চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) মেরামতের কাজ করার সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম মো. শওকত। আজ সোমবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শওকত চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয় বিকেলে। একই বিস্ফোরণে দগ্ধ মো.

তানভীর ও মো. মেশকাত নামে দুজন হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁদের বয়স ২৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

পুলিশ জানায়, হাসপাতালের ছাদে সাততলায় কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকক্ষে কাজ করছিলেন গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারের তিনজন এসি টেকনিশিয়ান। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে এসির বিস্ফোরণ হলে তাঁরা দগ্ধ হন। সাততলায় যেখানে এসি কম্প্রেশর বিস্ফোরণ হয়েছে, তার ঠিক নিচে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো রোগী আহত হননি।

এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারের লোকজন এসির কাজ করার সময় বিস্ফোরণ হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এই মৌসুমে এমন বায়ুদূষণ আর দেখেনি ঢাকা

বাংলাদেশে আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। রাজধানী ঢাকায় আজ সকালে বায়ুর মান যে মান, তা চলতি মৌসুমের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ।

ঢাকার আজ সকালের বায়ুর মানকে বলা হয় ‘দুর্যোগপূর্ণ’। ঢাকার বায়ু দূষিত হলেও আজ সকালের মতো এমন বাজে পরিস্থিতি সচরাচর দেখা যায় না।

সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার বায়ুর মান ৩৪০। বায়ুর মান ২০০-এর বেশি হলে তাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আর ৩০০-এর বেশি হলে তা হয় ‘দুর্যোগপূর্ণ’।

বায়ুদূষণে আজ সকালে বিশ্বের নগরীগুলোর মধ্যে শীর্ষে ভারতের নয়াদিল্লি। বায়ুর মান ৪২০।

বায়ুদূষণের এই পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের অবস্থা নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয়, সতর্ক করে।

ঢাকায় আজ বায়ুর যে পরিস্থিতি (দুর্যোগপূর্ণ), তা থেকে সুরক্ষা পেতে নগরবাসীর জন্য জরুরি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও দূষণ বিশেষজ্ঞ আব্দুস সালাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ নগরবাসীর উচিত হবে যথাসম্ভব বাড়ির বাইরে না যাওয়া। কিন্তু অনেকেই তো এ কাজটি করতে পারবেন না। তাই বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে। আজ বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করাই ভালো। আর ঘরেও যথা সম্ভব জানলা বন্ধ রাখা উচিত।

বায়ুদূষণ মোকাবিলায় বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখনো নানা উদ্যোগ-কথাবার্তা শোনা যায় হয়। কিন্তু বায়ুদূষণ পরিস্থিতির দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এটা শুধু যে ঢাকায়, তা নয়। সমগ্র দেশজুড়ে। কোনো কোনো দিন ঢাকাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য শহরের বায়ুর মান।

অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘শুধু কথাবার্তা ছাড়া বায়ুদূষণ নিয়ে আসলে কোনো কিছু হয় না। শীত বা শুষ্ক মৌসুম এলে যখন বায়ুদূষণ বাড়ে, তখন উচ্চপর্যায়ের একটা কমিটি করা হয়। আর বায়ুদূষণ কমে গেলে বা শুকনো মৌসুম চলে গেলে সেই কমিটি নিয়ে আর কোনো কথাবার্তা হয় না। এটা বরাবর চলে আসছে, এখনো চলছে। তবে আমরা হতাশ হতে চাই না। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, যথাসম্ভব প্রয়োজনীয় সুরক্ষাব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

বিভাগীয় শহরগুলোর অবস্থা

আজ সকালে বায়ুমানের নিরিখে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা খুলনার। এই নগরীর বায়ুর মান আজ ২৩৬। গত বুধবার একই সময় উপকূলীয় এই শহরের বায়ুর মান ছিল ২৭৭।

বায়ুদূষণে আজ খুলনার পরে আছে রাজশাহী। উত্তর জনপদের এই শহরের বায়ুর মান ১৬৮। ময়মনসিংহের বায়ুর মান ১৪৮, রংপুর ১৪৯, বরিশাল ৮৯, চট্টগ্রাম ৮১ ও সিলেট ৬৯।

গবেষকেরা বলছেন, বায়ুদূষণ একেবারে দেশজুড়ে ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু বায়ুদূষণ কমানোর বিষয়টি রাজধানীর ক্ষেত্রে যতটা প্রাধান্য পায়, অন্য শহরগুলো ততটা পায় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর চেয়ে অন্য শহরগুলোর বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি।

ঢাকার ৫ স্থানে বায়ুদূষণ বেশি

আজ ঢাকার পাঁচ স্থানের বায়ু বেশি দূষিত। স্থানগুলো হলো—কল্যাণপুর (৩৮৪), গোড়ান (৩৬৯), পল্লবী দক্ষিণ (৩৩০), বে’জ এজ ওয়াটার (৩০৬) ও পীরেরবাগ রেললাইন (২৮৪)।

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষের দিকে থাকছে। ঢাকার বায়ুমান খুব অস্বাস্থ্যকর দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। আজ তা দুর্যোগপূর্ণ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ