তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে খোরশেদের গণসংযোগ
Published: 7th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে গণসংযোগ করছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রার্থী মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) শহরের কালীরবাজার এলাকায় এই লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।
এসময় কালীরবাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকানে ও ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠানে ঘুরে ৩১ দফা দাবী সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সাথে আলাপ আলোচনা করেন। এসময় ৩১ দফা সম্পর্কে সকলকে অবগত করেন এবং এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য আহ্বান জানান খোরশেদ।
এসময় খোরশেদ বলেন, বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান প্রমান করেছেন তিনিই আগামীর নিরাপদ বাংলাদেশ গড়বেন। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি ত্যাগ করে ন্যায় বিচারের কথা বলেছেন। আপনারা অন্ধ অনুসরণ করবেন না। আপনারা এই ৩১ দফা পড়ে দেখবেন। পরবর্তীতে যেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনারা মিলিয়ে দেখতে পারেন যে বিএনপি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে কিনা।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টরা গত ষোল বছরে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়েছেন। আপনারা ধানের শীষে ভোট দিয়ে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করবেন। তিনিই আগামীর নিরাপদ বাংলাদেশ গড়বেন।
তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল। এখানে অনেক যোগ্য লোক আছে। আপনারা মনে করবেন না আমরা নিজেদের মধ্যে সংঘাত করছি। এটা আমাদের মধ্যে প্রতিযোগীতা চলছে। তবে যিনিই ধানের শীষ মার্কা নিয়ে আসবে আমরা সকলে তাকেই বিজয়ী করবো।
এসময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা শাহজাহান খন্দকার, হারুন জামাল, আনোয়ার মাহমুদ বকুল, নুরুল হক চৌধুরী দিপু, রানা মুজিব, আক্তার হোসেন খোকন শাহ, শওকত খন্দকার, নাজমুল কবীর নাহিদ, জুয়েল রানা, সুমন ভূইয়া, মোঃ মুসা, ওসমান গনি, রানা মুন্সী, মোঃ মিঠু, কাওসার জুলহাস, জামাল হোসেন, নুরুল্লাহ খন্দকার, মাসুম খন্দকার, মাসুদ আহমেদ, রাজীব হোসেন সহ শতাধিক নেতাকর্মী।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ন র য়ণগঞ জ আপন র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় হত্যাকান্ডের শিকার নয়নের বিচ্ছিন্ন দু পা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ড্রামের ভেতর থেকে দু পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মোঃ নয়ন (৪৯) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা (৪০) তার দুই মেয়ে সুমনা (২০), সানজিদা (১৮) এবং পরকিয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল (৪৫) ও চয়ন (৪০)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে রাত ৯টার দিকে ফতুল্লার পিলকুনি প্রাইমারী স্কুলের বিপরীতে হিটলারের বাড়ির সামনে থেকে নিহত নয়নের বিচ্ছিন্ন দু পা উদ্ধার ও মানিক মিয়া (৩৫) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ফতুল্লার তক্কার মাঠ-নন্দলালপুর সড়কের দক্ষিন পাশে অবস্থিত মাওয়া মার্কেটের পেছনের ঝোপ থেকে নীল রঙের একটি ড্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। উদ্ধার হওয়া লাশের দু’পা হাটু থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। এই ঘটনায় পুলিশ রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। পরে রাসেলের স্বীকারোক্তি মতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকুড়ি দশ পাইপ এলাকা থেকে সাবিনা, তার দুই মেয়ে সুমনা,সানজিদা ও পরকিয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল সহ চয়ন কে গ্রেফতার করে। এবং রাত ৯টায় নয়ন মিয়াকে গ্রেপ্তার ও নিহতের বিচ্ছিন্ন দু পা উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নয়ন ফতুল্লার ননন্দলালপুর এলাকার মোঃ সালামের ছেলে। পেশায় মাদক কারবারি নয়ন একটি মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আড়াই বছর কারাভোগের পর গত ৮-১০দিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন তিনি।
এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেলের সঙ্গে নিহত নয়নের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার পরকীয়া প্রেম ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ওই ঘটনার জের ধরেই হত্যাকান্ডটি ঘটনানো হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নয়নের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, গাড়ি ছিনতাইসহ নানা অপরাধে ৮-১০টি মামলা রয়েছে। ৩-৪ বছর আগে নয়ন হেরোইনসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ঐ মামলায় নয়নের যাবজ্জীবন সাজা হয়।
নিহত নয়নের প্রথম স্ত্রী সাহিদা ফতুল্লার পিলকুনি এলাকার বাসীন্দা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ফতুল্লার ব্যাংক কলোনী এলাকায় বসবাস করেন। ৪-৫ বছর আগে নয়ন সাবিনাকে বিয়ের পর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়ে যায়। নয়নের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তি এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে নয়ন কারাগারে যাওয়ার পর সাবিনার সঙ্গে রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল নামে অপর এক মাদক কারবারির পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার বাসায় উঠে নয়ন। পরকিয়ার ঘটনাটি জানতে পারে নয়ন। এনিয়ে সাবিনার সঙ্গে নয়নের সম্পর্কের অবণতি ঘটে। তখন সাবিনা তার দুই মেয়ে ও রাসেল নয়নকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে লোক ভাড়া করে নয়নকে হত্যা করে। লাশ গুমের জন্য ড্রামের ভেতরে ভরতে সমস্যা হওয়ায় লাশের দু’পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে ড্রামে ভরা হয়। পরে সুযোগ বুঝে লাশটি রাতের বেলা মাওয়া মার্কেটের পেছনের ঝোপে ফেলে দেওয়া হয় বলেও পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই রেহানুল ইসলাম বলেন, ঝোপের ভেতরে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ড্রাম এবং এর ভেতর থেকে পঁচা গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রামের মুখ খুলে পলিথিনে মোড়ানো লাশ উদ্ধার করে। তবে লাশের দু’পা ছিল না। পুলিশ বিচ্ছিন্ন পা দু’টির সন্ধান করছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশটি মাদক ব্যবসায়ি মোঃ নয়নের। সে গত ৮-১০ দিন আগে জামিনে মুক্ত হয়ে এসে হত্যার শিকার হয়।ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। খুনের মোটিভ উদ্ধার এবং হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতার ও লাশের বিচ্ছিন্ন পা দু’টি উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।