চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কযুদ্ধের ঘটনাক্রম, কবে কী ঘটল
Published: 12th, August 2025 GMT
আবারও শুল্কবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। গতকাল সোমবার আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতি বাড়িয়েছে তারা। ফলে পারস্পরিক পণ্যে তিন অঙ্কের শুল্ক আরোপ আপাতত ঠেকাতে পেরেছে তারা। এতে মার্কিন ক্রেতারা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। বছরের শেষ ভাগে বড়দিনের উৎসব। সেই উৎসব সামনে রেখে এই সময়েই সাধারণত ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতারা এখন মজুত বাড়ানোর প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, নির্বাহী আদেশবলে চীনের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের বিষয়টি ১০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
এখন যে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ করছেন ট্রাম্প, তার সূত্রপাত চীনের সঙ্গে। বলা যায়, চীনই ট্রাম্পের মূল লক্ষ্যবস্তু। সেই ২০১৬ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পরই ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেন। দেখে নেওয়া যাক, এ বছর যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও দিনক্ষণগুলো:
২১ জানুয়ারি: দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন পরই ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ১০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। অভিযোগ করেন—চীন থেকে ফেন্টানিল যুক্তরাষ্ট্রে আসছে।
১ ফেব্রুয়ারি: চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ এবং মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, এই দেশগুলোকে ফেন্টানিল ও অবৈধ অভিবাসনের প্রবাহ কমাতে হবে।
৪ ফেব্রুয়ারি: চীন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়; মার্কিন কোম্পানি, যেমন গুগল, কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারক ও ফ্যাশন ব্র্যান্ড ক্যালভিন ক্লেইনকে লক্ষ্য করে নানা পদক্ষেপ নেয় তারা। একই সঙ্গে মার্কিন কয়লা ও এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল ও গাড়ি আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এসব শুল্ক কার্যকর হয় ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রতিরক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অন্যান্য শিল্পে ব্যবহৃত পাঁচটি ধাতুর রপ্তানিও সীমিত করে তারা।
৩ মার্চ: যুক্তরাষ্ট্র সব চীনা আমদানিতে ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক দ্বিগুণ করে ২০ শতাংশ করে, কার্যকর হয় ৪ মার্চ থেকে।
৪ মার্চ: চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রপ্তানিতে পাল্টা ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। প্রভাব পড়ে প্রায় ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যে। একই সঙ্গে ২৫টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। চিকিৎসাযন্ত্র প্রস্তুতকারী ইলুমিনার জেনেটিক সিকোয়েন্সার আমদানি নিষিদ্ধ করে।
২ এপ্রিল: বিশ্বের ৫৭টি দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি দেশগুলোর ওপর ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্ক আরোপ। সেই দিনটিকে ট্রাম্প ‘স্বাধীনতা দিবস’ ঘোষণা করেন—সব আমদানিতে ভিত্তি ১০ শতাংশ এবং চীনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি। এই শুল্ক কার্যকর হয় ৯ এপ্রিল থেকে। এ ছাড়া ২ মে চীন ও হংকং থেকে কম মূল্যের চালানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার (ডি মিনিমিস ছাড়) বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
৪ এপ্রিল: সব মার্কিন পণ্যে চীন পাল্টা ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে (কার্যকর ১০ এপ্রিল থেকে), কিছু বিরল ধাতুর রপ্তানি সীমিত করে। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত ৩০টি মার্কিন সংস্থার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। কিছু মার্কিন কোম্পানির সরগম (শস্যজাতীয় খাবার), পোল্ট্রি ও বোনমিল (হারের গুঁড়া) আমদানিও স্থগিত করে।
৮ এপ্রিল: যুক্তরাষ্ট্র সব চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে।
৯ এপ্রিল: মার্কিন পণ্যে শুল্ক ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে চীন। ১২টি মার্কিন কোম্পানিকে ‘দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য’ পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ তালিকায় এবং আরও ছয়টি কোম্পানিকে অবিশ্বস্ত কোম্পানির তালিকায় যুক্ত করে। পরে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে শুল্ক ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। চীন সেদিনই নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে।
১০ এপ্রিল: চীন হলিউড চলচ্চিত্র আমদানিতে তাৎক্ষণিক সীমাবদ্ধতা ঘোষণা করে।
১১ এপ্রিল: চীন মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে এবং ট্রাম্পের শুল্ককৌশলকে ‘কৌতুক’ হিসেবে অভিহিত করে।
১৫ এপ্রিল: মার্কিন চিপ কোম্পানি এনভিডিয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের এইচ২০ চিপ চীনে বিক্রির ক্ষেত্রে রপ্তানি লাইসেন্স নিতে বলেছে।
১০-১২ মে: জেনেভায় দুই দেশের মধ্যে উচ্চ ঝুঁকির বাণিজ্য আলোচনায় ৯০ দিনের জন্য শুল্কযুদ্ধ বিরতির চুক্তি হয়। চীনের পণ্যে শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে যুক্তরাষ্ট্র; চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্কহার ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে আসে। ২ এপ্রিলের পর থেকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে আরোপিত অশুল্ক-বাধাও তুলে নেবে বলে জানায়।
২৮-২৯ মে: চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা ‘আগ্রাসীভাবে’ বাতিল করা হবে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। চীনে সেমিকন্ডাক্টর, ডিজাইন সফটওয়্যার ও বিমানের যন্ত্রাংশ পাঠানো বন্ধের নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
৩১ মে: ট্রাম্প অভিযোগ করেন, চীন জেনেভা চুক্তি ভঙ্গ করেছে। চীন পাল্টা অভিযোগ করে বলে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে একাধিক ‘বৈষম্যমূলক’ ব্যবস্থা নিয়েছে।
৫ জুন: প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও ট্রাম্প এক ঘণ্টা ফোনে কথা বলেন।
৯-১০ জুন: লন্ডনে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনা হয়, প্রাথমিক কাঠামোগত সমঝোতা হয়।
১১-১২ জুন: চীনের কিছু বিরল ধাতু ও চুম্বক উৎপাদক রপ্তানি লাইসেন্স পেতে শুরু করে। ট্রাম্প বলেন, বাণিজ্যবিরতি আবার সঠিক পথে ফিরেছে।
২৭ জুন: যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, বিরল ধাতু ও চুম্বক রপ্তানির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মতপার্থক্য মিটেছে।
৬ জুলাই: ব্রিকসের যেসব দেশ মার্কিন বিরোধী নীতি গ্রহণ করেছে, সেই দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর মধ্যে চীনও আছে।
১৫ জুলাই: যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিব স্কট বেসেন্ট জানান, এনভিডিয়ার এইচ২০ চিপ চীনে বিক্রির পরিকল্পনা মূলত বিরল ধাতুবিষয়ক সমঝোতার অংশ। সে কারণে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২৮-২৯ জুলাই: স্টকহোমে দুই দিনের আলোচনার পর ৯০ দিনের শুল্কবিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। বড় কোনো অগ্রগতি না হলেও আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ আখ্যা দেওয়া হয়।
১ আগস্ট: বেসেন্ট জানান, চীনের সঙ্গে চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী।
৮ আগস্ট: এনভিডিয়াকে এইচ২০ চিপ চীনে রপ্তানির লাইসেন্স দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১০ আগস্ট: চীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি চার গুণ করার আহ্বান জানান ট্রাম্প, ১২ আগস্টে শুল্কবিরতি শেষ হওয়ার ঠিক আগে এই আহ্বান জানান তিনি।
১১ আগস্ট: যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতি বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র চ ন য ক তর ষ ট র র ৯০ দ ন র আমদ ন ত ক র যকর র ওপর আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কযুদ্ধের ঘটনাক্রম, কবে কী ঘটল
আবারও শুল্কবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। গতকাল সোমবার আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতি বাড়িয়েছে তারা। ফলে পারস্পরিক পণ্যে তিন অঙ্কের শুল্ক আরোপ আপাতত ঠেকাতে পেরেছে তারা। এতে মার্কিন ক্রেতারা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। বছরের শেষ ভাগে বড়দিনের উৎসব। সেই উৎসব সামনে রেখে এই সময়েই সাধারণত ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতারা এখন মজুত বাড়ানোর প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, নির্বাহী আদেশবলে চীনের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের বিষয়টি ১০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
এখন যে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ করছেন ট্রাম্প, তার সূত্রপাত চীনের সঙ্গে। বলা যায়, চীনই ট্রাম্পের মূল লক্ষ্যবস্তু। সেই ২০১৬ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পরই ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেন। দেখে নেওয়া যাক, এ বছর যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও দিনক্ষণগুলো:
২১ জানুয়ারি: দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন পরই ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ১০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। অভিযোগ করেন—চীন থেকে ফেন্টানিল যুক্তরাষ্ট্রে আসছে।
১ ফেব্রুয়ারি: চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ এবং মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, এই দেশগুলোকে ফেন্টানিল ও অবৈধ অভিবাসনের প্রবাহ কমাতে হবে।
৪ ফেব্রুয়ারি: চীন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়; মার্কিন কোম্পানি, যেমন গুগল, কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারক ও ফ্যাশন ব্র্যান্ড ক্যালভিন ক্লেইনকে লক্ষ্য করে নানা পদক্ষেপ নেয় তারা। একই সঙ্গে মার্কিন কয়লা ও এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল ও গাড়ি আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এসব শুল্ক কার্যকর হয় ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রতিরক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অন্যান্য শিল্পে ব্যবহৃত পাঁচটি ধাতুর রপ্তানিও সীমিত করে তারা।
৩ মার্চ: যুক্তরাষ্ট্র সব চীনা আমদানিতে ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক দ্বিগুণ করে ২০ শতাংশ করে, কার্যকর হয় ৪ মার্চ থেকে।
৪ মার্চ: চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রপ্তানিতে পাল্টা ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। প্রভাব পড়ে প্রায় ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যে। একই সঙ্গে ২৫টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ওপর রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। চিকিৎসাযন্ত্র প্রস্তুতকারী ইলুমিনার জেনেটিক সিকোয়েন্সার আমদানি নিষিদ্ধ করে।
২ এপ্রিল: বিশ্বের ৫৭টি দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি দেশগুলোর ওপর ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্ক আরোপ। সেই দিনটিকে ট্রাম্প ‘স্বাধীনতা দিবস’ ঘোষণা করেন—সব আমদানিতে ভিত্তি ১০ শতাংশ এবং চীনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি। এই শুল্ক কার্যকর হয় ৯ এপ্রিল থেকে। এ ছাড়া ২ মে চীন ও হংকং থেকে কম মূল্যের চালানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার (ডি মিনিমিস ছাড়) বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
৪ এপ্রিল: সব মার্কিন পণ্যে চীন পাল্টা ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে (কার্যকর ১০ এপ্রিল থেকে), কিছু বিরল ধাতুর রপ্তানি সীমিত করে। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত ৩০টি মার্কিন সংস্থার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। কিছু মার্কিন কোম্পানির সরগম (শস্যজাতীয় খাবার), পোল্ট্রি ও বোনমিল (হারের গুঁড়া) আমদানিও স্থগিত করে।
৮ এপ্রিল: যুক্তরাষ্ট্র সব চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে।
৯ এপ্রিল: মার্কিন পণ্যে শুল্ক ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে চীন। ১২টি মার্কিন কোম্পানিকে ‘দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য’ পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ তালিকায় এবং আরও ছয়টি কোম্পানিকে অবিশ্বস্ত কোম্পানির তালিকায় যুক্ত করে। পরে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে শুল্ক ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। চীন সেদিনই নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে।
১০ এপ্রিল: চীন হলিউড চলচ্চিত্র আমদানিতে তাৎক্ষণিক সীমাবদ্ধতা ঘোষণা করে।
১১ এপ্রিল: চীন মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে এবং ট্রাম্পের শুল্ককৌশলকে ‘কৌতুক’ হিসেবে অভিহিত করে।
১৫ এপ্রিল: মার্কিন চিপ কোম্পানি এনভিডিয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের এইচ২০ চিপ চীনে বিক্রির ক্ষেত্রে রপ্তানি লাইসেন্স নিতে বলেছে।
১০-১২ মে: জেনেভায় দুই দেশের মধ্যে উচ্চ ঝুঁকির বাণিজ্য আলোচনায় ৯০ দিনের জন্য শুল্কযুদ্ধ বিরতির চুক্তি হয়। চীনের পণ্যে শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে যুক্তরাষ্ট্র; চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্কহার ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে আসে। ২ এপ্রিলের পর থেকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে আরোপিত অশুল্ক-বাধাও তুলে নেবে বলে জানায়।
২৮-২৯ মে: চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা ‘আগ্রাসীভাবে’ বাতিল করা হবে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। চীনে সেমিকন্ডাক্টর, ডিজাইন সফটওয়্যার ও বিমানের যন্ত্রাংশ পাঠানো বন্ধের নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
৩১ মে: ট্রাম্প অভিযোগ করেন, চীন জেনেভা চুক্তি ভঙ্গ করেছে। চীন পাল্টা অভিযোগ করে বলে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে একাধিক ‘বৈষম্যমূলক’ ব্যবস্থা নিয়েছে।
৫ জুন: প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও ট্রাম্প এক ঘণ্টা ফোনে কথা বলেন।
৯-১০ জুন: লন্ডনে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনা হয়, প্রাথমিক কাঠামোগত সমঝোতা হয়।
১১-১২ জুন: চীনের কিছু বিরল ধাতু ও চুম্বক উৎপাদক রপ্তানি লাইসেন্স পেতে শুরু করে। ট্রাম্প বলেন, বাণিজ্যবিরতি আবার সঠিক পথে ফিরেছে।
২৭ জুন: যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, বিরল ধাতু ও চুম্বক রপ্তানির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মতপার্থক্য মিটেছে।
৬ জুলাই: ব্রিকসের যেসব দেশ মার্কিন বিরোধী নীতি গ্রহণ করেছে, সেই দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর মধ্যে চীনও আছে।
১৫ জুলাই: যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিব স্কট বেসেন্ট জানান, এনভিডিয়ার এইচ২০ চিপ চীনে বিক্রির পরিকল্পনা মূলত বিরল ধাতুবিষয়ক সমঝোতার অংশ। সে কারণে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২৮-২৯ জুলাই: স্টকহোমে দুই দিনের আলোচনার পর ৯০ দিনের শুল্কবিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। বড় কোনো অগ্রগতি না হলেও আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ আখ্যা দেওয়া হয়।
১ আগস্ট: বেসেন্ট জানান, চীনের সঙ্গে চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী।
৮ আগস্ট: এনভিডিয়াকে এইচ২০ চিপ চীনে রপ্তানির লাইসেন্স দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১০ আগস্ট: চীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি চার গুণ করার আহ্বান জানান ট্রাম্প, ১২ আগস্টে শুল্কবিরতি শেষ হওয়ার ঠিক আগে এই আহ্বান জানান তিনি।
১১ আগস্ট: যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতি বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়।