নবীনদের বরণ করে নিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 13th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল ও শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি
টাইফয়েড প্রতিরোধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে: উপদেষ্টা
নবীন বরণ উপলক্ষে দিনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন এলাকা। নির্দিষ্ট সময়েই শুরু হয় আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা।
ধারাবাহিকভাবে অতিথিদের আসন গ্রহণ, জাতীয় সঙ্গীত, পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ থেকে পাঠ, অতিথিদের বক্তব্য চলে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে নবীন ও পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা, নৈতিকতা অনুসরণ করা এবং সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথি উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “তোমরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছ জ্ঞানের আলোয় নিজেদের আলোকিত করতে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারবে, তোমাদের জীবন তত সুন্দর ও সমৃদ্ধ হবে। এখানে প্রতিটি বিভাগে সেমিনার ও লাইব্রেরির সুযোগ রয়েছে। এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “তোমরা যাতে কোনো আর্থিক সমস্যায় না পড়ো, সেজন্য আমরা এবার থেকে উপবৃত্তির পরিমাণ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জ্ঞানের প্রতিটি শাখা গুরুত্বপূর্ণ, তাই জ্ঞানের পথে নিরন্তর হাঁটতে হবে। তোমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। প্রথম বর্ষে পদার্পণের এই মুহূর্ত থেকেই ভবিষ্যতের পথ তৈরি হতে থাকে। তোমরা এখানে শিখতে এসেছ, তাই যত বেশি শেখা যায় শিখবে, নিজেকে গড়ে তুলবে। কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীলতা চর্চার মাধ্যমে তোমরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব গড়ে তুলবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানের সভাপতিত্বে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবীব।
এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুর অঞ্চলে কেন বারবার অ্যানথ্রাক্সের হানা
বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্স এখন দৃশ্যমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলায় দুই মাসে ১১ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। রয়েছে কয়েক শ সন্দেহভাজন রোগী। মারা গেছে দুই শর বেশি গরু।
পীরগাছায় দুজন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (বিবিসি, ১ অক্টোবর ২০২৫)। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নতুন করে ১১ জনের অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে এবং শনিবার এক নারী অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন (প্রথম আলো, ৫ অক্টোবর ২০২৫)। সুতরাং অ্যানথ্রাক্স রোগটি আঞ্চলিক ‘মহামারির’ দিকে ধাবিত হচ্ছে—এমন আশঙ্কা এখন অস্বাভাবিক নয়।
যদিও স্বাস্থ্য বিভাগ এখনো ‘স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করেনি। অথচ এ বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের মুকদাহান প্রদেশে মাত্র একজন কৃষকের অ্যানথ্রাক্সজনিত মৃত্যু ও কিছু রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ‘স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি কো হয়েছে এবং ৫ কিলোমিটার কোয়ারেন্টিন অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে (ইনডিপেনডেন্ট, ইউকে, ২ মে ২০২৫)।
আরও পড়ুনসাপ নয়, সংকেত: রাসেলস ভাইপার বারবার কেন দেখা দিচ্ছে১৪ জুলাই ২০২৫বাংলাদেশে প্রাণী ও মানবদেহে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ ঘটে ১৯৮৬ সালে। রংপুর অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্সের ইতিহাসও প্রায় দুই দশকের। সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর জেলাতেও প্রতিবছর অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধায় একের পর এক অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
কেন এ অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্স প্রাদুর্ভাব ঘটছে বারবার? এর কারণ উদ্ঘাটন করতে না পারলে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকার-প্রতিরোধে কার্যকর স্বাস্থ্য যোগাযোগ কর্মসূচি প্রণীত না হলে এমন জনস্বাস্থ্য সংকট লেগেই থাকবে।
স্বাস্থ্য যোগাযোগ বা জনস্বাস্থ্য যোগাযোগকে আমরা প্রচলিত ভাষায় ‘সচেতনতামূলক কর্মসূচি’ বা প্রচার অভিযান (ক্যাম্পেইন) বলে থাকি। সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ, নির্মূল এবং জরুরি সতর্কতা ঘোষণা বা এমন যোগাযোগ কর্মসূচি নেওয়ার ক্ষমতা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। কিন্তু অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে পরিকল্পিত কোনো স্বাস্থ্য যোগাযোগ কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের পরিবর্তনে এমন যোগাযোগ কর্মসূচির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
অ্যানথ্রাক্স প্রাদুর্ভাবের কারণ বহুবিধ। আর্থসামাজিক, স্বাস্থ্যবিধিগত, দুর্বল জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং অ্যানথ্রাক্সের প্রাকৃতিক বিষয়টি এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। অ্যানথ্রাক্সের প্রাকৃতিক বিষয়টি হচ্ছে এমন: গরু-মহিষ যেখানে একবার অ্যানথ্রাক্সে মারা যায়, সেখানকার মাটিতে অ্যানথ্রাক্সের স্পোর বা বীজাণু দশক ধরে সক্রিয় থাকে।
পরবর্তী সময়ে অন্য পশু সেই জায়গায় ঘাস খেলে বা পানি পান করলে আবার সংক্রমিত হয়। মানুষও সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত পশুর চামড়া, রক্ত বা দুধের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ হলে রোগ মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ অ্যানথ্রাক্স প্রাদুর্ভাব উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু নির্দিষ্ট জেলায় বারবার হয়, কারণ ওই অঞ্চলের মাটিতে অন্যান্য এলাকার তুলনায় অ্যানথ্রাক্স স্পোর বা বীজাণু বেশি থাকে।
এ জন্য হঠাৎ অ্যানথ্রাক্স প্রাদুর্ভাব শুরুর পর সচেতনতা জরুরি বলে গলা ফাটালেও প্রতিরোধ-প্রতিকার কোনোটাই কাজে আসে না। সংক্রমিত পশু মারা গেলে, যদি সেই মৃত পশু অন্তত ৬ ফুট গভীরে পুঁতে বা জীবাণুমুক্ত করা বা পুড়িয়ে না ফেলা হয়, তাহলে মাটিতে থাকা স্পোর নতুন পশুকে সংক্রমিত করে। রংপুরে এ প্রাদুর্ভাব বারবার ঘটছে এভাবেই। কারণ, অনেক সময় সংক্রমিত পশু মারা গেলে খোলা স্থানে ফেলে দেওয়া হয় বা কেউ মাংস বিক্রি করে দেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সার্বক্ষণিক নজরদারি ও যোগাযোগ কর্মসূচির মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির অভাবে এমনটি ঘটছে প্রতিবছর।
অ্যানথ্রাক্সের বিপর্যয় শুধুই স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নয়। দারিদ্র্যের কারণে গরু আক্রান্ত হলে তা দ্রুত জবাই দেওয়ার রেওয়াজ গ্রামে দীর্ঘদিনের। আমরা গ্রামে দেখেছি, গরু জবাই একটা উৎসব, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই মিলে মাংস কাটাকাটি করে।
এক গবেষণায় অসুস্থ পশু জবাইকারীদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ২ শতাংশকে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত পাওয়া যায়। বেশির ভাগ গবাদিপশু পালনকারী নিম্ন বা মধ্য আয়ের এবং তাঁদের জীবিকা আংশিকভাবে পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল। আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁরা প্রায়ই অসুস্থ পশু জবাই করেন বা রোগ গোপন রেখে তা বিক্রি করেন। গরু কৃষকের প্রধান সম্পদ। গরু বিক্রি করেই মেয়ের বিয়ে দেন কৃষক—এ ধরনের নির্ভরতা আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেই লুক্কায়িত। অসুস্থ গরু-ছাগল জবাই করে বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার অসহায় প্রচেষ্টাই অদৃশ্য হুমকি এই অ্যানথ্রাক্স।
এই মাংসের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় দরিদ্র মানুষও তা কিনে খান। এ রোগ অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়েরও সূচনাকারী। তাই অসুস্থ পশু জবাই করার রেওয়াজকে বারণ করাতে প্রণোদনা, প্রাণিসম্পদ বিমা বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ জাতীয় কিছু ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে করে কৃষক রোগাক্রান্ত পশুটি জবাই না করে সঠিক স্বাস্থ্যবিধিগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর বহুবিধ আর্থসামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।
অ্যানথ্রাক্স কোনো অভিশাপ নয়, এটি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। কিন্তু রংপুরে এর পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে যে কেবল গবাদিপশুর টিকা নয়, প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। সচেতনতা, নীতি-নিষ্ঠা এবং প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা ছাড়া অ্যানথ্রাক্স নির্মূল সম্ভব নয়।সরকার ২০১২ সালে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে ‘ওয়ান হেলথ’ (One Health) কর্মকৌশল গ্রহণ করেছে। ওয়ান হেলথ পদ্ধতি হলো একটি সমন্বিত কর্মকৌশল, যেখানে মানুষ ও প্রাণী উভয়ের ওপর প্রভাব ফেলা সংক্রামক রোগ মোকাবিলায় চিকিৎসক, পশুচিকিৎসক ও পরিবেশবিদরা একসঙ্গে কাজ করেন। রংপুরে ওয়ান হেলথ পদ্ধতি কার্যকর হচ্ছে কি? সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো সমন্বিত পদ্ধতিতে কাজ করলে এ প্রাদুর্ভাব বারবার ঘটত না।
ঢাকায় গত ২৬-২৮ জানুয়ারি ২০১৫ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ-ভারত অ্যানথ্রাক্স সহযোগিতা কর্মশালা’। কর্মশালাটির সুপারিশ বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। এতে দুই দেশের মানব ও প্রাণী স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা অংশ নেন। কর্মশালাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। কর্মশালার বিবরণী এর ওয়েবসাইটে রয়েছে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা অ্যানথ্রাক্স মোকাবিলায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের সুপারিশ করেন।
স্বল্পমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ও প্রাণীর ওপর সক্রিয় নজরদারি, ল্যাবরেটরির সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি।
আরও পড়ুনরংপুর-গাইবান্ধায় জনস্বাস্থ্য নিয়ে নতুন উদ্বেগ০৮ অক্টোবর ২০২৫মধ্যমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে অ্যানথ্রাক্সের অর্থনৈতিক প্রভাব ও প্রাদুর্ভাবের কারণ নিরূপণ, সীমান্তবর্তী হটস্পট মানচিত্রকরণ এবং গবেষণা পরিচালনা।
গবেষণার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, বন্যা ইত্যাদির ফলে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের পরিবর্তন বোঝা অপরিহার্য বলে ওই কর্মশালায় গুরুত্বারোপ করা হয়। ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভেটেরিনারি এপিডেমিওলজি অ্যান্ড ডিজিজ ইনফরমেটিকস-এর পরিচালক ড. এইচ রহমান ওই কর্মশালায় বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি ও পশুপালনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণে এর প্রভাব আমাদের এখনই বুঝতে হবে।’
দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রযুক্তিনির্ভর শনাক্তকরণ কিট ও মানুষের জন্য অ্যানথ্রাক্স ভ্যাকসিন উদ্ভাবন, আঞ্চলিক রেফারেন্স ল্যাবরেটরি ও অ্যানথ্রাক্স ফোরাম গঠন।
অ্যানথ্রাক্স কোনো অভিশাপ নয়, এটি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। কিন্তু রংপুরে এর পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে যে কেবল গবাদিপশুর টিকা নয়, প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। সচেতনতা, নীতি-নিষ্ঠা এবং প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা ছাড়া অ্যানথ্রাক্স নির্মূল সম্ভব নয়।
রংপুরের প্রতিটি গবাদিপশু পালনকারী যদি জানেন অ্যানথ্রাক্স কীভাবে ছড়ায়, টিকা কেন জরুরি, মৃত পশু কীভাবে নিরাপদে পুঁততে হয়, তাহলেই আমরা এ রোগের থাবা থেকে রক্ষা পাই। আর এ জন্য প্রয়োজন ‘ওয়ান হেলথ’ কাঠামোর অধীন কৌশলগত স্বাস্থ্য যোগাযোগ কর্মসূচি।
মাহমুদুল হক স্বাস্থ্য যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। শিক্ষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর