Narayanganj Times:
2025-11-23@11:37:22 GMT

বাস্তব দর্শনে  যাহা বলে

Published: 8th, October 2025 GMT

বাস্তব দর্শনে  যাহা বলে

আপনার কথার দ্বারা মানুষের সম্মানহানি হচ্ছে না তো; আত্ম মর্যাদায় আঘাত হানছে না তো? কথা বলার সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল করা অত্যন্ত জরুরী; যদি তাই হয়, তাহলে আত্মসম্মান রক্ষার্থে মানুষ দূরে চলে যায় ও যাবে।

 লোক সম্মুখে কথার ছলে; মজার ছলে কাউকে খোঁচা দিয়ে কথা বলা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার স্বামীল ; এতে একজনের আত্মমর্যাদা ও সম্মান ক্ষুন্ন হয়। তখন ওই লোকটি তার আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে, সম্মান রক্ষার্থে বহুদূর চলে যায় ও যাবে। 

 উপরে উপরে সুনাম করা, আর তলে তলে দুর্নাম করা স্পষ্টত চোগোলখোরী; হেয় প্রতিপন্ন ও সম্মান নষ্ট করার জন্যই চোগোলখোরী করা হয়। মনে রাখা উচিত যে, কোন সময়ই চোগোলখোরী চাপা থাকে না ; যখন প্রকাশ পায়, তখন চোগলখোর থেকে মানুষ দূরত্ব বজায় রাখে ও রাখবে।

 কথা দেওয়া ও গোপন কথা মানুষের কাছে আমানত। যখন কথা দিয়ে কথা না রাখা ও গোপন কথা ফাঁস করে দেওয়া হয়, তখন আমানত ভঙ্গ হয়ে যায়। এমন ধরনের আমানত ভঙ্গ হওয়া মানে উদ্দেশ্য প্রমাণিতভাবে মানুষের সম্মানকে নষ্ট করা। আর এমন আমানত ভঙ্গকারীকে মানুষ ঘৃণা করে, দূরত্ব সৃষ্টি করে দূরে রাখে ও রাখবে।

 মানুষকে সম্মান করলে সম্মান পাওয়া যায়; না করলে নাই। যেখানে সম্মান নাই সেখানে মানুষ থাকে না। মানুষ সম্মান ও সুনামের কাঙ্গাল। তাই যেখানে সম্মান নাই  সেখানে দূরত্ব তৈরি হয় ও হবে।

অন্যের কথাকে সম্মান জানিয়ে তার কথা সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে হবে। অপর পক্ষে শ্রোতাকেও প্রশ্ন করা, কথা বলার সুযোগ করে দিতে হবে। কেউ প্রসঙ্গ তুলে দিল, আর কেউ বক্তৃতা দেওয়া শুরু করে দিল আবার প্রসঙ্গ তুলে দেওয়া লোকটি বক্তার বক্তব্যকে মাঝপথে থামিয়ে দিল; এর মানে বক্তার কথাকে অসম্মান করা, বক্তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা। এমন ক্ষেত্রে বক্তা ওই স্থান-কাল-পাত্র  থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় ও নিবে।

মানুষের শারীরিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক  অবস্থা যেমন সকলেরই এক নয় ; পৃথক পৃথক বা কাছাকাছি, তেমনি  মানুষের মন-মগজ, জ্ঞান- বুদ্ধি, চাল-চলন, বেশ-ভূষা, কৃষ্টি-কালচার, সামাজিকতা, সার্টিফিকেট-শিক্ষাও এক নয় ; পৃথক পৃথক বা কাছাকাছি। এখন উক্ত বিষয়গুলি নিয়ে মানুষে মানুষে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে কেউ কারো সাথে মিশে চলতে পারবে না; যদি তাই করে, তাহলে মানুষে মানুষে  বিভেদ সৃষ্টি হয়। যদি পারস্পরিক সম্মান বোধ রেখে চলা যায়, জ্ঞানী ও গুণীদের কদর করা যায়, সম্মান শ্রদ্ধার সাথে ভালোবাসা যায়, তাহলে মানুষের ভিতরে পারস্পরিক মেলবন্ধন গড়ে ওঠে, ঐক্য গড়ে ওঠে, সম্প্রীতি গড়ে ওঠে, বিভেদহীন সুন্দর একটি সমাজ গড়ে তোলা যায়। আমাদের সকলেরই মনে রাখা উচিত, মানুষ হল  একটি বৃক্ষের শাখা প্রশাখার মত; যেমন সকল শাখা প্রশাখা মূল কাণ্ড নিয়ে গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ ফলজ বৃক্ষ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকে শুধু দীর্ঘসূত্রতা নয়, দুর্নীতিও আছে: সিলেটে দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘দুদকে শুধু দীর্ঘসূত্রতা নয়, দুদকে দুর্নীতিও আছে।’ আজ রোববার দুপুরে সিলেটে দুদকের গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নগরের রিকাবীবাজার এলাকার কবি নজরুল মিলনায়তনে দুদকের সমন্বিত সিলেট জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া গণশুনানিতে ৭৩টি অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হয়। এতে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘যাঁরা সেবাদাতা, তাঁরা মূলত সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারী। সরকারি যত প্রতিষ্ঠান আছে, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ আছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সেই বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করে যাব। আমরা নিয়মিত রেইড করে যাচ্ছি। আমাদের এই হস্তক্ষেপে কিছুটা তো উপকার হচ্ছে।’

সিলেটের সাদাপাথর লুট কাণ্ডের ঘটনায় দুদকের প্রাথমিক প্রতিবেদনে রাজনীতিবিদদের নাম আসা–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদনের পর অনুসন্ধান শুরু করি। এটা তো সত্য যে সাদাপাথর সেখানে ছিল না। পরবর্তী সময়ে ফিরে এসেছে। দিস ইজ ট্রু। কিন্তু ছিল না, এটা তো সত্য। কাজেই এখানে যাঁরা জড়িত, তাঁদের নাম আপনারা আমাদের চেয়ে আরও বেশি করে জানেন, ভালো করেই জানেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আপনারা কী তাঁদের পার্লামেন্টে চান, নাকি চান না?’

এর আগে সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে দুদকের বিভাগীয় কার্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী হলফনামায় প্রার্থীদের দেশের সম্পদের পাশাপাশি বিদেশের সম্পদের হিসাব বিবরণী দিতে হবে। আমরা সম্পদের বিবরণী চাচ্ছি, সেখানে বিদেশি সম্পদের হিসাব না দিলে অন্যায় হবে। পাশাপাশি অনুপার্জিত সম্পদ যাঁদের থাকবে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ সময় দুদকের নানা সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, দুদকে তাঁর সহকর্মীরা অনেক দুর্নীতির তথ্য চাপা দেন, গণমাধ্যম তা করে না। দুদক বিচারকারী নয়। দুদকের দায়িত্ব মামলার তথ্য–উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করা। এর বিচার করবেন আদালত। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনে কৃষি সম্পত্তি ৫ দশমিক ২১ একর দেখিয়েছেন। পরে দুদকের অনুসন্ধানে ২৯ একর জমির সন্ধান পাওয়া যায়। সেই সময় দুদক বিষয়টি তদন্ত করে বের করলেও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর রিকাবীবাজার এলাকায় গণশুনানিতে অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সঞ্চালনায় গণশুনানিতে দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী অভিযোগের বিষয়ে নানা নির্দেশনা দেন।

গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিশ্বজিৎ দাস নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের লাইব্রেরিয়ান পদে কর্মরত শেখর দাস নামের এক ব্যক্তি সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। কিন্তু পরে চাকরি দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চেয়ারম্যান সাময়িকভাবে অভিযুক্ত কর্মচারীকে বরখাস্তের আদেশ দেন। পরে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া হাসপাতালে ১৫ টাকার টিকিট ২০ টাকা রাখা, টাকা ছাড়া শয্যা না দেওয়ার অভিযোগও করা হয়।

এ ছাড়া সিলেট পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ঘুষ লেনদেন ছাড়া পাসপোর্ট তৈরি করা যায় না বলে অভিযোগ করেন জহুর আলী নামের দক্ষিণ সুরমার এক বাসিন্দা। পাশাপাশি পাসপোর্ট কার্যালয়ের আশপাশের কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে ঘুষ লেনদেন হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্যাস সংযোগ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ করেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় গণশুনানিতে।

গণশুনানিতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা–উন–নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মু. মাসুদ রানা, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ