একটি দল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে: আমানউল্লাহ আমান
Published: 13th, October 2025 GMT
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, ‘‘একটি দল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। স্বাধীনতার সময় যাদের বিতর্কিত ভূমিকা ছিল, তারা আজ পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।’’
সোমবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডেমোক্রেটিক লীগের উদ্যোগে দলটির প্রয়াত নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় বাংলাদেশে থাকবেন।’’
ডেমোক্রেটিক লীগের সহ-সভাপতি মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রায়হান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘খুব টেনশন হচ্ছে, কীভাবে গন্তব্যে যাব?’
ঢাকায় যাবেন নির্মাণশ্রমিক রঞ্জু মিয়া। তাই ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা রাধাকানাই থেকে আজ রোববার সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে শহরের মাসকান্দা বাস টার্মিনালে আসেন। কিন্তু এসে দেখেন ঢাকার উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। তাই ঢাকায় যাওয়া হয়নি তাঁর।
জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার জেরে ময়মনসিংহে এনসিপির নেতা-কর্মী ও পরিবহনশ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচির পর এখনো ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। আজ রোববার সকাল থেকে ময়মনসিংহ থেকে সব ধরনের বাস বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিক ও নেতারা। এতে বিপাকে পড়েছেন রঞ্জু মিয়ার মতো বহু মানুষ।
রঞ্জু মিয়ার প্রশ্ন, যানবাহনের মালিক-শ্রমিকেরা নিজেদের দাবি–দাওয়া নিয়ে কথা বলবে প্রশাসনের সঙ্গে। কিন্তু বাস বন্ধ করে দিয়ে যাত্রীদের কেন ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে?
আরও পড়ুনঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল করছে না, নতুন করে আন্তজেলা বাসও বন্ধ ৪ ঘণ্টা আগেসমস্যার শুরু গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। এনসিপির হালুয়াঘাট উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হানকে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক লাঞ্ছিত করেছেন—এমন অভিযোগে এনসিপির নেতা-কর্মীরা গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ময়মনসিংহের মাসকান্দা বাস টার্মিনালে অবস্থান নেন। আর এনসিপি নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি ও এক শ্রমিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বিক্ষোভে নামেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এতে ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
এরপর গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসন শ্রমিক নেতা ও এনসিপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হকের (শামীম) মালিকানাধীন ইউনাইটেড পরিবহনের ১৬টি গাড়ি বন্ধ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে এনসিপি নেতারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। আর গাড়ি চলাচলে কেউ বাধা দেবেন না—এমন আশ্বাসে শ্রমিকেরাও গতকাল বিকেলে সড়ক থেকে সরে যান। কিন্তু বিকেল পাঁচটা থেকে ইউনাইটেড পরিবহনের ৭০টি ও শৌখিন এক্সপ্রেসের ১৫০টি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর আজ রোববার সকালে ময়মনসিংহ থেকে সব বাস বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিক ও নেতারা।
ময়মনসিংহ নগরের মাসকান্দা বাস টার্মিনাল, দীঘারকান্দা বাইপাস ও পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের চিত্র। বাস না পেয়ে অনেকে অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানে গন্তব্যের দিকে রওনা হন। আবার অনেকে বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। তাঁদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবায়েত জাহান।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে কথা হয় রুবায়েতের সঙ্গে। তিনি জানান, আজ থেকে তাঁর ক্লাস শুরু। কিন্তু মাসকান্দা বাস টার্মিনালে এসে দেখেন বাস চলছে না। তাই বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে।
ছোট ভাই রাফিউর হাসানকে টঙ্গীর মাদ্রাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন জুনায়েদুল ইসলাম। সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি বলেন, ‘তারাকান্দা থেকেও কোনো বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছে না। ভেঙে ভেঙে এখানে এসেছি। কিন্তু এখান থেকেও বাস যাচ্ছে না। সে কারণে খুব টেনশন হচ্ছে, কীভাবে গন্তব্যে যাব?’
নগরের দীঘারকান্দা বাইপাস এলাকা হয়ে ঢাকাগামী যানবাহন চলাচল করে। সেখানে গিয়েও দেখা যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে বহু মানুষ। কিন্তু কোনো বাস নেই।
মাসকান্দা বাস টার্মিনালে দেখা যায়, ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারের সামনে ব্যানার টানিয়ে শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। সেখানে ব্যানারে লেখা, ‘পরিবহনশ্রমিকদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার দাবিতে অনশন ধর্মঘট। মিথ্যা অপবাদে শ্রমিকের পেটে লাথি মারা মানব না। ষড়যন্ত্র করে গাড়ি বন্ধ করা চলবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার চাই। শ্রমিক ও যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।’
দাবির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পেয়ে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এসেছিলেন বলে জানিয়ে জেলা এনসিপির সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমার কোনো পরিবহন বন্ধের পক্ষে নই, শুধু ফ্যাসিস্ট শামীমের ১৬টি গাড়ি আমরা বন্ধের পক্ষে। কিন্তু তাঁরা (পরিবহনশ্রমিক ও মালিকরা) কেন ফ্যাসিস্টের পক্ষে সব গাড়ি বন্ধ রেখেছেন, তা বোধহগম্য নয়। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে তাঁরা এখানে একটি ষড়যন্ত্র করছেন।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাস চলাচল বন্ধ রাখা মালিকদের সিদ্ধান্তের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আলোচনা করছেন।
ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচলের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত সেল ময়মনসিংহ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতারা। শনিবার বিকেল চারটায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে