সুপারিশে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সময় বেঁধে দেওয়ার চিন্তা
Published: 13th, October 2025 GMT
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান–সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী সংসদ গঠিত হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে—সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে নিজেদের সুপারিশে এটি রাখার বিষয়টি কমিশনের বিবেচনায় আছে। আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনে এই সময় আরও বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে বলে কমিশন–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও ভোটের সময় এবং পথ–পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশন এখনো তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করেনি। তারা এটি নিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য দল তিনটির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করছে কমিশন।
ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে কিছু প্রস্তাবে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত আছে। সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য হলেও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো একমত হতে পারেনি।গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দলগুলো একমত। এখন কিসের ভিত্তিতে গণভোট হবে, গণভোটে কী কী বিষয় থাকবে এবং গণভোট কখন হবে—মোটাদাগে এই তিন বিষয় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে।
রাজনৈতিক ঐকমত্য না হওয়ায় কমিশন বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের কাছে নিজেরা সুপারিশ দেবে। তবে এটি সনদের অংশ হবে না। আগামী ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর আগে আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার কমিশন তাদের সুপারিশ সরকারকে দেবে।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ স্বাক্ষরে প্রস্তুত বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি, আছে ভাবনাও ১১ অক্টোবর ২০২৫ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে কিছু প্রস্তাবে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত আছে। সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য হলেও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো একমত হতে পারেনি। গণভোটের সময় (জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে নাকি আগে হবে), কিসের ভিত্তিতে গণভোট হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, আগামী সংসদ গঠিত হওয়ার কত দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন করা হবে—এসব বিষয়ে রাজনৈতিক মতভিন্নতা আছে।
কিসের ভিত্তিতে গণভোট হবে, গণভোটে কী কী বিষয় থাকবে এবং গণভোট কখন হবে—মোটাদাগে এই তিন বিষয় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে।গণভোটের আগে ‘বিশেষ আদেশ’জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, কমিশন মনে করছে, গণভোট করতে হলে আগে একটি বিশেষ আদেশ জারি করতে হবে। এটি হবে গণভোটের ভিত্তি। গণভোট কবে হবে—সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ছেড়ে দিতে চায় কমিশন। বিষয়টি ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকেও অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়টি দলগুলো মেনে নেবে বলে আশা করছে কমিশন।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামতে সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও এই দাবি আছে। যেমন জামায়াতে ইসলামী বলেছে, আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনে এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে; প্রথম অধিবেশন হবে সংবিধান সভা।
সংসদ গঠিত হওয়ার বা আগামী সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করার সময় বেঁধে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে এ সময় আরও বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে।যে কারণে সময় বেঁধে দেওয়ার চিন্তাঐকমত্য কমিশনের দুটি সূত্র থেকে জানা গেছে, কমিশন মনে করে আগামী সংসদ গঠিত হওয়ার পর কত দিনের মধ্যে জুলাই সনদ বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার করবে; তার একটি সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। তা না হলে আগামী সংসদ প্রায় পুরো পাঁচ বছরই সময় নিয়ে নিতে পারে। এতে সংস্কার ঝুলে যাবে।
তবে জামায়াতে ইসলামী যেভাবে প্রস্তাব করেছে—আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে, সেটা পুরোপুরি বাস্তবসম্মত বলে মনে করছে না ঐকমত্য কমিশন। কারণ, আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে অনেকগুলো অধ্যাদেশ জারি করেছে, সেগুলো অনুমোদনের জন্য তুলতে হবে প্রথম অধিবেশনে। এ ছাড়া আগামী সংসদে অন্তর্বর্তী সরকারের কমকাণ্ডের বৈধতা দেওয়ার বিষয়টিও আসতে পারে। সেটিও প্রথম অধিবেশনে করতে হবে।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান দুই দিন পেছাল১১ অক্টোবর ২০২৫তাই ঐকমত্য কমিশন মনে করে প্রথম অধিবেশনে সংবিধান–সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো পাস করা বাস্তবসম্মত নয়। এ ক্ষেত্রে সংসদ গঠিত হওয়ার বা আগামী সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন থেকে পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করার সময় বেঁধে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে এ সময় আরও বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে।
গণভোটে প্রশ্ন একটি রাখার চিন্তাযেসব প্রস্তাবে ভিন্নমত আছে গণভোটে সেগুলো কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, তা নিয়েও দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশন প্রথমে চিন্তা করেছিল, এ ক্ষেত্রে দুটি প্যাকেজ করা। একটিতে থাকবে যেসব প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো। আরেকটিতে থাকবে ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলো। দুটি আলাদা প্রশ্নে জানতে চাওয়া হবে এগুলোর বাস্তবায়ন চান কি না। তবে এখন কমিশন একটি প্রশ্ন রাখার চিন্তা করছে। সেটি হলো পুরো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চান কি না। সেখানে ভিন্নমতসহ যেসব সিদ্ধান্ত আছে সেগুলোও থাকবে। যদি ‘হ্যাঁ’ ভোট জয়ী হয় তাহলে ৮৪টি প্রস্তাবে যেভাবে ঐকমত্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। সে ক্ষেত্রে ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সনদ বাস্তবায়নের জন্য আগামী সংসদকে সময় বেঁধে দেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করে বিএনপি। যদিও দলটি দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথাও বলেছিল।দলগুলোর অবস্থানবিএনপি চায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে আলাদা ব্যালটে গণভোট হোক। জুলাই সনদ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি ও তার ভিত্তিতে একটি অধ্যাদেশ করে গণভোট হতে পারে। সনদের অঙ্গীকারনামায় একটি অঙ্গীকার এভাবে যুক্ত করা—দলগুলো ভিন্নমতের বিষয় যার যার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। যাতে নির্বাচিত হলে তারা সেই অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে। তবে সনদ বাস্তবায়নের জন্য আগামী সংসদকে সময় বেঁধে দেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করে বিএনপি। যদিও দলটি দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথাও বলেছিল।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করার কাজ করছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কমিশনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। আগামী ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর হবে। এর আগেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে কমিশন।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজএসব প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অবস্থান কাছাকাছি। তারা চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। গণভোট হতে হবে রাষ্ট্রপতির একটি বিশেষ আদেশের ভিত্তিতে। ভিন্নমত থাকা সিদ্ধান্তগুলো সনদে ও গণভোটে থাকবে। আগামী সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দিতে হবে।
এসব প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অবস্থান কাছাকাছি। তারা চায় জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। গণভোট হতে হবে রাষ্ট্রপতির একটি বিশেষ আদেশের ভিত্তিতে। ভিন্নমত থাকা সিদ্ধান্তগুলো সনদে ও গণভোটে থাকবে।অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছেসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব বিষয়ে মতবিরোধ কমিয়ে আনতে ঐকমত্য কমিশন এই তিনটি দলের সঙ্গে আলাদাভাবে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে কমিশন। বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো.
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করার কাজ করছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কমিশনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। আগামী ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর হবে। এর আগেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে কমিশন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স স ক র প রস ত ব ন য় জ ল ই জ ত য় সনদ ভ ন নমত থ ক র অবস থ ন সরক র র ক গণভ ট ক গণভ ট হ গণভ ট র র জন য ক জ কর ন র জন সময় ব র সময় ব ষয়ট ইসল ম ব এনপ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে: বদিউল আলম
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) এফডিসিতে ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব’ নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি। ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ড. বদিউল আলম বলেন, নির্বাচনী ও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। ক্ষমতার পালাবদলে যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা অত্যন্ত জরুরি। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, ক্ষমতার সঙ্গে ‘জাদুর কাঠি’ যুক্ত ছিল। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্য, মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সম্পদ আকাশচুম্বী হয়েছে- এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও স্বৈরাচারী আইন-কানুন ও কাঠামো এখনো বহাল রয়েছে। এসব কাঠামোই তাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে। বর্তমানে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব কাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবলমাত্র নির্বাচন দিয়ে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই- এই নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। ভবিষ্যৎ সরকার যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে, তবে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার মতোই হতে পারে। এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। আশা করি, ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা এ বিষয়ে সজাগ থাকবে।
তিনি আরো জানান, আগামী নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেবে ঐকমত্য কমিশন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য এখন ‘সিলভার লাইন’ থেকে ‘গোল্ডেন লাইন’-এ উন্নীত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী প্রতিটি রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষও অপেক্ষায় আছেন, কবে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, যারা এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল, বিনা ভোটে ক্ষমতায় ছিল, দিনের ভোট রাতে করেছিল, ডামি নির্বাচন করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল- সেখান থেকে মুক্তির জন্য আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন অত্যাবশ্যক।
তিনি আরো জানান, আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বন্দ্বের কারণে যদি জুলাই সনদ স্বাক্ষরে বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। বিগত শাসনামলে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুম, খুন এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে এবং পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যাশা, বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্টবিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা যৌথভাবে বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর এবং সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ