কোমরের ব্যথা কমাতে এক বৃদ্ধার কাণ্ড চীনের বাসিন্দাদের চোখ কপালে তুলে দিয়েছে। চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের বাসিন্দা ওই নারীর নাম ঝ্যাং। তাঁর পুরো নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এই বৃদ্ধার বয়স ৮২ বছর। এই বয়সে কমবেশি সবাই নানা রোগে আক্রান্ত হন, শরীরে ব্যথা-বেদনা হয়। ঝ্যাংও কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত, তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে। এ কারণে কোমরের নিচে প্রচণ্ড ব্যথায় তাঁর জন্য দিন দিন হাঁটাচলাই দায় হয়ে পড়ছিল।
একদিন কারও কাছ থেকে ঝ্যাং শুনতে পান, জীবন্ত ব্যাঙ গিলে খেলে শরীরের ব্যথা কমে। যন্ত্রণাকাতর এই বৃদ্ধা অন্ধবিশ্বাস থেকে পরিবারের সদস্যদের তাঁকে ব্যাঙ ধরে দিতে বলেন। কেন তিনি জীবন্ত ব্যাঙ ধরে দিতে বলেছেন, তা গোপন করে যান।
এরপর এই চীনা নারী প্রথম দিন তিনটি এবং পরদিন আরও পাঁচটি ছোট ছোট জীবন্ত ব্যাঙ গিলে খেয়ে ফেলেন। প্রথমে পেটে খানিকটা অস্বস্তি হচ্ছিল। কয়েক দিন পর পেটে তীব্র ব্যথা শুরু হয়।
ব্যথা যখন সহ্যের বাইরে চলে যায়, তখন ঝ্যাং পরিবারকে জীবন্ত ব্যাঙ খাওয়ার কথা জানান। মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন তাঁর ছেলে।
চোখ কপালে তোলা এই কাণ্ড ঘটেছে গত মাসের শুরুর দিকে। মাকে হাসপাতালে নিয়ে তাঁর ছেলে চিকিৎসকদের বলেন, ‘আমার মা আটটি জীবন্ত ব্যাঙ খেয়ে ফেলেছেন। প্রচণ্ড ব্যথায় এখন তিনি হাঁটতেও পারছেন না।’
নানা পরীক্ষার পর ঝ্যাংয়ের শরীরে পরজীবীর সংক্রমণ শনাক্ত হয়। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যাঙ গিলে খাওয়ার কারণে রোগীর পাচনতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর শরীরে কিছু পরজীবী বাসা বেঁধেছে।’
দুই সপ্তাহ চিকিৎসার পর ওই নারী কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
হাংঝৌ হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক উ ঝংওয়েন বলেন, এমন ঘটনা বিরল নয়। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা কয়েকজন এমন রোগী পেয়েছি। তাঁদের কেউ ব্যাঙ গিলে খেয়েছেন, কেউ তাজা সাপের পিত্ত বা কাঁচা মাছের পিত্ত খেয়েছেন, কেউ ব্যাঙের চামড়া নিজেদের ত্বকে লাগিয়েছেন।’
এ ধরনের রোগীদের বেশির ভাগই প্রবীণ। তাঁরা নিজেদের স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো পরিবারকে খুব কমই জানান। সাধারণত গুরুতর অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ বন ত ব য ঙ
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে পাখি শিকারিকে কারাদণ্ড
শেরপুরে বক ও পাখি শিকারের অপরাধে এক ব্যক্তিকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার ধলাকান্দা এলাকায় ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই শিকারির নাম মো. উকিল মিয়া (১৯)। তিনি সদর উপজেলার চান্দের নগর মৃত সামিদুল মিয়া ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধলাকান্দা গ্রামের নিচু এলাকার ধানক্ষেত ও বিলের ধারে হালা (দেশীয় পাখি ধরার ফাঁদ) দিয়ে দেশীয় বক শিকার চলে আসছিল এবং প্রকাশ্যে বক বিক্রিও হচ্ছিল।
পরে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে হালা ও ছয়টি বকসহ এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা ঘোষণা করা হয়।
এসময় শেরপুরের বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. আব্দুল্লাহ আল আমিনসহ বন বিভাগের বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে জনগণকে পাখি শিকার বন্ধে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, “বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এর ৬ ধারা লঙ্ঘন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ পাওয়ায় সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে।”
ঢাকা/তারিকুল/এস