জুলাই সনদে নিজেদের অবদানের স্বীকৃতি দাবি সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের
Published: 5th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিজেদের অবদান ও ভূমিকার কথা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত এক কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়।
‘সশস্ত্র বাহিনীর সকল পদবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দ-ছাত্রজনতার ঐক্য সমাবেশ ও শোভাযাত্রা’ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজক ‘জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ’। রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে প্রথমে সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে শোভাযাত্রা বের করা হয়। রাওয়া কনভেনশন সেন্টার থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। জাহাঙ্গীর গেট ঘুরে রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে এসে শোভাযাত্রা শেষ হয়।
সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আহসান হাকিম বলেন, তাঁরা চান, জুলাই সনদে তাঁদের নাম থাকুক। এ সময় তিনি সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানোর দাবি জানান।
অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবুল মনসুর বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সে জন্য জুলাই সনদে তাঁদের অবদান তুলে ধরতে হবে।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জামিল ডি আহসান বলেন, স্বাধীনতা পাওয়ার পর তা বিপন্ন হওয়ার পথে ছিল। ৫ আগস্ট তা আবার পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আজকের দিনকে ঐতিহাসিক হিসেবে তাঁরা স্মরণ করছেন। তাঁরা দেশের জন্য আগেও ছিলেন, এখনো আছেন।
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, দেশের সম্ভাব্য শত্রুদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদারত্ব নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। সরকারকে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো.
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শরীফ মো. এ হুসাইনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মনীশ দেওয়ান, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশাররফ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমিনুল করীম, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অবসরপ র প ত সদস সশস ত র ব হ ন র জ ল ই সনদ কর ন ল ম
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনীর অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ দাবি এবি পার্টির
গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনী এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করার দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
‘গৌরবোজ্জ্বল জুলাই ৩৬’ উদযাপনের অংশ হিসেবে শনিবার (২ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ দাবি করে দলটি।
রাজধানীর বিজয় নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলমের সঞ্চালায় সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনিশ দেওয়ান, কর্নেল (অব.) মশিউজ্জামান, সামরিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, এজিএম আমিরুল ইসলাম, কর্নেল মোশাররফ, মেজর (অব.) জিয়া, লে. (অব.) খান সোয়েব আমানুল্লাহ, সামরিক কর্মকর্তা ইমরান,সামরিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন এবং মেজর আফসারী।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “যখন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একীভূত হয়, তখনই মুক্তিযুদ্ধ বা গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বিবেকের দায় থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিল।সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত সেনারা রাজনৈতিক দাবিতে রাজপথে নামেন না, কিন্তু সেদিন ডিওএইচএসগুলোতে সেই রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়েছিল বলেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পেরেছিল। তাদের মাঠে নামার কারণেই গণঅভ্যুত্থান সহজ হয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন,“ফ্যসিবাদের অন্তিম সময়ে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, মূলধারার কিছু মিডিয়া, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও সাংবাদিক জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সেদিন জনগণের বিরুদ্ধে যায়নি। সেটাই সেদিন আমাদের মাঝে আশার আলো সঞ্চারিত করেছিল।”
মনিশ দেওয়ান বলেন, “সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। জগদ্দল পাথরকে সরানো গেলেও, তা সম্পূর্ণরূপে সরানো যায়নি। ফুটো বল দিয়ে খেলা চলে না।”
মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “২/১ জনের অপকর্মে পুরো বাহিনী কলুষিত হতে পারে না। জুলাইয়ের যুদ্ধ এখনো চলমান। সংস্কার দরকার মিডিয়া ও সশস্ত্র বাহিনী উভয় ক্ষেত্রেই। সংস্কার থাকলে হয়তো হিলি বা কাউল পালাতে হতো না। সংস্কারবিহীন নির্বাচন মানেই স্বৈরতন্ত্রের পুনর্বাসন।”
মোশাররফ বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ থেকে পিছু হটা যাবে না। সেদিন আমরা সামরিক কর্মকর্তারা আমাদের সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম, বিবেকের তাড়নায় আমরা আর সেদিন ঘরে থাকতে পারিনি। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের বিচার আমরা দেখতে পারি নাই।”
জামাল উদ্দিন বলেন, “হাসিনার ফ্যাসিবাদকে না করে দেওয়ার জন্য ৩৬ জুলাই আমরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে বলি। সেদিন আমরা নেমে আসায় জনগণ আরো বেশি সাহসী হয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তখন পর্যন্ত আমরা কিন্তু জানতাম না আজকে হাসিনার শেষ দিন।”
মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার বলেন, “দেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছোটখাটো মতপার্থক্য ভুলে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের উচিত অবিলম্বে ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি