জামায়াতের আমিরের সঙ্গে তুরস্কের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
Published: 6th, October 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বেরিস একিনচি। সোমবার বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জামায়াত আমিরের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াত জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করা, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মানবিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে তুর্কি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়। ভবিষ্যতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা আরও বেগবান হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
সাক্ষাৎকালে তুরস্কের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন ও ঢাকা সফররত তুরস্কের প্রতিনিধিদলের দুজন সদস্য। তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা জামায়াতের আমিরের কার্যালয়ে ছিলেন। এ সময় জামায়াতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
জানতে চাইলে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছে তুরস্কের প্রতিনিধিদল। জামায়াত তাদের ঐকমত্য কমিশনে গণভোট বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর একমত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানিয়েছে। পাশাপাশি যেসব বিষয়ে দলগুলো এখনো একমত হতে পারেনি, সেসব বিষয়ের কী হবে—সেটি জানতে চেয়েছে প্রতিনিধিদলটি। জামায়াত তাদের জানিয়েছে, ৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত রস ক র
এছাড়াও পড়ুন:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন কীভাবে হবে, সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়কে ‘যুগান্তকারী’ অভিহিত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে দলটি বলছে, এই রায়ের পর এই প্রশ্ন সামনে এসেছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি ত্রয়োদশ সংশোধনীর মতো করে হবে, নাকি জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে গঠিত হবে। এই অস্পষ্টতা সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জুলাই সনদের ব্যত্যয় করার সুযোগ নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দলের পক্ষ থেকে এসব কথা বলেছেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচন করেছিল হাসিনা সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় যুগান্তকারী উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের আমলে দেওয়া কলঙ্কজনক রায় থেকে দেশের বিচার বিভাগ ও জাতি মুক্তি লাভ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিলাম, দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। জুলাই সনদে এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু জুলাই সনদের আদেশে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ত্রয়োদশ সংশোধনীর মতো করে হবে, নাকি জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে গঠিত হবে—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ের পর এই প্রশ্ন সামনে এসেছে বলে উল্লেখ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই অস্পষ্টতা সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে হবে। কিন্তু বিভিন্ন দল, বিশেষ করে বিএনপি ত্রয়োদশ সংশোধনীতেই ফিরে যাওয়ার কথা বলছে। কিন্তু সেখানে যেভাবে এটা আছে, সেটা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানা ধরনের সংকট তৈরি করেছে, এক–এগারোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেই জায়গায় শুধু বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে জুলাই সনদে যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে গঠন করাই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতি। এর ব্যত্যয় করার কোনো সুযোগ নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।