ভেদাভেদ ভুলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে: দুলু
Published: 11th, October 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। বিএনপির নেতাকর্মীদের এখন সব ভেদাভেদ ভুলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপির বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।”
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে নাটোর সদরের ছাতনীর আগদীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
জনতা চায় নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, এটিই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল
পাশের দেশে পালান ব্যক্তিকে ফেরাতে সুড়ঙ্গ তৈরির চেষ্টা চলছে: রিজভী
দুলু বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হলে বিএনপি গতিশীল হবে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত বিএনপি আগামী দিনে এককভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে। কোনো ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলের নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করতে হলে দলের নেতাকর্মীদের আর ঘরে বসে থাকলে চলবে না। প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারণা চালাতে হবে। বিএনপি সবসময় মানুষের বিপদে পাশে থাকে। এখনো সব মানুষের পাশে থাকতে হবে। দলকে গতিশীল করতে দলের ছোট-বড় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী কাজে মাঠে ময়দানে ছড়িয়ে পড়তে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কারণে দেশের তরুণ সমাজ জীবনে কখনো ভোট দিতেই পারেনি। তরুণ সমাজ জীবনে প্রথম ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই তরুণ সমাজের কাছে ধানের শীষের কর্মীদের ছুটে যেতে হবে। প্রতিটি ভোটারের কাছে গিয়ে বিএনপির ৩১ দফা তুলে ধরতে হবে।”
বিএনপি নেতা বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, সাইফুল ইসলাম আফতাব, সদস্য নাসিম উদ্দীন নাসিম, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র কাজী শাহ আলম, সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল হাই তালুকদার ডালিম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/আরিফুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ন ত কর ম ব এনপ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘খুব টেনশন হচ্ছে, কীভাবে গন্তব্যে যাব?’
ঢাকায় যাবেন নির্মাণশ্রমিক রঞ্জু মিয়া। তাই ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা রাধাকানাই থেকে আজ রোববার সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে শহরের মাসকান্দা বাস টার্মিনালে আসেন। কিন্তু এসে দেখেন ঢাকার উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। তাই ঢাকায় যাওয়া হয়নি তাঁর।
জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার জেরে ময়মনসিংহে এনসিপির নেতা-কর্মী ও পরিবহনশ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচির পর এখনো ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। আজ রোববার সকাল থেকে ময়মনসিংহ থেকে সব ধরনের বাস বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিক ও নেতারা। এতে বিপাকে পড়েছেন রঞ্জু মিয়ার মতো বহু মানুষ।
রঞ্জু মিয়ার প্রশ্ন, যানবাহনের মালিক-শ্রমিকেরা নিজেদের দাবি–দাওয়া নিয়ে কথা বলবে প্রশাসনের সঙ্গে। কিন্তু বাস বন্ধ করে দিয়ে যাত্রীদের কেন ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে?
আরও পড়ুনঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল করছে না, নতুন করে আন্তজেলা বাসও বন্ধ ৪ ঘণ্টা আগেসমস্যার শুরু গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। এনসিপির হালুয়াঘাট উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হানকে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক লাঞ্ছিত করেছেন—এমন অভিযোগে এনসিপির নেতা-কর্মীরা গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ময়মনসিংহের মাসকান্দা বাস টার্মিনালে অবস্থান নেন। আর এনসিপি নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি ও এক শ্রমিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বিক্ষোভে নামেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এতে ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
এরপর গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসন শ্রমিক নেতা ও এনসিপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হকের (শামীম) মালিকানাধীন ইউনাইটেড পরিবহনের ১৬টি গাড়ি বন্ধ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে এনসিপি নেতারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। আর গাড়ি চলাচলে কেউ বাধা দেবেন না—এমন আশ্বাসে শ্রমিকেরাও গতকাল বিকেলে সড়ক থেকে সরে যান। কিন্তু বিকেল পাঁচটা থেকে ইউনাইটেড পরিবহনের ৭০টি ও শৌখিন এক্সপ্রেসের ১৫০টি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর আজ রোববার সকালে ময়মনসিংহ থেকে সব বাস বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিক ও নেতারা।
ময়মনসিংহ নগরের মাসকান্দা বাস টার্মিনাল, দীঘারকান্দা বাইপাস ও পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের চিত্র। বাস না পেয়ে অনেকে অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানে গন্তব্যের দিকে রওনা হন। আবার অনেকে বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। তাঁদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবায়েত জাহান।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে কথা হয় রুবায়েতের সঙ্গে। তিনি জানান, আজ থেকে তাঁর ক্লাস শুরু। কিন্তু মাসকান্দা বাস টার্মিনালে এসে দেখেন বাস চলছে না। তাই বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে।
ছোট ভাই রাফিউর হাসানকে টঙ্গীর মাদ্রাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন জুনায়েদুল ইসলাম। সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি বলেন, ‘তারাকান্দা থেকেও কোনো বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছে না। ভেঙে ভেঙে এখানে এসেছি। কিন্তু এখান থেকেও বাস যাচ্ছে না। সে কারণে খুব টেনশন হচ্ছে, কীভাবে গন্তব্যে যাব?’
নগরের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকা হয়ে ঢাকাগামী যানবাহন চলাচল করে। সেখানে গিয়েও দেখা যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে বহু মানুষ। কিন্তু কোনো বাস নেই।
মাসকান্দা বাস টার্মিনালে দেখা যায়, ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারের সামনে ব্যানার টানিয়ে শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। সেখানে ব্যানারে লেখা, ‘পরিবহনশ্রমিকদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার দাবিতে অনশন ধর্মঘট। মিথ্যা অপবাদে শ্রমিকের পেটে লাথি মারা মানব না। ষড়যন্ত্র করে গাড়ি বন্ধ করা চলবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার চাই। শ্রমিক ও যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।’
দাবির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পেয়ে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এসেছিলেন বলে জানিয়ে জেলা এনসিপির সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমার কোনো পরিবহন বন্ধের পক্ষে নই, শুধু ফ্যাসিস্ট শামীমের ১৬টি গাড়ি আমরা বন্ধের পক্ষে। কিন্তু তাঁরা (পরিবহনশ্রমিক ও মালিকরা) কেন ফ্যাসিস্টের পক্ষে সব গাড়ি বন্ধ রেখেছেন, তা বোধহগম্য নয়। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে তাঁরা এখানে একটি ষড়যন্ত্র করছেন।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাস চলাচল বন্ধ রাখা মালিকদের সিদ্ধান্তের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আলোচনা করছেন।
ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচলের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত সেল ময়মনসিংহ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতারা। শনিবার বিকেল চারটায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে