গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর মানে হলো, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশের অর্থনীতি বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত অর্থবছরের জিডিপির প্রান্তিকভিত্তিক হিসাব প্রকাশ করেছে। সেখানে এপ্রিল–জুন প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে। চলতি অর্থবছরের কোনো প্রান্তিকের জিডিপির হিসাব দেয়নি বিবিএস।

বিবিএসের হিসাব অনুসারে, গত অর্থবছরের চার প্রান্তিকের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে। ওই প্রান্তিকে মাত্র ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিগত অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর–ডিসেম্বর) ও তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি–মার্চ) প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

বিবিএসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ওই সময়ে (২০২৪ সালের জুলাই–সেপ্টেম্বর) অভ্যুত্থানের সময় স্বাভাবিক ব্যবসা–বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। এ ছাড়া আগস্টের শুরুতে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরও অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে। এসব কারণে প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে এবং শেষ প্রান্তিকেও ব্যবসা–বাণিজ্যে শ্লথগতি ছিল।

কৃষি, শিল্প ও সেবা—সব খাতেই কমেছে

কৃষি, শিল্প ও সেবা—এই তিন খাত দিয়ে জিডিপি প্রকাশ করা হয়। গত এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে সেবা খাতে। এই খাতের প্রবৃদ্ধি মাত্র ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এরপর শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১০ শতাংশ এবং কৃষি খাতে ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বিবিএসের তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছরের এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে দেশের ভেতরে স্থির মূল্যে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়। আগের প্রান্তিকে (জানুয়ারি–মার্চ) এর পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৯২ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে যথাক্রমে ৮ লাখ ৪ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা ও ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়েছিল।

চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির যা পূর্বাভাস

এদিকে গত মঙ্গলবার চলতি অর্থবছরে (২০২৫–২৬) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যদি চলমান সংস্কারগুলো হয়, তবে আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর আরেক দাতা সংস্থা এডিবি চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। অন্যদিকে সরকার চলতি অর্থবছরে সাড়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব দ ধ ৪ দশম ক ব ব এস

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ হাজার কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক স্পর্শ করল ট্রাস্ট ব্যাংক

বেসরকারি খাতের ট্রাস্ট ব্যাংকের আমানত ৫০ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক অতিক্রম করেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। কেক কেটে এই অর্জন উদ্‌যাপন করেছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গত এক বছরে ব্যাংকটি তাদের সেবার বিস্তৃতি বাড়িয়েছে। এ জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠানের বেতন হিসাব ট্রাস্ট ব্যাংকে চালু করেছে। এর ফলে ৯ মাসে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত বেড়েছে ব্যাংকটির।

এ বিষয়ে ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া আমরা দেশজুড়ে আমাদের নেটওয়ার্ক বাড়ানো চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমেও গ্রাহকদের আরও কাছাকাছি সেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ফলে ছোট ছোট আমানতকারীরা আমাদের ব্যাংকে টাকা জমা করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের বেতন আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে হচ্ছে। সব মিলিয়ে তাই আমাদের আমানতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’

আহসান জামান চৌধুরী জানান, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) ব্যাংকের যে আমানত বেড়েছে, তার মধ্যে ৬২ থেকে ৬৩ শতাংশই খুচরা গ্রাহকদের। বাকিটা করপোরেট ও এসএমই গ্রাহকদের।

জানা যায়, ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৪৪ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকায়। ফলে ৯ মাসে নিট আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৩৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে যা ২২ শতাংশ বেড়ে হয় ৪৪ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকটির ঋণ ছিল ৩৩ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সাল শেষে বেড়ে হয় ৩৭ হাজার ৮২৪ কোটি টাকায়।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের নয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত বেড়েছে গত মার্চে। ওই মাসে এক হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা আমানত বেড়েছিল ব্যাংকটির। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমানত বেড়েছে গত মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ২৬২ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের। এই নয় মাসের মধ্যে সব মিলিয়ে চার মাস হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত বেড়েছে ব্যাংকটির। মার্চ ও সেপ্টেম্বর ছাড়া বাকি দুই মাস হলো মে ও জুন। এর মধ্যে মে মাসে ১ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা এবং জুনে ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে।

ট্রাস্ট ব্যাংক সম্প্রতি ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর অনুমতিপত্র পেয়েছে। বন্ডটির নাম টিবিএল অষ্টম সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্প্রতি ব্যাংকটিকে এই বন্ড ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা এই ব্যাংকটির গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুগলে পাঁচ নোবেলজয়ী: সহকর্মীদের সাফল্যে গর্বিত সুন্দর পিচাই
  • ভারতের গোদরেজের সাম্রাজ্য পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাইরিকা হোলকার
  • ‘অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের নির্মাণশৈলী উন্নত করতে হবে’
  • রেলের কেনাকাটায় ৪ কোটি টাকা নয়ছয়, অনুসন্ধানে দুদক
  • ইনডেক্স অ্যাগ্রোর পর্ষদ সভা ১৬ অক্টোবর
  • ৫০ হাজার কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক স্পর্শ করল ট্রাস্ট ব্যাংক
  • তিন মাসে কনটেইনার পরিবহন বাড়ল ১২ শতাংশ
  • চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪.৮%, পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
  • কুষ্টিয়ায় লটারিতে হারা প্রার্থী জিতলেন আদালতের গণনায়