চট্টগ্রামে বাসচাপায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, সড়ক অবরোধ
Published: 8th, October 2025 GMT
হাটহাজারী-রাউজান সড়কে বাসচাপায় নিহত হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা সুহেল চৌধুরী। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি এবং চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক অবরোধ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সকাল-সন্ধ্যা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
৬ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়ে নিহত
গতকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাতে হাটহাজারীতে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে বাস চাপায় গুরুতর আহত হন মাওলানা সুহেল চৌধুরী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকেই আজ বুধবার সড়ক অবরোধের ডাক দেন হেফাজত নেতারা।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি কামরুল ইসলাম বলেন, “আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাই আজ সকাল থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে অবরোধ করা হয়েছে।”
মুফতি কামরুল ইসলাম বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সময় দুইবার গুম করা হয়েছিল মাওলানা সুহেল চৌধুরীকে। মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেলে আসার সময় পেছন দিক থেকে সুপরিকল্পিতভাবে বাসচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নাছির মুনির বলেন, “মাওলানা সুহেল চৌধুরীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন অবর ধ ইসল ম ব
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকেরা চ্যাটজিপিটি থেকে কপি-পেস্ট করেন
শিক্ষা ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরেই নানা ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে। যুক্তরাজ্যের স্ট্যাফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন কোর্স ও লেকচার। এআই দিয়ে তৈরি কোর্স ও লেকচারের সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এআই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন কোর্সে সন্দেহজনক ফাইলের নাম ও অপ্রত্যাশিত ভয়েসওভার উচ্চারণ শোনা যায়। স্ট্যাফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, একটি কোর্সের বেশির ভাগ অংশ এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান ও পড়ানোর অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেমস ও ওয়েনসহ ৪১ জন শিক্ষার্থী ২০২৪ সালে স্ট্যাফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোডিং মডিউলের ওপর কোর্সে ভর্তি হন। এই কোর্সের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বা সফটওয়্যার প্রকৌশলী হওয়ার বিভিন্ন কৌশল শেখানো হয়। বাস্তবে দেখা যায়, কোর্সটিতে এআই দিয়ে তৈরি স্লাইড এক টার্ম ধরে পড়ানো হয়। মাঝে মাঝে একটি এআই ভয়েসওভার ব্যবহার করা হয়। শিক্ষার্থীরা এতে জীবনের দুই বছর নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এমন কোর্স সবচেয়ে সস্তা উপায়ে তৈরি করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
কোর্সের বেশ কিছু অংশ রেকর্ড করা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে এক অধ্যাপকের সঙ্গে বিতর্কের সময় জেমস বলেন, আমরা যদি ক্লাসে এআই দিয়ে তৈরি কিছু জমা দিতাম, তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হতো। অথচ আমাদেরই এআই দিয়ে পড়ানো হচ্ছে। জেমস ও অন্য শিক্ষার্থীরা এআই দিয় তৈরি লেকচার সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়কে বেশ ক’বার জানিয়েছে। যদিও দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় এখনো কোর্স শেখানোর জন্য এআই দিয়ে সামগ্রী ব্যবহার করছে। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় কোর্সের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি আপলোড করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এআই ব্যবহারের ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করছে সেখানে।
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা যদি তাঁদের বাড়ির কাজ বা ক্লাসে এআই ব্যবহার করেন তখন তাঁদের নীতি লঙ্ঘনে অভিযুক্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের এআই ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যদি কাজ করার জন্য এআই ব্যবহার করেন বা এআই দিয়ে তৈরি লেখাকে নিজেদের হিসেবে চালিয়ে দিলে তা একাডেমিক অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেমস বলেন, আমি আমার জীবন ও পেশাজীবনের মাঝামাঝি সময়ে আছি। আমার আরেকটি পেশা শুরু করার সময়ে নেই। আমি এই কোর্সে আটকে গেছি।
স্ট্যাফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। যুক্তরাজ্যের শিক্ষা বিভাগ এআই ব্যবহারকে শিক্ষার উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়েছে। একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩ হাজার ২৮৭ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রায় এক–চতুর্থাংশ তাঁদের শিক্ষাদানে এআই টুল ব্যবহার করছেন। শিক্ষকদের উপকারে এলেও এআই শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশাজনক হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের এআই ব্যবহারকারী অধ্যাপকদের সম্পর্কে অনলাইনে নেতিবাচক রিভিউ পোস্ট করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যাপকেরা চ্যাটজিপিটি থেকে কপি-পেস্ট করে পড়াচ্ছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান