বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শ্রম সংস্কারের জন্য কার্যকর সামাজিক সংলাপের গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “গঠনমূলক, ইতিবাচক এবং সক্রিয় ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই শ্রমখাতের যে কোনো বিরোধের টেকসই সমাধান সম্ভব।”

বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনের আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

উপদেষ্টা বলেন, “গত এক বছরে আমরা একাধিকবার শ্রমিক, মালিক ও উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে সামাজিক সংলাপ আয়োজন করেছি। সেই আলোচনার ভিত্তিতেই শ্রম আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে, যেখানে শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের প্রস্তাব এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।”

তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে আইএলওর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সনদ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কনভেনশন ১৫৫ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য), কনভেনশন ১৮৭ (প্রচারমূলক কাঠামো) এবং কনভেনশন ১৯০ (সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ)।

উপদেষ্টা বলেন, “এই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম খাতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।”

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস প্রসঙ্গে উপদেষ্টা কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ মালিকদের দায়িত্ব, সরকারের নয়। প্রয়োজনে মালিকদের নিজেদের সম্পদ বিক্রি করেও শ্রমিকদের পাওনা শোধ করতে হবে। যারা তা করবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমনকি পাসপোর্ট বাতিল ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা পর্যন্ত করা হতে পারে।”

উচ্চপর্যায়ের এই সম্মেলনে শ্রমিক-মালিক প্রতিনিধিসহ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন অংশীজন অংশ নেন। সম্মেলনে সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে শ্রম সংস্কার, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আইন সংশোধন ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা হয়।

সম্মেলনে সহযোগিতা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং কানাডা।

ঢাকা/এএএম/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সততা ও নৈতিকতার জাদুতেই দূর হবে দুর্নীতি: সালেহ আহমেদ

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, “সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা শুধু একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়; এটি সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা অর্জনের মূল চাবিকাঠি।”

তিনি বলেন, “আমরা যদি নিয়ম-নীতি মেনে এবং প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করি, তাহলে উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ দ্রুত, মানসম্মত ও টেকসইভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। ক্রয়ের ক্ষেত্রে সততা ও নৈতিকতার জাদুতেই দুর্নীতি দূর করা সম্ভব।”

আরো পড়ুন:

দুদকের মামলায় বরগুনা জেলা প্রশাসনের সাবেক নাজির কারাগারে

রংধনু গ্রুপের মালিকের বিলাসবহুল হোটেলসহ ৩৩ কোটি টাকা ক্রোক

বুধবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ‘সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা (পিপিআর-২০২৫)’ শীর্ষক লার্নিং সেশনে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন।

এএসএম সালেহ আহমেদ বলেন, “সরকার ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রোকিওরমেন্ট) চালু করে সরকারি ক্রয়ে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। দরপত্র আহ্বান থেকে শুরু করে মূল্যায়ন ও চুক্তি সম্পাদন—সবকিছুই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সম্পন্ন হচ্ছে। এর ফলে সময়, ব্যয় এবং অনিয়ম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রযুক্তির ব্যবহার যতই আধুনিক হোক না কেন, এর সঙ্গে নৈতিকতা, দক্ষতা ও সততার সমন্বয় না থাকলে তা পুরোপুরি কার্যকর হয় না। নীতিগত দুর্বলতা থাকলে কোনো ব্যবস্থাই সফল হতে পারে না।”

তিনি বলেন, “স্বচ্ছতা কেবল একটি প্রশাসনিক বিধান নয়, এটি একটি মূল্যবোধ। আমরা যদি এই মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, তবে সরকারি ক্রয়ে দক্ষতা, সাশ্রয় এবং জনগণের বিশ্বাস—এই তিনটি অর্জন করা সম্ভব হবে। ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আচরণে সত্যনিষ্ঠা, সততা, ন্যায়বোধ, দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি।”

সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে আইন, নীতি, পেশাগত মানদণ্ড ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সিনিয়র সচিব।

লার্নিং সেশনে প্রশিক্ষক মো. ফারুক হোসেন বলেন, “ভূমি মন্ত্রণালয়ই প্রথম ‘সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা (পিপিআর-২০২৫)’ শীর্ষক এই লার্নিং সেশনের আয়োজন করেছে।”

সেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এজেএম সালাউদ্দীন নাগরি, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিববৃন্দ ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ