ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে ২৫টি বই নিষিদ্ধ করা হলো। কারণ, ওই বইগুলো ‘বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানি দিচ্ছে ও সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করছে।’ পাশাপাশি ‘জাতীয় অখণ্ডতা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে বইগুলো বিপজ্জনক’। জম্মু–কাশ্মীরের উপ–রাজ্যপাল মনোজ সিনহার নির্দেশ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সচিব চন্দ্রকর ভারতী ৫ আগস্ট ওই নির্দেশিকা জারি করেছেন।

নিষিদ্ধ বইগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশিষ্ট সংবিধানবিশেষজ্ঞ এ জি নুরানির লেখা ‘দ্য কাশ্মীর ডিসপিউট ১৯৪৭–২০১২’, অরুন্ধতী রায়ের ‘আজাদি’, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুমন্ত্র বসুর ‘কনটেস্টেড ল্যান্ড’ ও ‘কাশ্মীর অ্যাট দ্য ক্রসরোডস’, ক্রিস্টোফার স্নেডেনের ‘ইনডিপেনডেন্ট কাশ্মীর’, ডেভিড দেবদাসের ‘ইন সার্চ অব ফিউচার’, ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ডের ‘কাশ্মীর ইন কনফ্লিক্ট’, সুগত বসু ও আয়েশা জালালের ‘কাশ্মীর অ্যান্ড ফিউচার অব সাউথ এশিয়া’।

জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবুল আলা মওদুদীর লেখা ‘আল জিহাদ ফিল ইসলাম’ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল বান্নার ‘মুজাহিদ কি আজান’ বই দুটিও এই নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে। এই ২৫টি বই বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যাঁদের কাছে বইগুলো পাওয়া যাবে, তাঁরা শাস্তি পাবেন।

প্রশাসনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন তদন্তে দেখা গেছে, ঐতিহাসিক সত্য বিকৃত করে এই বইগুলো যুব সম্প্রদায়কে উগ্রপন্থায় আকৃষ্ট করছে, নিরাপত্তারক্ষীদের অসম্মান করতে শেখাচ্ছে ও হিংসায় প্ররোচিত করছে। বইগুলো ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যের আড়ালে মিথ্যা আখ্যান প্রচার করে চলেছে।

জম্মু–কাশ্মীরের দ্বিখণ্ডিতকরণ ও বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তির দিন এই নির্দেশিকা জারির মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, উপদ্রুত এই সাবেক রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকার এখনো স্বাভাবিক বলে মনে করে না। রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি যখন ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে, তখন এই নির্দেশিকা জারির মধ্য দিয়ে সম্ভবত এটাও বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্র এ মুহূর্তে সেই দাবি মেনে নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

উপত্যকার রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পেহেলগাম–কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুর জম্মু–কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার পথে একটা বড় অজুহাত হবে। কেন্দ্র অন্তত ওই দুই ঘটনাকে সেভাবে ব্যাখ্যা ও খাঁড়া করবে।

আগামীকাল শুক্রবার রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবি নিয়ে আনা মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে হওয়ার কথা। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বিজেপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, সংসদের চলতি অধিবেশনেই সে–সংক্রান্ত বিল পেশ ও পাস করার দায়িত্ব সবাই নিক। জম্মু–কাশ্মীরের শান্তি ও সুস্থিতি ফেরানোর পথে সেটা হবে এক বড় পদক্ষেপ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বইগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীরে অরুন্ধতীর বইসহ ২৫টি বই নিষিদ্ধ

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে ২৫টি বই নিষিদ্ধ করা হলো। কারণ, ওই বইগুলো ‘বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানি দিচ্ছে ও সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করছে।’ পাশাপাশি ‘জাতীয় অখণ্ডতা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে বইগুলো বিপজ্জনক’। জম্মু–কাশ্মীরের উপ–রাজ্যপাল মনোজ সিনহার নির্দেশ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সচিব চন্দ্রকর ভারতী ৫ আগস্ট ওই নির্দেশিকা জারি করেছেন।

নিষিদ্ধ বইগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশিষ্ট সংবিধানবিশেষজ্ঞ এ জি নুরানির লেখা ‘দ্য কাশ্মীর ডিসপিউট ১৯৪৭–২০১২’, অরুন্ধতী রায়ের ‘আজাদি’, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুমন্ত্র বসুর ‘কনটেস্টেড ল্যান্ড’ ও ‘কাশ্মীর অ্যাট দ্য ক্রসরোডস’, ক্রিস্টোফার স্নেডেনের ‘ইনডিপেনডেন্ট কাশ্মীর’, ডেভিড দেবদাসের ‘ইন সার্চ অব ফিউচার’, ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ডের ‘কাশ্মীর ইন কনফ্লিক্ট’, সুগত বসু ও আয়েশা জালালের ‘কাশ্মীর অ্যান্ড ফিউচার অব সাউথ এশিয়া’।

জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবুল আলা মওদুদীর লেখা ‘আল জিহাদ ফিল ইসলাম’ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল বান্নার ‘মুজাহিদ কি আজান’ বই দুটিও এই নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে। এই ২৫টি বই বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যাঁদের কাছে বইগুলো পাওয়া যাবে, তাঁরা শাস্তি পাবেন।

প্রশাসনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন তদন্তে দেখা গেছে, ঐতিহাসিক সত্য বিকৃত করে এই বইগুলো যুব সম্প্রদায়কে উগ্রপন্থায় আকৃষ্ট করছে, নিরাপত্তারক্ষীদের অসম্মান করতে শেখাচ্ছে ও হিংসায় প্ররোচিত করছে। বইগুলো ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যের আড়ালে মিথ্যা আখ্যান প্রচার করে চলেছে।

জম্মু–কাশ্মীরের দ্বিখণ্ডিতকরণ ও বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তির দিন এই নির্দেশিকা জারির মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, উপদ্রুত এই সাবেক রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকার এখনো স্বাভাবিক বলে মনে করে না। রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি যখন ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে, তখন এই নির্দেশিকা জারির মধ্য দিয়ে সম্ভবত এটাও বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্র এ মুহূর্তে সেই দাবি মেনে নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

উপত্যকার রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পেহেলগাম–কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুর জম্মু–কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার পথে একটা বড় অজুহাত হবে। কেন্দ্র অন্তত ওই দুই ঘটনাকে সেভাবে ব্যাখ্যা ও খাঁড়া করবে।

আগামীকাল শুক্রবার রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবি নিয়ে আনা মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে হওয়ার কথা। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বিজেপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, সংসদের চলতি অধিবেশনেই সে–সংক্রান্ত বিল পেশ ও পাস করার দায়িত্ব সবাই নিক। জম্মু–কাশ্মীরের শান্তি ও সুস্থিতি ফেরানোর পথে সেটা হবে এক বড় পদক্ষেপ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ