গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও ফল রপ্তানিতে সহায়তা দেবে এফএও
Published: 14th, October 2025 GMT
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কু দোংইউ বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ শিল্পের উন্নয়ন ও কৃষিজাত পণ্য—বিশেষ করে ফল রপ্তানি বাড়াতে সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইতালির রোমে এফএও সদর দপ্তরে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম এবং সংস্থাটির ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় সময় সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এফএও মহাপরিচালক এ আশ্বাস দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশকে ‘উচ্চ সাফল্য অর্জনকারী দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে এফএও মহাপরিচালক বলেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা, উদ্ভাবন এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে এফএও।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা এফএওর দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনটি নতুন ক্ষেত্রে সহায়তা চান। এগুলো হলো গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণে সক্ষমতা বাড়ানো, ফল রপ্তানি বাড়াতে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ উন্নয়ন এবং ফসল সংগ্রহ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা জোরদার করা, যার মধ্যে সাশ্রয়ী ও বহনযোগ্য কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনও রয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের পুরো সমুদ্র রয়েছে; কিন্তু আমরা মাছ ধরি অগভীর পানিতে। কখনোই সামুদ্রিক সম্পদ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি আমরা। বিদেশি ট্রলারগুলো আমাদের জলসীমায় মাছ ধরে। অথচ আমরা পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত নই।’
জবাবে এফএও মহাপরিচালক পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ যেন চীনের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়ে গভীর সমুদ্রের মাছের মজুদ নিরূপণ ও টেকসই আহরণ কৌশল প্রণয়নে সহায়তা নেয়।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জিবুতির প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের ফল রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চীন ইতিমধ্যে বাংলাদেশের আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি ছোট কৃষকদের ফসল সংগ্রহ পরবর্তী ক্ষতি কমাতে ভ্রাম্যমাণ কোল্ড স্টোরেজ নকশার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
কু দোংইউ বলেন, উচ্চমূল্যের নগদ ফল উৎপাদন কৃষি খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, ১৯৮০-এর দশকে জাপানে ফল রপ্তানির মাধ্যমে চীন কৃষি উন্নয়নে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছিল।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
আরও পড়ুনলুলা বললেন ‘বাংলাদেশে যাব’, মুহাম্মদ ইউনূস বললেন ‘দারুণ হবে’৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রোমের মেয়রের সাক্ষাৎ১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোমে প্রধান উপদেষ্টা
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার (১২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ইতালির রাজধানী রোম পৌঁছেছেন।
রোমে পৌঁছালে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এটিএম রকিবুল হক প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।
আরো পড়ুন:
রোমের পথে প্রধান উপদেষ্টা
নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় ধুয়ে মুছে গেছে: প্রেস সচিব
রবিবার (১২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
বাসস জানিয়েছে, সফরসূচি অনুযায়ী অধ্যাপক ইউনূস ফোরামের মূল অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য নিরসন ও টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বের নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তারা খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় করেন। এবারের ইভেন্টটি ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত রোমে এফএও সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্রিয় কূটনৈতিক উপস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
ঢাকা/মেহেদী