শুভ বিবাহ
বিবাহ গুঞ্জনে সুরেলা পাখিগুলো
গাইল প্রেমগান, গাইল নানা কথা
দুধারে রাস্তার বাহারি তৃণলতা
বলল ফিসফিস, বলল ব্যাকুলতা
বাতাসে ফুল ঘ্রাণ, ফুটছে গাঁদা ফুল
শিশির কার্তিকে সন্ধ্যা এসে গেল
মনেতে ঝরঝর, মন কি প্রবাহিত?
সদ্য ফোটা ফুল, হবে যে বিবাহিত
বিবাহ শুভ হবে, বিবাহ মধুরতা
বাতাসে গান ভেসে শোনাবে চতুরতা
সুরেলা পাখিগুলো বিবাহ গুঞ্জনে
শেখাবে তাল–লয়, শেখাল বোঝাপড়া
হাওয়াতে ভেসে তাই, তুমি যে বিবাহিত
তোমাকে দূরে ঠেলে, কান্না পায় খালি
কান্না পায় খালি, মন কি প্রবাহিত?
সদ্য ফোটা ফুল, হলো যে বিবাহিত
মুগ্ধ হওয়া শেষ হলে সেই ঘোরতর সমাহার
ফেরত পাঠাই তাকে, যা যা ছিল, তার যত মনোযোগ
গৃহলতা ঘিরে ঋতুভেদে ঘরে ঢোকা আধো আলো–রোদ
কতিপয় কটু কথা তাকে বলে ফেলে
সারা নিশি তারকারাজির সাথে জাগি
ভাবি, শীতরাতে আমি বুঝি টাকি মাছ
রাঁধুনীর হাতে গরিব দেহের আয়ুটুকু হলো শেষ!
তুরীয় প্রেমের অবসানে তাই, মুখ দেখাদেখি নাই।
কাঁচা রোদের নরম রংটুকু,
তোমাকে নিয়ে দেখতে চাই সোনা!
গ্রাম সালিসি ঘটার আগেভাগে
বলতে চাই অনেক চুপকথা
ধানের খেতে, আইলে বসে থেকে
ধানের গুণ তার ধর্মমতে
পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিয়ে গেলে
মন চাইলে হাঁটতে যাব, আর
ভরা বিকেলে, ঝরবে শুধু শুধু
ঘন কুয়াশারেখা
ধু ধু ধোঁয়াশা ছাড়া যে কিছু নাই
সে খিলখিল চোখা হাসিতে তাই
এ মন চায় তোমার দেখাটুকু
যে বিকেলের পরপরই লাগে
সারাক্ষণ ঠান্ডা হিম হিম!
বিরল সেই শূন্য সাদা দিনে
ঝগড়া ভুলে মোরা গাইব গীত
মোরা দুলব রে ছাতিমের ঘ্রাণে
তা তা থই থই বলে নাচব, সোনা!
খোয়াব ব্যতীত তুমি নাই
ফলত সন্দেহ হয়, জাপটে ধরা মানবহৃদয়
ভয় নিয়ে তবু ভাবে ভববন্ধনের সব কথা
হেমন্তের বিকিরিত আলো
ঘুমের ভেতর ভালো লাগে
সবজির দাম কমা শীত দেখি,
কিঞ্চিৎ খোয়াবে
দেখি, ধবধবে সাদা মুলা তিতপুঁটিসহ রেঁধে
লাঞ্চ বক্স নিয়ে যাও ভালো আর মন্দে
শরীরের ছন্দ ভালো নেই
তাল–লয় জেনে–বুঝে শ্বাস নিতে কষ্ট!
প্রেশারের ওঠানামা টের পেলে
প্রতিরোধে দিই তাকে লাঞ্চ বক্স, তাকে দিতে থাকি
ভবদুনিয়ার টেলিপ্যাথি।
অনেক বিপ্লব জমা পড়ে আছে মনে।
হাত ধরে হাটে গিয়ে মাছ কিনে ঘরে ফেরা রাত
ফিরে যদি পাই, মনে হবে
তরতাজা ছাতিমের মতো শুয়ে থাকা
ও-শয়নভঙ্গি
স্বর-ছন্দে যতবার হয়েছে সাক্ষাৎ
পালিত পাখির মতো যত দিন তার
বুকজুড়ে থেকেছি গোপন
মধু মধু ছিল সেই সব
যৌথতার দিনগুলো রান্নার আনন্দে মেতে ছিল
ভাবলেই মনে হয়, তেল–নুন–ঝালে কতকাল দেখা নেই তার
বন্যাকবলিত গ্রামে কচু ফুল হয়ে ফুটে ছিলাম আমরা
যেন ছিলাম কাদামাখা বোরো ধানের আইলে
মাথা বের করা টাকি মাছ
বহুবার নিষেধ না মেনে দুইজন
খেয়েছি গন্দম
দুনিয়ার দুই মেরু প্রান্তে
হয়েছি নিক্ষিপ্ত
ঠিকঠাক ফুটে উঠবার আগে আমাদের মন
নিশিদিন হয়েছে অঙ্গার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুগল তৈরি করছে শক্তিশালী এআই চিপ
চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার আধিপত্য ভাঙতে গুগল চিপ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। গুগল এখন পর্যন্ত তাদের তৈরি সবচেয়ে শক্তিশালী এআই চিপ তৈরি করছে। সপ্তম প্রজন্মের টেনসর প্রসেসিং ইউনিট (টিপিইউ) চিপকে ‘আয়রনউড’ নামে ডাকা হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গ্রাহকেরা এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
গত এপ্রিলে সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে আয়রনউড চালু করে গুগল। সেই চিপ পূর্ণাঙ্গভাবে বাজারে আনার জন্য দ্রুত কাজ করছে গুগল। সম্পূর্ণ নিজস্ব নকশায় তৈরি টিপিইউ চিপ বড় আকারের মেশিন লার্নিং মডেলের প্রশিক্ষণ ও চ্যাটবট বা ডিজিটাল সহকারীর মতো বাস্তবসম্মত সেবা পরিচালনার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
গুগলের দাবি, একসঙ্গে ৯ হাজার ২১৬টি টিপিইউ সংযুক্ত করে একটি বিশেষ ‘পড’ তৈরি করা যায়। এই পড ব্যবহার করে বৃহত্তম ও তথ্যনির্ভর এআই মডেল চালানোর সময় ডেটা বটলনেক বা তথ্যপ্রবাহের জটিলতা কার্যত দূর হয়ে গেছে। আয়রনউড আগের প্রজন্মের টিপিইউ চিপের তুলনায় চার গুণ বেশি কাজ করতে পারে। এআই প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিক ক্লড নামের ল্যাংগুয়েজ মডেল পরিচালনার জন্য প্রায় ১০ লাখ গুগলের আয়রনউড চিপ ব্যবহার করবে।
বর্তমানে এআই বাজারে আধিপত্য বিস্তারে গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন ও মেটার মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্রভাবে চলছে। এখনো বেশির ভাগ বড় ল্যাংগুয়েজ মডেল এনভিডিয়ার জিপিইউ–নির্ভর। গুগলের টিপিইউর মতো নিজস্ব নকশার চিপও বেশ দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এসব চিপ দক্ষতা, গতি ও খরচ সাশ্রয় তিন ক্ষেত্রেই বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। নতুন চিপের পাশাপাশি গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্মে আনা হচ্ছে নানা আপগ্রেড। গুগল জানায়, তাদের সেবাকে আরও দ্রুত, সাশ্রয়ী ও নমনীয় করা হচ্ছে।
ক্লাউড বাজারে গুগল অ্যামাজন ও মাইক্রোসফটের বেশ পেছনে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে গুগল ক্লাউডের আয় ছিল ১৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধির। গুগল জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে গত দুই বছরের চেয়ে বেশি বিলিয়ন ডলারের ক্লাউড চুক্তি সই হয়েছে। বাড়তি চাহিদা মেটাতে ৯৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে। গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই বলেন, ‘আমরা আমাদের এআই অবকাঠামো পণ্যের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করছি। সেটা টিপিইউ–ভিত্তিক হোক বা জিপিইউ–ভিত্তিক। গত এক বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধির অন্যতম বড় চালিকা শক্তি এটি। ভবিষ্যতে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে গুগলের।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া