খুমেক হাসপাতালে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা
Published: 11th, October 2025 GMT
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনে তথ্য সংগ্রহ বা ছবি তুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) হাসপাতালের পরিচালক ডা. কাজী মো. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। দুই দিন পর আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) বিষয়টি সাংবাদিকেরা জানতে পারেন।
আরো পড়ুন:
‘সঠিক চিকিৎসা নিলে স্তন ক্যানসার থেকে বাঁচা সম্ভব’
রাজশাহীতে বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৫
খুমেক হাসপাতালের এই আদেশে সাংবাদিকরা নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। একই সঙ্গে অবিলম্বে এ আদেশ প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন।
খুমেক হাসপাতালের অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিচালকের অনুমতি ছাড়া কিছু মিডিয়াকর্মী হাসপাতালের ভেতরে রোগীদের ছবি তুলছেন, যা কাম্য নয়। এতে রোগী এবং চিকিৎসক উভয় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালে রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এমতাবস্থায় কোনো মিডিয়া ব্যক্তি পরিচালকের লিখিত অনুমতি ছাড়া হাসপাতালের ইনডোর বা আউটডোরে ছবি তোলা বা কারোর সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না।
সম্প্রতি হাসপাতালে ‘বকশিশ না পেয়ে রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেয় হাসপাতালটির এক ক্লিনার, এতে ওই রোগীর মৃত্যু হয়’ সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার মুখে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও হাসপাতালে ডাক্তারের ধমকে রোগীর স্বজনের মৃত্যু, ক্যানসার রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়া, রান্নাঘর থেকে রোগীদের জন্য বরাদ্দ খাবার পাচার, দালালের দৌরাত্ম্যসহ নানা অভিযোগে জর্জরিত এ হাসপাতালটি। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
খুলনায় কর্মরত সাংবাদিকেরা বলছেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই সাংবাদিকরা কাজ করেন। সাংবাদিকরা জনগণের চোখ ও কণ্ঠস্বর। সংবাদ সংগ্রহে অনুমতি চাওয়ার নিয়ম চাপিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, গণমাধ্যমের কাজের গতি ও স্বাধীনতা রুদ্ধ করা। এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনিয়ম আড়ালে থেকে যাবে। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা শুধু তথ্যপ্রবাহই নয়, গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্যও হুমকি। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক ডা.
খুলনা প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল বলেন, ‘‘এ নিষেধাজ্ঞা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের নামান্তর বলে মনে করি। তারা সরকারকে বিব্রকতকর পরিস্থিতিতে ফেলছেন। অবিলম্বে খুমেক হাসপাতালের পরিচালকের অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’’
খুলনা টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, পেশাজীবী সাংবাদিক সুরক্ষা মঞ্চ, খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানান হয় এবং সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জোটে গেলেও শাপলা প্রতীকে নির্বাচন করবে এনএসপি: সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘`বাংলাদেশের স্বার্থে এনসিপি এককভাবেও আগামী নির্বাচনে যেতে পারে। আবার কোনো অ্যালায়েন্সের মধ্য দিয়েও নির্বাচনে যেতে পারে। তবে, যদি সেটা অ্যালায়েন্স হয়; তাহলে এনসিপি নামেই নির্বাচন করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব।’’
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে জামালপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলার সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
কিছু উপদেষ্টার চরিত্রের শেষ দেখতে চান সারজিস
শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব, অন্য অপশন নেই: সারজিস
শাপলা প্রতীক নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশের আইন অঙ্গন থেকে শুরু করে যারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন, সবার সঙ্গে কথা বলেছি। শাপলা প্রতীক দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।’’
তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আইনগত বাধা নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করি, আমাদের সঙ্গে অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে, এমন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ করবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা শাপলা প্রতীক পাব এবং সেই প্রতীকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’’
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির সম্মতি আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘‘জুলাই সনদের বাস্তবায়নের ভিত্তি ও নিশ্চয়তা পেলে এবং গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দৃশ্যমান হলে এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনে আমাদের আপত্তি নেই।’’
এ সময় এনসিপি উচ্চ কক্ষে পিআরের পক্ষে থাকলেও নিম্ন কক্ষে পিআরের পক্ষে নয় বলে জানান তিনি।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জামালপুর জেলার প্রধান সমন্বয়ক লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম।
ঢাকা/শোভন/রাজীব