত পেশ করে।

বাংলাদেশে তাদের দপ্তর খোলার বিরোধিতায় বলা হচ্ছে, তারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা রোধ করতে পারেনি। তাঁরা জানেনও না যে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে জাতিসংঘের র‍্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গণহত্যা নিয়ে অব্যাহত সমালোচনা করতে থাকায় ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকদের চক্ষুশূল হয়েছেন। সম্প্রতি কোন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ইসরায়েলের জন্য সমরাস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করছে, তার তালিকা সমপ্রমাণে প্রকাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্র তাঁর বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার দপ্তর খোলা হলে তারা দেশে সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে বলেও মতপ্রকাশ করেছেন ডান ও বামপন্থী—উভয় ধারার রাজনীতিকেরা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারিতে এক নির্বাহী আদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও এমন বক্তব্যের ভিত্তি কী? প্রথমবারও ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছিলেন মানবাধিকার সংস্থার কথিত ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতের অভিযোগে। এবার ক্ষমতা গ্রহণের দিনই তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন। ২২ জুলাই ট্রাম্প জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, যার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সংস্থাটি বিভাজন সৃষ্টি করে, এমন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়গুলোর প্রসার ঘটাচ্ছে। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে সংস্থার সদস্যপদ দেওয়াও আরেকটি কারণ। বলা দরকার যে যৌনশিক্ষার বিষয়টি ইউনেসকোর কার্যক্রমের অংশ। নারী অধিকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কি আমাদের ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর খুব একটা পার্থক্য করা যায়?

ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্রতত্ত্বের বিপরীতে আমাদের বরং এই সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জরুরি, কেননা গুমের মতো নিষ্ঠুর বর্বরতার বিরুদ্ধে এক দশক ধরে সবচেয়ে বেশি তৎপর ও সোচ্চার ছিল এই সংস্থা। হেফাজতের শাপলা চত্বরের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অধিকারের প্রতিবেদনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অব্যাহত অপবাদ সত্ত্বেও সংস্থাটি অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। গত বছর ছাত্রহত্যার নিন্দা ও তদন্ত দাবি করে সবার আগে সবচেয়ে জোরালো বিবৃতিটি এসেছিল কোত্থেকে? ১৯ জুলাই মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক প্রথম বিবৃতি দিয়ে ছাত্র হত্যা বন্ধ ও সব ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার তদন্ত নিয়েও আপত্তি তোলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাদের তদন্তের কারণেই ১ হাজার ৪০০ প্রাণহানি এবং শেখ হাসিনার সরকারের নিষ্ঠুরতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আন্তর্জাতিক পরিসরে বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়েছে। না হলে আওয়ামী লীগের বিদেশি বন্ধুদের অপপ্রচার মোকাবিলা দুঃসাধ্য হতো। তিন বছরের জন্য সংস্থাটির দপ্তর খোলার পেছনে তাই ষড়যন্ত্র না খুঁজে তাদের সহায়তায় মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ও অতীত অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করায় মনোযোগী হওয়াই জরুরি। তাহলে তিন বছর পর আর তাদের প্রয়োজন হবে না।

কামাল আহমেদ সাংবাদিক

* মতামত লেখকের নিজস্ব

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত স ঘ ম নব ধ ক র স স থ র জ ত স ঘ র ম নব ধ ক র য ক তর ষ ট র ষড়যন ত র র জন ত ক র তদন ত ইসর য় ল হ র কর র র জন আম দ র র জন য প রক শ কর ছ ন সদস য সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, ষড়যন্ত্রকারীরা আমার পেছনে লেগেছে: তথ্য উপদেষ্টা

তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা তদবির ও লবিংয়ের অভিযোগ নিয়ে সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৩টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আজকাল অনেকের লেজ কাটা যাচ্ছে বলে, আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন।” 

তথ্য উপদেষ্টা দাবি করেন,  তিনি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে কোনো আপস করেননি এবং প্রস্তাব পেয়ে স্পষ্টভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সামরিক অভিযানের ভিডিওটি ভুয়া: বাংলা ফ্যাক্ট

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ঢাবি অধ্যাপক

তিনি লেখেন,  “তদবিরের কথা উঠলো যখন, একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক বন্ধু একজন ব্যক্তিকে আমার ভাইয়ার সাথে দেখা করায়। বিটিভির একটা টেন্ডারের কাজ করে দিলে তারা পার্সেন্টেজ দিবে এবং জুলাই নিয়ে কয়েকটা দেশে প্রোগ্রামের জন্য হেল্প করবে। আমি জানার পর এটা নিষেধ করে দেই। সদুদ্দেশ্যে হলেও রাষ্ট্রের আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। পরবর্তীতে সে টেন্ডারের কাজ ও স্থগিত হয়।”

“সে ব্যক্তি কনভার্সেশন রেকর্ড করে একজন সাংবাদিককে পাঠায়। সে সাংবাদিক যোগাযোগ করলে আমি বলে দিই, ভাই আমরা একাজ করতে দেইনি। আর,  ওই লোক ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই জুলাইয়ের প্রোগ্রামের কথা বলে একাজ করেছে। উনি আমার কথা বিশ্বাস করে আর রেকর্ডটি পাবলিক করেননি। ”

তিনি বলেন, “আজকাল অনেকের লেজকাটা যাচ্ছে বলে, আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। বিভিন্ন দলের কয়েকজন মহারথী এতে জড়িত। সব ষড়যন্ত্রই প্রকাশ পাবে।” প্রথমে নতুন দলের কয়েকজন মহারথী জড়িত লিখলেও কিছুক্ষণ পর তা পরিবর্তন করে  বিভিন্ন দলের লেখেন। 

তিনি আরো লেখেন, “পুনশ্চঃ আমার নিকৃষ্ট শত্রুরাও গত ১২ মাসে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ করলেও দুর্নীতি বা আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ করেনি। বিভিন্ন দলের মহারথীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে তাতে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পবিত্র আমানত। হাজারকোটি টাকার চাইতেও ইজ্জত ও রাষ্ট্রের আমানত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” 

সংশোধনের বিষয়ে তিনি লেখেন, “বিঃদ্রঃ কয়েকটা বাক্য নিয়ে অযথাই জলঘোলা হচ্ছে, তাই এডিট করে দিলাম। জুলাই কতিপয় লোকের কাছে পলিটিকাল মবিলিটির ল্যডার।একটা না কয়েকটা দলের মহারথীরাই আমার/আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। কিন্তু, সবার এখন গুজববাজ আর সুবিধাবাদী বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভেনেজুয়েলায় নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিরোধীদের প্রতিরোধের ডাক
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র
  • তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, ষড়যন্ত্রকারীরা আমার পেছনে লেগেছে: তথ্য উপদেষ্টা